Advertisement
২৫ ডিসেম্বর ২০২৪
Bengal Ration Case

ইডির হাত থেকে বাঁচাতে দু’কোটি ঘুষ? বালুর সেই সিএ নিজেই এ বার বন্দি! দুর্নীতির ‘অনুসারী-শিল্প’

রেশন মামলায় জ্যোতিপ্রিয়ের গ্রেফতারির পর কেটে গিয়েছে এক বছরেরও বেশি সময়। তার মধ্যে অন্তত ৩০ বার তাঁর কোম্পানির সিএ শান্তনুকে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে ইডি। তাঁর বাড়িতেও অভিযান হয়।

ED

রেশন মামলায় ধৃত জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের কোম্পানির সিএ-এর বিরুদ্ধে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।

সারমিন বেগম
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪ ২১:২৮
Share: Save:

বড় শিল্প হলে তাকে ঘিরে তৈরি হয় ছোট এবং মাঝারি অনেক শিল্প। বণিকমহলের পরিভাষায় অনুসারী শিল্প বলা হয়। তেমনই রেশন দুর্নীতি মামলাকে কেন্দ্র করে ইডির ডাক এবং বিভিন্ন জনকে গ্রেফতারির মধ্যেই গড়ে উঠছে নতুন নতুন ‘অনুসারী দুর্নীতি’। কী রকম? ইডি সূত্রের খবর, রেশন মামলায় রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী ধৃত জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক ওরফে বালুর চাটার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট (সিএ) শান্তনু ভট্টাচার্য ‘অনুসারী দুর্নীতি’র হোতা হয়ে উঠছিলেন। সোমবার রাতে শান্তনুকে সল্টলেকের সিজিও কমপ্লেক্সে ডেকে পাঠিয়েছিল ইডি। বেশ কিছু ক্ষণ তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদের পর তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। এই শান্তনুই নাকি অন্যদের ইডির হাত থেকে বাঁচিয়ে দেওয়ার নাম করে টাকা তুলতেন! এক জনের কাছ থেকে ২ কোটি টাকা ঘুষ নিয়েছিলেন বলে জানতে পেরেছে ইডি। সেই অভিযোগকারী এবং অভিযুক্ত, দু’জনেই এখন রেশন মামলায় ইডির হাতে বন্দি।

রেশন মামলায় জ্যোতিপ্রিয়ের গ্রেফতারির পর কেটে গিয়েছে এক বছরেরও বেশি সময়। তার মধ্যে অন্তত ৩০ বার তাঁর কোম্পানির সিএ শান্তনুকে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে ইডি। তাঁর বাড়িতেও অভিযান চালিয়েছেন তদন্তকারী সংস্থার আধিকারিকেরা। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, রেশন মামলায় যুক্ত প্রাক্তন মন্ত্রী বালুর সঙ্গে তাঁর সরাসরি যোগাযোগ ছিল। বকলমে জ্যোতিপ্রিয়ের সাতটি সংস্থার আর্থিক বিষয় দেখভাল করতেন তিনি। শান্তনুর গ্রেফতারি প্রসঙ্গে এসএসকেএমে বালু চিকিৎসাধীন থাকাকালীন একটি ঘটনার উল্লেখ করেন তদন্তকারীরা। জানা গিয়েছে, এসএসকেএমে বালুর চিকিৎসার সময়ে একটি চিরকুট উদ্ধার করে ইডি। কন্যাকে হাসপাতালে বসে চিঠি লিখেছিলেন জ্যোতিপ্রিয়। সেই চিঠি ইডির হাতে পৌঁছয়। তাতে টাকার লেনদেন সংক্রান্ত বেশ কিছু তথ্য লেখা ছিল বলে দাবি করে ইডি। সেই চিঠির সঙ্গে শান্তনুর যোগ রয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে। ইডির একটি সূত্রের খবর, এ হেন শান্তনু রেশন মামলায় নাম উঠে আসা এক ব্যক্তিকে ‘বাঁচিয়ে দেবেন’ দাবি করে আলিফ নুর নামে এক ব্যক্তির কাছে ২ কোটি টাকা ঘুষ নেন। যদিও সেই নুর এবং তাঁর ভাইকে গত অগস্টেই গ্রেফতার করে ইডি। তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করে শান্তনুর ‘অনুসারী দুর্নীতি’র খোঁজ মিলেছে বলে তদন্তকারীদের সূত্রে খবর।

রেশন মামলার তদন্তে নেমে সোমবার রাতে গ্রেফতার হন হিতেশ চন্দক, সুব্রত ঘোষ এবং শান্তনু। মঙ্গলবার বিচার ভবনে ইডির বিশেষ আদালতে তাঁদের হাজির করানো হয়েছিল। আদালতে ইডি জানায়, ধৃতদের মধ্যে হিতেশ একটি রাইস মিলের মালিক। তাঁর বিরুদ্ধে ভুয়ো কৃষকের নাম ব্যবহার করে টাকা নয়ছয়ের অভিযোগ করা হয়। হিতেশের মতো ধৃত সুব্রতও একটি মিলের মালিক। নবদ্বীপ পুলিশের খাতায় নাম রয়েছে তাঁর। সুব্রতের বিরুদ্ধে এফআইআর করেছিল পুলিশ। দুর্নীতির টাকা কোথায় গিয়েছে, তা জানতে ওই ব্যক্তিকে নিজেদের হেফাজতে নিতে চেয়ে আদালতে আবেদন করে ইডি।

শান্তনুকে আগামী ২ জানুয়ারি পর্যন্ত হেফাজতে পেয়েছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। রেশন দুর্নীতি সংক্রান্ত তথ্যের পাশাপাশি ঘুষ-কাণ্ডেও তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে বলে তদন্তকারীদের সূত্রে খবর।

অন্য বিষয়গুলি:

Bengal Ration Case Jyotipriya Mallick ED arrest CA
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy