মুহাম্মদ ইউনূস। — ফাইল চিত্র।
বাংলাদেশে মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে ক্রমেই টানাপড়েন বৃদ্ধি পাচ্ছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)-র। এই আবহে বিএনপির মহাসচিব ফখরুল ইসলাম আলমগীরের দাবি, দেশে নতুন করে ষড়যন্ত্র এবং চক্রান্ত শুরু হয়েছে। তাঁর দল এই চক্রান্তের সামনে মাথা নত করবে না। যদিও কী চক্রান্ত শুরু হয়েছে, তা নিয়ে বিশদে কিছু বলেননি তিনি। এর মধ্যে মঙ্গলবার চিকিৎসার জন্য লন্ডনে যাচ্ছেন বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া। তার আগে দলের স্থায়ী কমিটির সঙ্গে বৈঠকে বসার কথা তাঁর।
শনিবার ছিল বিএনপির ছাত্র সংগঠন ছাত্রদলের ৪৬তম প্রতিষ্ঠা দিবস। সেই উপলক্ষে ছাত্রদের সমাবেশে ভার্চুয়াল মাধ্যমে বক্তৃতা করেন ফখরুল। সেখানেই তিনি জানান, দেশে নতুন করে ‘ষড়যন্ত্র ও চক্রান্ত’ শুরু হয়েছে। তার পরেই তিনি বলেন, ‘‘এই ষড়যন্ত্র এবং চক্রান্তের সামনে আমরা মাথা নত করব না।’’ ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য ইউনূস সরকার নানা টালবাহানা করে জাতীয় সংসদের নির্বাচন পিছিয়ে দিচ্ছে বলে ইতিমধ্যেই অভিযোগ তুলেছে খালেদার দল। এই পরিস্থিতিতে বিএনপির শীর্ষনেতা ফখরুল আবার ‘জনগণের সরকার’ তৈরির কথাই মনে করিয়ে দিলেন। তিনি বলেন, ‘‘সব জায়গায় বৈষম্য রয়েছে, দুর্নীতি হয়েছে। বৈষম্য এবং দুর্নীতি দূর করে জনগণের সরকার যাতে প্রতিষ্ঠা করতে পারি, সেই লক্ষ্যে কাজ করতে হবে।’’
এর পরেই তিনি বাংলাদেশের পূর্বতন আওয়ামী লীগ সরকারকে একহাত নিয়েছেন। তাঁর কথায়, ‘‘১৯৭৫ সাল পর্যন্ত দেশে ক্ষমতায় ছিল আওয়ামী লীগ। তারা তখনও দেশে লুটপাট, ষড়যন্ত্র, হত্যা, গুম করে ক্ষমতায় টিকে ছিল এবং তাদের দুঃশাসনে দেশে দুর্ভিক্ষ হয়েছিল।’’ আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে গণতন্ত্র হত্যা করে একদলীয় শাসন প্রতিষ্ঠা করারও অভিযোগ করেছেন ফখরুল। তাঁর আরও দাবি, গত বছর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আওয়ামী লিগ কয়েক হাজার ছাত্র-ছাত্রীকে হত্যা করেছে। আওয়ামী লীগকে আক্রমণের পাশাপাশি দেশে নতুন করে ‘ষড়যন্ত্র’ শুরু হয়েছে বলে ফখরুল যে মন্তব্য করেছেন, তা ‘তাৎপর্যপূর্ণ’ বলেই মনে করা হচ্ছে।
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশের মতে, ইউনূসের জমানায় জামায়াতের প্রভাব ক্রমশ বাড়তে থাকায় অসন্তুষ্ট বিএনপি। বিশেষত, অন্তর্বর্তী সরকারের একাধিক গুরুত্বপূর্ণ উপদেষ্টা পদে জামায়াত-ঘনিষ্ঠদের নিয়োগ এবং নির্বাচন ঘিরে টালবাহানার জেরে সেই অসন্তোষ আরও বেড়েছে। সেই আবহে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজ়ভি সরাসরি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে জামাতের ‘ভূমিকা’ নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। ইতিহাস বলছে, ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় জামাত নেতা-কর্মীরা প্রকাশ্যে পাকিস্তান সেনার পক্ষে কাজ করেছিলেন। রাজাকার ঘাতকবাহিনীর নেতা হিসাবে গণহত্যায় জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে একাধিক জামাত নেতার বিরুদ্ধে। ইউনূসের আমলে সেই জামাতের প্রভাব বৃদ্ধি নিয়েই বিএনপি অসন্তুষ্ট বলে মনে করা হচ্ছে।
এর মধ্যেই বিএনপি সূত্রে খবর, মঙ্গলবার লন্ডনে চিকিৎসার জন্য যাচ্ছেন খালেদা। সেখানে দু’মাস থাকতে পারেন তিনি। ২০০৮ সাল থেকে লন্ডনে থাকেন তাঁর বড় ছেলে তারেক রহমান। তারেকের সঙ্গে সাত বছর পরে দেখা হতে চলেছে খালেদার। তাঁর সঙ্গে লন্ডনে যাচ্ছেন ১৫ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy