—প্রতীকী চিত্র।
শুধু ভারত নয়, এশিয়া, আফ্রিকা এবং দক্ষিণ আমেরিকার বৃহৎ এলাকা জুড়েই পানীয় জলের সঙ্কট উত্তরোত্তর বাড়ছে। কোথাও জলস্তরই হু-হু করে নেমে যাচ্ছে, কোথাও বা ভূগর্ভে পানীয় জলের ভান্ডারে মিশছে আর্সেনিক, ফ্লুয়োরাইডের মতো নানা রাসায়নিক বিষ। পানীয় জলের দূষণের এমন চিত্র প্রশ্ন তুলছে মানব সমাজের বড় অংশের ভবিষ্যত নিয়েও। এই পরিস্থিতিতে কী ভাবে সেই সঙ্কট কাটানো যায় সেই দিশাই দেখাচ্ছেন এক বাঙালি ভূবিজ্ঞানী অভিজিৎ মুখোপাধ্যায়। তাঁর গবেষণা বলছে, এক দিকে যেমন রাসায়নিক দূষণ এড়াতে হবে তেমনই ভূগর্ভের জলের ভান্ডার পূরণ করতে হবে। উন্নয়নশীল দেশে পানীয় জলের সমস্যা সমাধানে নিরন্তর গবেষণার জন্য এ বছর তাঁকে ডি এল মেমোরিয়াল মেডেল দিয়ে পুরস্কৃত করেছে ভূবিজ্ঞানীদের বিশ্বের বৃহত্তর সংগঠন আমেরিকান জিয়োফিজ়িক্যাল ইউনিয়ন।
পুরস্কার অবশ্য নতুন বিষয় নয় খড়গপুর আইআইটির ভূতত্ত্ব এবং ভূপদার্থ বিজ্ঞানের অধ্যাপক অভিজিতের কাছে। ২০২০ সালে শান্তিস্বরূপ ভাটনগর পুরস্কার পেয়েছিলেন তিনি। তবে আমেরিকার সংগঠনের পুরস্কার পেয়ে তিনি বলছেন, ‘‘ভূবিজ্ঞানীদের সংগঠন হলেও এত দিন মূলত পরিবেশ এবং জলবায়ু বিজ্ঞানীরাই এই পুরস্কার পেয়েছেন। আমি ভূবিজ্ঞানী হিসাবে এই পুরস্কার পাচ্ছি।’’ প্রসঙ্গত, আইআইটির পরিবেশ বিজ্ঞান এবং প্রযুক্তি বিভাগেও অধ্যাপনা করেন তিনি। আদতে কলকাতার বাসিন্দা অভিজিতের পড়াশোনা প্রথমে সাউথ পয়েন্ট স্কুল এবং তার পরে আশুতোষ কলেজ এবং কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব বিভাগে। আমেরিকায় পিএইচডি এবং পোস্ট-ডক্টরেট করার পরে বিদেশে চাকরি। ২০১০ সালে যোগ দেন আইআইটিতে।
ভারত-সহ দক্ষিণ এশিয়ার পানীয় জলের সমস্যা যে জায়গায় পৌঁছচ্ছে তা যথেষ্ট আতঙ্কের। বিজ্ঞানীরা জানান, শুষ্ক মরসুমে ভূগর্ভের জলস্তর থেকে নদীর জল সরবরাহ বজায় থাকে। কিন্তু জলস্তর নেমে যাওয়ায় ইদানীং শুষ্ক মরসুমে বহু নদী শুকিয়ে কাঠ হয়ে যাচ্ছে। পানীয় জলের পাশাপাশি ভূগর্ভের জলে বিষাক্ত রাসায়নিক মেশায় তা খাদ্যশৃঙ্খলে ঢুকে পড়ছে। কারণ, বহু ক্ষেত্রেই শুষ্ক মরসুমে ভূগর্ভের জলের উপরেই কৃষির সেচ নির্ভর করে। যে ভাবে বৃষ্টিপাতের চরিত্র বদল হচ্ছে তাতে খরাও বাড়ছে। সে দিক থেকে জলের সঙ্কট বাড়বে বলেই আশঙ্কা করছেন অনেকে।
এই বিপদের সমাধান কোথায়? অভিজিত বলছেন, ‘‘ভূগর্ভে কোথায় বিষাক্ত রাসায়নিকমুক্ত জল মিলবে তার নির্দিষ্ট সন্ধান জরুরি। তবে তাতেই বিপদ পুরোপুরি কাটবে না। কারণ, ভূগর্ভ থেকে জল তুললে তার ক্ষতিপূরণও প্রয়োজন। তাই কী ভাবে ভূগর্ভে জলের সঞ্চয় ধরে রাখা যায় সেই পথও বের করতে হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy