প্রতীতি দেবী। ফাইল চিত্র
রবিবার রাতে ঢাকার হাসপাতালে মারা গিয়েছিলেন চলচ্চিত্র ব্যক্তিত্ব ঋত্বিক ঘটকের যমজ বোন প্রতীতি দেবী। সোমবার দুপুরে তাঁর কন্যা অ্যারোমা দত্ত ও কয়েক জন আত্মীয় ও শুভানুধ্যায়ী প্রতীতি দেবীর দেহ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে হস্তান্তর করেন। কন্যা জানিয়েছেন, সুস্থ অবস্থাতেই লিখিত ভাবে মরণোত্তর দেহদান করে গিয়েছিলেন তিনি। দেহদান আন্দোলনের কর্মীরা জানিয়েছেন, এই প্রথম বাংলাদেশে কোনও মহিলার মরণোত্তর দেহদান করা হল। মনোনীত সাংসদ অ্যারোমা বলেন, ‘‘আমাদের সমাজের জন্য, মানবতার জন্য এ’টি একটি দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।’’
যমজ ভাইবোন ঋত্বিক ও প্রতীতিকে বাবা-মা ভবা ও ভবি নামে ডাকতেন। প্রতীতি দেবীর বয়স হয়েছিল ৯৫। ১৯৪৭-এ দেশ ভাগের পরে ঘটক পরিবারের সঙ্গে প্রতীতি দেবীও পশ্চিমবঙ্গে চলে যান। কিন্তু কিছু দিন পরে তিনি ঢাকায় ফিরে আসেন। ভাষা সংগ্রামী এবং পাকিস্তান সরকারের মন্ত্রী ধীরেন্দ্রনাথ দত্তের পুত্র সঞ্জীব দত্তের সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়। ১৯৭১-এর ২৯ মার্চ প্রতীতির চোখের সামনে দিয়ে পাক সেনারা ধীরেন্দ্রনাথ ও তাঁর অন্য পুত্র দিলীপকে কুমিল্লার বাড়ি থেকে টেনে বার করে রাস্তায় নিয়ে গিয়ে ভয়াবহ নির্যাতন করে হত্যা করে। কিন্তু পুত্র রাহুল দত্ত কন্যা অ্যারোমাকে নিয়ে বাংলাদেশেই থেকে যান প্রতীতি দেবী। মাঝে কিছু দিন আগরতলা, পুদুচেরি ও কলকাতায় থেকেছেন তিনি। তিন দিন আগে অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন প্রতীতি দেবী। তাঁর নিউমোনিয়ার উপসর্গ ধরা পড়ে। রবিবার তিনি মারা যাওয়ার পরে সোমবার সকাল থেকে তাঁকে শ্রদ্ধা জানাতে হাসপাতালে মানুষের ঢল নামে। তার পরে শেষকৃত্যের পরিবর্তে দেহটি চিকিৎসাবিদ্যার ছাত্রদের গবেষণার জন্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের হাতে তুলে দেওয়া হয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy