মার্কিন কংগ্রেসের সদস্য টম সুয়োজ্জি। ছবি: সংগৃহীত।
কাশ্মীর প্রসঙ্গে নরেন্দ্র মোদী সরকারের সিদ্ধান্তের পর উপত্যকায় মানবাধিকার লঙ্ঘিত হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন। তবে আমেরিকা নিবাসী ভারতীয়দের সঙ্গে কোনও আলোচনা না করেই এই ধরনের মন্তব্য করায় তাঁদের কাছে ক্ষমা চাইলেন মার্কিন কংগ্রেসের সদস্য টম সুয়োজ্জি।
গত ৯ অগস্ট নিজের আশঙ্কার কথা জানিয়ে মার্কিন বিদেশসচিব মাইক পম্পেয়োকে একটি চিঠি লিখেছিলেন সুয়োজ্জি। তাতে তিনি লিখেছিলেন, কাশ্মীর নিয়ে মোদী সরকারের সিদ্ধান্ত ‘উপত্যকায় জনমানসে অস্থিরতা উস্কে দিতে পারে।’ সুয়োজ্জির মতে, এই সিদ্ধান্তের ফলে ‘কাশ্মীরিদের অধিকার ও স্বায়ত্তশাসনে যে নতুন বিধিনিষেধ আরোপিত হল, তা সন্ত্রাসবাদী বা জঙ্গিদের উৎসাহ জোগাবে।’
সুয়োজ্জির এই চিঠির কথা প্রকাশ্যে আসার পরই তা নিয়ে আমেরিকা নিবাসী ভারতীয়দের একাংশের মধ্যে ক্ষোভের সঞ্চার হয়। বিশেষ করে তাঁর নিজের কেন্দ্র নিউ ইয়র্ক স্টেটের ভোটাররা তা নিয়ে সরব হন। গত নির্বাচনে সুয়োজ্জির হয়ে যাঁরা অর্থ সংগ্রহে নেমেছিলেন বা তাঁকে ভোটে জেতাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছিলেন, তাঁরাও সুয়োজ্জির অফিসে নিজেদের ক্ষোভের কথা জানিয়ে চিঠি পাঠান। পম্পেয়ো লেখা ওই চিঠি প্রত্যাহারের দাবিও করেন তাঁরা। এর পরই তাঁদের সঙ্গে তড়িঘড়ি একটি বৈঠকে মিলিত হন সুয়োজ্জি। গত রবিবার ওই বৈঠকে একশোরও বেশি মার্কিন নিবাসী ভারতীয় উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: মুর্খের স্বর্গে বাস করা উচিত নয়, কাশ্মীর নিয়ে পাকিস্তানবাসীকে বার্তা কুরেশির
ওই বৈঠকের পর একটি বিবৃতি জারি করেন সুয়োজ্জি। সেখানে তিনি লিখেছেন, ‘কাশ্মীরের পরিস্থিতি নিয়ে আশঙ্কার কথা জানিয়ে বিদেশসচিব পম্পেয়োকে লেখা সাম্প্রতিক চিঠির বিষয়ে রবিবার আমার কেন্দ্রের একশো জন ইন্দো-মার্কিনের সঙ্গে দেখা করেছি। ওই বৈঠকের পর মনে হয়েছে, ইন্দো-মার্কিন বন্ধু বা সমর্থকদের সঙ্গে কোনও পরামর্শ না করে চিঠি লেখাটা আমার ভুল হয়েছে। তা করাটা উচিত ছিল। আমি দুঃখিত! চিঠি লেখার আগে যদি তাঁদের সঙ্গে দেখা করতাম, তবে হয়তো আমার আশঙ্কার কথা অন্য ভাবে জাহির করতে পারতাম।’
সুয়োজ্জির দাবি, নিজের রাজনৈতিক কেরিয়ারে তিনি বরাবরই ভারতের কট্টর সমর্থক বলে পরিচিত। ভারতের সার্বভৌমিকতা ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে সে দেশের লড়াইকে সব সময়ই সমর্থন করে এসেছেন।
আরও পড়ুন: কাশ্মীর নিয়ে কড়া বার্তা জয়শঙ্করের
আরও পড়ুন: হংকংয়ে বেজিং বিরোধী বিক্ষোভ বাড়ছে, সম্পূর্ণ বেদখল বিমানবন্দর, উড়ান স্তব্ধ
জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিল ও তার বিভাজন ঘটিয়ে দু’টি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল ঘোষণার পর তা নিয়ে রাশিয়ার সমর্থন পেয়েছে মোদী সরকার। যদিও ৩৭০ অনুচ্ছেদ রদের পর এ নিয়ে নিরপেক্ষ অবস্থান নিয়েছে আমেরিকা। তবে মোদী সরকারেরর সিদ্ধান্ত ঘোষণার আগে কাশ্মীর ইস্যুতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট মধ্যস্থতার প্রস্তাব দিলেও তা নিয়ে কম জলঘোলা হয়নি। এই আবহে মার্কিন কংগ্রেসের এক সদস্য তা নিয়ে মুখ খোলায় যথেষ্ট অস্বস্তিতে মার্কিন প্রশাসন।
তবে নিজের স্টেটের ভোটারদের একাংশের ক্ষোভের কথা জানতে পেরে নিজের সুর বদলেছেন সুয়োজ্জি। তাঁর মতে, আগামী ৫০ বছর বা তারও বেশি সময় ধরে ইন্দো-মার্কিন দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক বেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। কংগ্রেসের সদস্য হিসাবে তিনি যে সে সম্পর্কের উন্নতিতে কাজ করেছেন এবং ভবিষ্যতেও তা করে যাবেন, সে কথা মনে করিয়ে দেন তিনি। পাশাপাশি, তিনি আরও বলেন, ‘‘আঞ্চলিক শান্তি ও নিরাপত্তা বজায় রাখার বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে বিশ্বের সর্ববৃহৎ গণতান্ত্রিক দেশ ভারতের। কাশ্মীরের বর্তমান পরিস্থিতি তাতে বেশ বড়সড় চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছে। আমেরিকার উচিত, সকলেরই নিরাপত্তা ও শান্তির রক্ষার বিষয়ে সহায়ক হয়ে ওঠা।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy