ইসলামাবাদে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের বাইরে ইমরান খানের বক্তৃতা। ছবি: এএফপি।
দেশ জুড়ে ‘কাশ্মীর দিবস’ পালন করে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের বাইরে উত্তপ্ত বক্তৃতা দিলেন। একই সঙ্গে উত্তর সম্পাদকীয় লিখলেন মার্কিন দৈনিকে। এবং দুই জায়গাতেই পরমাণু যুদ্ধের হুঁশিয়ারি দিয়ে ইমরান খান বললেন, ভারত-পাক লড়াই লাগলে ভুগতে হবে দুনিয়াকে।
শুধু তা-ই নয়, নরেন্দ্র মোদী এবং রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘকে তাঁর নিবন্ধে সরাসরি আক্রমণ করেছেন ইমরান। মোদীর মুখ্যমন্ত্রিত্বের সময়ে গুজরাত দাঙ্গা, ভারতে ভিন্ধর্মীদের প্রতি অসহিষ্ণুতার উদাহরণ দিয়ে তাঁর অভিযোগ, ‘‘আমরা ‘নতুন ভারতের’ বিরোধিতা করছি, যার নেতৃত্বে রয়েছে এমন একটা দল, যারা আরএসএস থেকে গড়ে উঠেছে।... যে গোষ্ঠীর প্রতিষ্ঠাতারা বেনিটো মুসোলিনি এবং অ্যাডল্ফ হিটলারের প্রশংসা করেন।’’
মার্কিন সংবাদপত্রে ইমরানের নিবন্ধের শিরোনাম, ‘কাশ্মীর এবং তার মানুষের উপরে ভারতের নিগ্রহ বন্ধ করতে গোটা বিশ্ব যদি কিছুই না-করে, দু’টি পরমাণু শক্তিধর দেশ সরাসরি সামরিক সংঘাতের মুখোমুখি হবে।’ পাক প্রধানমন্ত্রীর দাবি, গত বছরের অগস্টে কুর্সিতে বসেই দক্ষিণ এশিয়ায় শান্তি টিকিয়ে রাখার লক্ষ্যে কাজ শুরু করেছিলেন তিনি। কিন্তু পাকিস্তান যখন শান্তি প্রক্রিয়ার জন্য সক্রিয় হচ্ছে, ভারত তখন ফিনান্সিয়াল অ্যাকশন টাস্ক ফোর্সে (এফএটিএফ) পাকিস্তানকে কালো তালিকাভুক্ত করতে উঠে-পড়ে লেগেছে।
এর পরেই মোদী ও সঙ্ঘকে তোপ দেগে ইমরান চলে গিয়েছেন কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা প্রত্যাহার প্রসঙ্গে। লিখেছেন, ‘‘যে সব কাশ্মীরি প্রতিবাদ জানাচ্ছেন, তাঁদের গুলি করে মারা হচ্ছে। কাশ্মীর নিয়ে ভারতের সিদ্ধান্তের ফলে দক্ষিণ এশিয়ায় যুদ্ধের পরিস্থিতি। ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী প্রায় খোলাখুলিই পাকিস্তানকে হুমকি দিয়ে বলেছেন, পরমাণু অস্ত্রের ক্ষেত্রে ভারতের ‘প্রথমে ব্যবহার নয়’ নীতির ভবিষ্যৎ নির্ভর করবে পরিস্থিতির উপরে। অন্য ভারতীয় নেতারাও একই ধরনের কথা বলছেন। পাকিস্তান দীর্ঘদিন ধরেই ভারতের ‘প্রথমে ব্যবহার নয়’ নীতিকে সংশয়ের চোখে দেখছে।’’ অবশ্য একই সঙ্গে পাক প্রধানমন্ত্রীর ‘উপলব্ধি’— কাশ্মীর, বিভিন্ন কৌশলগত বিষয় ও বাণিজ্য নিয়ে আলোচনা করতে হলে দুই দেশকেই অনড় মনোভাব ছেড়ে সব পক্ষকে নিয়ে আলোচনায় বসতে হবে। কিন্তু কথা তখনই শুরু হতে পারে যখন ভারত কাশ্মীরের ‘বেআইনি অন্তর্ভুক্তি’-র সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসবে, কার্ফু তুলে নেবে, সেনাদের ব্যারাকে ফিরিয়ে আনবে।
পাকিস্তানের বিভিন্ন রাস্তায় আজ কাশ্মীরের সমর্থনে মিছিল হয়েছে। দুপুর বারোটায় বেজেছে সাইরেন, থমকে গিয়েছে ট্রাফিক। আর ইসলামাবাদের কনস্টিটিউশন অ্যাভিনিউয়ের জমায়েতে পতাকা তুলে ইমরান বলেছেন, ‘‘ভারত যদি কাশ্মীরে সাজানো সংঘর্ষ (ফলস ফ্ল্যাগ অপারেশন) করে, তা হলে পাকিস্তান যোগ্য জবাব দেবে। খবর রয়েছে যে, আন্তর্জাতিক নজর ঘোরাতে হামলা চালাতে পারে ভারত। পাকিস্তানি সেনা বাইরের আগ্রাসন রুখতে তৈরি।’’
সাউথ ব্লক মনে করছে, সন্ত্রাসবাদ নিয়ে প্রবল আন্তর্জাতিক চাপের মধ্যে পাকিস্তানকে আজ নয় কাল এই ঘৃণার রাজনীতি ছাড়তেই হবে। দিল্লির বক্তব্য, আগামী মাসে রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ অধিবেশন পর্যন্তই পাকিস্তানের দৌড়। সেখানে কাশ্মীর নিয়ে হইচই করবেন ইমরান। সন্ত্রাসবাদে অর্থ জোগানো সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক নজরদারি সংস্থা বা এফএটিএফ-এর বৈঠক আছে অক্টোবরে। সেখানে কালো তালিকাভুক্ত হওয়ার ভয় রয়েছে পাকিস্তানের। আজই করতারপুর করিডর নিয়ে অমৃতসরের অটারীতে ভারতীয় কর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছে পাকিস্তানের ‘টেকনিক্যাল টিম’। যা প্রমাণ করছে, পাকিস্তান যতটা গর্জাবে ততটা বর্ষাবে না। বরং আজ পাকিস্তানে এক শিখ কন্যাকে অপহরণ ও জোর করে ধর্মান্তরিত করার অভিযোগ নিয়ে সরব হয়েছে বিদেশ মন্ত্রক। মুখপাত্র রবীশ কুমার জানান, পাক সরকারকে অবিলম্বে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy