সাংবাদিক বৈঠকে সৈয়দ আকবরউদ্দিন একহাত নিলেন পাকিস্তানকে। —ফাইল চিত্র।
জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা প্রত্যাহার সংক্রান্ত পাকিস্তানের অভিযোগ নিয়ে আজ রুদ্ধদ্বার বৈঠকে বসল রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদ। সেই বৈঠকের আগে ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে ফোনে কাশ্মীর নিয়ে ‘একান্ত আলোচনা’ করলেন পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। হোয়াইট হাউস বলেছে, ভারত-পাক দ্বিপাক্ষিক আলোচনার ভিত্তিতে উত্তেজনা প্রশমনে গুরুত্ব দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। আর বৈঠক শেষের পরে ভারত ফের জানিয়ে দিয়েছে, ৩৭০ অনুচ্ছেদ রদের বিষয়টি সম্পূর্ণ অভ্যন্তরীণ। আন্তর্জাতিক স্তরে এর কোনও প্রভাব পড়বে না। রাষ্ট্রপুঞ্জে ভারতের স্থায়ী দূত সৈয়দ আকবরউদ্দিন বলেছেন, ‘‘আলোচনা শুরু করতে হলে পাকিস্তানকে সন্ত্রাস বন্ধ করতে হবে।’’
পাকিস্তানের ‘সহমর্মী’ তথা নিরাপত্তা পরিষদের অন্যতম ক্ষমতাশালী সদস্য চিনের অনুরোধেই বৈঠক বসেছিল আজ। বৈঠক শেষের পরে রাষ্ট্রপুঞ্জে চিনের দূত ঝ্যাং জুন বলেন, ‘‘নিরাপত্তা পরিষদ মনে করছে, ভারত ও পাকিস্তানকে কাশ্মীর নিয়ে একতরফা পদক্ষেপ করা থেকে বিরত থাকতে হবে।’’ কাশ্মীর পরিস্থিতিকে ‘গুরুতর ও বিপজ্জনক’ বলেন তিনি।
ভারত ও পাকিস্তান যোগ দেয়নি এ দিনের বৈঠকে। পরে আকবরউদ্দিন বলেন, ধাপে ধাপে কাশ্মীর থেকে সমস্ত বিধিনিষেধ প্রত্যাহারের বিষয়ে ভারত দায়বদ্ধ। কিন্তু পাকিস্তান ‘জেহাদ’-এর নামে ভারতীয় ভূখণ্ডে সন্ত্রাস ছড়াচ্ছে। ‘ঘরোয়া আবহে’ আজকের রুদ্ধদ্বার বৈঠকটি নিরাপত্তা পরিষদের বিখ্যাত অশ্বক্ষুরাকৃতি টেবিলে হয়নি। তবু বিষয়টি ভারতের কাছে স্বস্তিজনক নয়। এ কথা ঠিক যে, আজকের বৈঠকের পরেই বিষয়টি নিরাপত্তা পরিষদের কর্মসূচিতে পাকাপাকি ভাবে ঢুকে যাবে— এমনটা হওয়ার সম্ভাবনা কম। কিন্তু আগামী মাসেই রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ অধিবেশনে কাশ্মীর নিয়ে ফের সরব হবে পাকিস্তান। তার আগে ইসলামাবাদের পাশে বেজিংয়ের দাঁড়ানোর বিষয়টি দীর্ঘমেয়াদি প্রশ্নে ভারতের মাথাব্যথা হতে পারে। এখনও পর্যন্ত পরিষদের পাঁচ স্থায়ী সদস্যের মধ্যে ঘোষিত ভাবে রাশিয়াকে পাশে পাওয়া গিয়েছে কাশ্মীর প্রশ্নে। অন্য এক শক্তিশালী সদস্য ফ্রান্স সাধারণ ভাবে কৌশলগত প্রশ্নে ভারতের সঙ্গেই থেকে এসেছে গত পাঁচ বছর। তাদের সঙ্গে দৌত্য চলছে সাউথ ব্লকের। নয়াদিল্লির আশা, প্যারিসের সমর্থন মিলবে। ব্রিটেনকে নিয়েও চিন্তা নেই। আমেরিকাও কাশ্মীরকে ‘দ্বিপাক্ষিক বিষয়’ বলেছে। কিন্তু ভাবাচ্ছে চিন।
১৯৭২ সালে শিমলা চুক্তির সময়ে শেষ বারের মতো কাশ্মীর উপত্যকা উঠে এসেছিল রাষ্ট্রপুঞ্জের টেবিলে। প্রশ্ন উঠছে, কাশ্মীরকে পুরোদস্তুর আলোচনার কর্মসূচিতে না-এনে আজ কেন রুদ্ধদ্বার বৈঠক করছে নিরাপত্তা পরিষদ? কূটনৈতিক কর্তারা জানাচ্ছেন, এটাই পরিষদের রেওয়াজ। সাধারণত কোনও বিষয়কে সরাসরি কর্মসূচিতে আনা হয় না। তার আগে রুদ্ধদ্বার বৈঠকে বিষয়টি মিটে গেলে একটি বিবৃতি দেওয়া হয় মাত্র।
পাক বিদেশমন্ত্রী শাহ মেহমুদ কুরেশির দাবি— কাশ্মীর নিয়ে যোগাযোগ রেখে চলার বিষয়ে একমত হয়েছেন ট্রাম্প ও ইমরান। কাশ্মীর পরিস্থিতি আঞ্চলিক শান্তি ভঙ্গ করতে পারে বলে মার্কিন প্রেসিডেন্টকে জানিয়েছেন পাক প্রধানমন্ত্রী। ফ্রান্স বাদে নিরাপত্তা পরিষদের বাকি চার সদস্য দেশের সঙ্গেও কথা হয়েছে পাকিস্তানের। এর আগে কুরেশিই চিঠি লিখেছিলেন নিরাপত্তা পরিষদে পোলান্ডের স্থায়ী প্রতিনিধি জোয়ানা রনেকাকে। এই মাসে তিনিই পরিষদের সভাপতিত্ব করছেন। আজকের রুদ্ধদ্বার বৈঠকটিকে কূটনৈতিক জয় হিসেবেই তুলে ধরছে ইমরান সরকার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy