কলকাতা থেকে কিংস্টনে আসছে এই প্রতিমাই। নিজস্ব চিত্র
কানাডার অন্টারিওর কিংস্টন শহরে কুইন্স বিশ্ববিদ্যালয়। দেশ-বিদেশে খ্যাতি উচ্চমানের লেখাপড়া, গবেষণারজন্য। এককালে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়া ছিলেন ইলন মাস্ক। সেই বিশ্ববিদ্যালয়ের বাঙালি পড়ুয়া ও গবেষকদের পড়াশোনার ফাঁকে এ বার ইচ্ছে হয়েছে দুর্গাপুজো করার। এখন চলছে তার জোরদার প্রস্তুতি। ছাত্র ও গবেষকদের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন কিংস্টনের প্রতিষ্ঠিত বেশ কয়েক জন বাঙালি। কলকাতা থেকে প্রতিমা আনা, অনলাইনে চাঁদা তোলা, সব কিছু নিয়েই আমাদের পুজো কমিটির প্রতিটি সদস্য এখন প্রবল ব্যস্ত।
দেশ ছেড়ে কানাডায় এসেছি বছর দশেক হল। প্রথমে এসেছিলাম ইউনিভার্সিটি অব সাস্কাচুয়ানে পিএইচডি করতে। পুজো এলে এ দেশে প্রথম দিকে খুব ফাঁকা ফাঁকা লাগত। আশৈশব দেখে আসা সেই শারদোৎসবের ছোঁয়া যে পেতাম না এখানে! পাড়ার পুজোর দিনগুলোতে আর ফিরে যাওয়া হত না। প্রথম কয়েক বছর পুজোর সময়ে ভীষণ ‘হোমসিক’ লাগত। ধরেই নিয়েছিলাম, এই জন্মে আর পুজো দেখা হবে না। আর ঠিক তখনই পরিচয় হয়ে গেল সেখানকার কয়েক জন বাঙালির সঙ্গে। জানতে পারলাম, এখানেও দুর্গাপুজো হয় বেশ আন্তরিকতার সঙ্গে। তার পরে কয়েকটি দুর্গাপুজোয় জীবনের কিছু সেরা মুহূর্ত কাটিয়েছি।
পিএইচডির পালা চুকিয়ে ২০১৯-এ চলে আসি কিংস্টনে। এই শহরকে অজান্তেই ভালবাসতে শুরু করেছিলাম। কিন্তু একটা জিনিস বারবার মনে হয়েছে— ‘পাড়ার পুজোর’ অভাব। দুর্গাপুজোর সময়ে সাধারণত আশপাশের বড় শহর টরন্টো বা অটোয়াতে বাঙালিরা যান দুর্গাপুজো দেখতে। সে মন্দ না। তবে নিজের পাড়ার পুজোর আয়োজনের মতো মজা কোথায়?
এমনই চলছিল। ইতিমধ্যে একটা ঘটনা ঘটল। দেখলাম কুইন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের বাঙালি ছাত্রছাত্রীদের সংখ্যা একেবারে নগণ্য নয়। তাঁদের নিয়ে হোয়াটসঅ্যাপে একটা গ্রুপ বানালাম। পরিচয় আরও বাড়ল। সকলে মিলে একদিন চায়ের আড্ডায় জমায়েত হলাম। সেখানেই আলোচনা শুরু হল, এ বার পুজো কোথায় দেখতে যাওয়া যায়। গ্রুপের এক সদস্য মুখ ফস্কে বলেই ফেলn, ‘‘দাদা অন্য কোথাও কেন যাব? পুজো এ বার এখানেই করে ফেলি।’’ দুর্গাপুজো? মুখের কথা নাকি! অনেক টাকার ব্যাপার। আমরা ছাত্রছাত্রী ও গবেষকদের একটা ছোট দল। তবে কথায় আছে, ইচ্ছে থাকলেই উপায় হয়। এক সপ্তাহের মধ্যে এখানকার কয়েক জন বাঙালি উদ্যোগপতিদের সঙ্গে যোগাযোগ করে ফেললাম। তাঁরা আমাদের পুজো নিয়ে পরিকল্পনা শুনে রীতিমতো উচ্ছ্বসিত! কিংস্টনের দুই বাঙালি আমাদের দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিলেন। অনুদান দিয়ে আমাদের স্বপ্নপূরণে সাহায্য করেছেন অনেকেই। আশা করছি, পুজোর আগে আরও অনেকের সাহায্য পাব।
হ্যাঁ, কিংস্টনে এই বছর দুর্গাপুজো হচ্ছে। তবে শুধু ২ অক্টোবরে। প্রবাসেরঅনেক শহরের মতো আমাদেরও এক দিনে চার দিনের পুজো সেরে ফেলতে হবে। আকাশপথে একচালার প্রতিমা আসছে কলকাতা থেকে। কিংস্টন দুর্গাপুজো কমিটির পক্ষ থেকে সকলকে জানাই আন্তরিক আমন্ত্রণ। যদি কিংস্টন বা আশপাশে থাকেন, কিংস্টন কফি হাউসে অক্টোবরের প্রথম রবিবার অবশ্যই আমাদের পুজোর অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy