ছবি: পিটিআই।
কাশ্মীরের পরিস্থিতি নিয়ে মার্কিন কংগ্রেসের সংশ্লিষ্ট কমিটির শুনানিতে বেকায়দায় পড়ল নরেন্দ্র মোদী সরকার। উপত্যকার অবস্থা নিয়ে ভারতের কড়া সমালোচনা করেছেন কমিটির সদস্যেরা। আজ মার্কিন বিদেশ দফতরের মধ্য ও দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক বিভাগীয় কর্তা অ্যালিস জি ওয়েলসও তাঁর রিপোর্টে কাশ্মীরে ভারতের ভূমিকার সমালোচনা করেছেন। সেই সঙ্গে মৌলবাদী সংগঠনগুলিকে লাগাতার মদত দেওয়া নিয়ে পাকিস্তানেরও সমালোচনা করেছেন ওয়েলস। তাঁর মতে, এই মদতের জন্যই ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে পারস্পরিক আস্থা তৈরি হচ্ছে না।
কংগ্রেসের কমিটির বৈঠকের আগে আমেরিকায় নিযুক্ত ভারতীয় রাষ্ট্রদূত হর্ষবর্ধন শ্রিংলা ওই কমিটির সদস্যদের কাছে কাশ্মীর পরিস্থিতি নিয়ে সাউথ ব্লকের পদক্ষেপগুলি ব্যাখ্যা করেন। বিশেষ মর্যাদা লোপের যৌক্তিকতা এবং উপত্যকায় স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনা নিয়ে সরকারের প্রয়াসকে তুলে ধরেন। সূত্রের মতে, এর পরেও মার্কিন কংগ্রেসের সদস্যেরা কাশ্মীর নিয়ে মনোভাব যে লঘু করবেন না তার ইঙ্গিত পেয়েছিল দিল্লি। প্রধানমন্ত্রীর গত মাসের
মার্কিন সফরে টেক্সাস ও নিউ ইয়র্কে ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে মৈত্রীকে বড় করে তুলে ধরা হয়েছে ঠিকই। কিন্তু জম্মু-কাশ্মীর প্রশ্নে ট্রাম্প প্রশাসনের ভিতর থেকে বেসুর শোনা যাচ্ছে ধারাবাহিক ভাবেই।
কাশ্মীরে ভারতের ভূমিকার সমালোচনা করেছেন মার্কিন বিদেশ দফতরের মধ্য ও দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক বিভাগীয় কর্তা অ্যালিস জি ওয়েলস। ছবি: এএফপি।
অ্যালিস জি ওয়েলসের রিপোর্টে বলা হয়েছে ‘‘ভারত সরকারের যুক্তি, বিশেষ মর্যাদা লোপের পিছনে রয়েছে ওই রাজ্যে অর্থনৈতিক উন্নয়ন বাড়ানো, দুর্নীতি কমানো এবং কেন্দ্রীয় আইন সমান ভাবে প্রয়োগ করার ইচ্ছে। আমরা এই সমস্ত উদ্যোগ সমর্থন করি। কিন্তু কাশ্মীর উপত্যকার পরিস্থিতি আমাদের দফতরকে দুশ্চিন্তায় রেখেছে।’’ উপত্যকায় আটক রাজনৈতিক নেতাদের নিয়েও স্পষ্ট ভাষায় নিজেদের উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন অ্যালিস। বলেছেন, ‘‘স্থানীয় এবং বিদেশি সাংবাদিকেরা কাশ্মীরের ঘটনা নিয়ে খবর করার চেষ্টা করেছেন। কিন্তু নিরাপত্তার কড়াকড়ির জন্য অধিকাংশ জায়গায় যেতেই পারেননি। প্রকৃত সংখ্যা না পেলেও আমাদের ধারণা বিপুল সংখ্যক মানুষকে গত দু’মাস আটক করে রাখা হয়েছে। যদিও পরে অনেককে ছাড়াও হয়েছে।’’
মার্কিন কংগ্রেসের সংশ্লিষ্ট কমিটির শুনানিতে আজ সেই কমিটির চেয়ারম্যান ব্র্যাড শেরমান থেকে শুরু করে ভারতীয় বংশোদ্ভূত সেনেটর প্রমীলা জয়পাল, সকলেই কাশ্মীর নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। জয়পাল বলেন, ‘‘কাশ্মীরে বিনা অভিযোগে প্রায় ১২ জন শিশুকে আটক করার খবর পাওয়া যাচ্ছে। এটা মেনে নেওয়া যায় না।’’ আর এক সেনেটর ইলহান ওমর বলেন, ‘‘ভারতের সঙ্গে আমেরিকার সম্পর্ক গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের উপরেও নির্ভরশীল। নরেন্দ্র মোদী সরকার ও বিজেপি এই মূল্যবোধকে সঙ্কটে ফেলছে।’’ বিদেশ দফতরের কর্তা অ্যালিস অবশ্য এ কথা মানতে রাজি হননি। তাঁর বক্তব্য, ‘‘গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া মেনেই মোদী সরকার জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা লোপ করেছে।’’
ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে সংঘাত কমাতে আলোচনা শুরু করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে অ্যালিসের তরফে। সেই প্রসঙ্গেই পাকিস্তানের সন্ত্রাসে মদতের বিষয়টিকে উল্লেখ করে তিনি বলেছেন, ‘‘গঠনমূলক দ্বিপাক্ষিক সংলাপের জন্য প্রয়োজন পারস্পরিক আস্থা। কিন্তু সেই আস্থা অর্জনের প্রধান প্রতিবন্ধক হল মৌলবাদীদের সঙ্গে পাকিস্তানের ধারাবাহিক সহযোগিতা। এই মৌলবাদীরাই আন্তঃসীমান্ত সন্ত্রাসে যুক্ত।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy