জো বাইডেন এবং ডোনাল্ড ট্রাম্প। ফাইল চিত্র।
আর্থিক মন্দায় জর্জরিত দেশের অন্তর্বর্তী নির্বাচনে এ বার লাল ঝড় উঠবে, ইঙ্গিত দিচ্ছিল অনেক জনমত সমীক্ষাই। রিপাবলিকান দলকে বাড়তি অক্সিজেন জোগাচ্ছিল প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের লাগাতার প্রচারসভা। কিন্তু বুধবার ফল প্রকাশিত হতে শুরু করার পরে দেখা যাচ্ছে, লড়াই চলছে সমানে সমানে।
ভারতীয় সময় বুধবার গভীর রাত পর্যন্ত, সেনেটের ৪৮টি আসন ডেমোক্র্যাটদের ও ৪৯টি রিপাবলিকানদের দখলে। এখনও তিনটি আসনের ফল প্রকাশিত হয়নি। যে আসনগুলিতে ফল প্রকাশিত হয়নি, নির্বাচনের আগে তার মধ্যে একটি ছিল রিপাবলিকানদের দখলে, অন্য দু’টি ডেমোক্র্যাটদের। এ বার সেনেটের দখল পেতে গেলে, নিজেদের আসনটি ধরে রেখে ডেমোক্র্যাটদের কাছ থেকে দু’টি আসন ছিনিয়ে নিতে হবে ডোনাল্ড ট্রাম্পের দলকে। প্রসঙ্গত, সেনেটের ১০০টি আসনের মধ্যে এক-তৃতীয়াংশ, অর্থাৎ ৩৫টি আসনে ভোটাভুটি হয়েছে। এত দিন সমসংখ্যক (৪৮) সেনেটর ছিল দুই দলের। ডেমোক্র্যাট নেত্রী, ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিসের ভোটে সেনেটের দখল নিয়েছিল জো বাইডেনের দল।
অন্তর্বর্তী নির্বাচনের আগে আমেরিকান কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ হাউস অব রিপ্রেজ়েন্টেটিভসও ডেমোক্র্যাটদের দখলে ছিল। হাউসের আসন সংখ্যা ৪৩৫। অন্তর্বর্তী নির্বাচনের আইন অনুযায়ী, এ বার ভোট হয়েছে সব ক’টি আসনেই। এখনও পর্যন্ত প্রকাশিত ফলে ইঙ্গিত— এগিয়ে রিপাবলিকানেরা। তাদের ঝুলিতে আপাতত ২০৩টি আসন। দু’টি আসন হারিয়ে ডেমোক্র্যাটদের হাতে এখন রয়েছে ১৮৭টি আসন। এখনও ৪৫টি আসনের ফল ঘোষণা বাকি আছে। নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতার জন্য যে কোনও দলের দরকার ২১৮টি আসন। ফলে দু’দলই এখনও আশায়, হাউসের দখল নেবে তারাই। তবে একটু বাড়তি আশার আলো রিপাবলিকান শিবিরে। কারণ আর মাত্র ১৫টি আসন পেলেই হাউস তাদের দখলে চলে আসবে।
হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হয়েছে গভর্নর নির্বাচনেও। এ বার ৩৬টি প্রদেশে ও ওয়াশিংটন ডিসি-সহ চারটি ফেডারাল ডিস্ট্রিক্টে গভর্নর নির্বাচন হয়েছে। দেখা যাচ্ছে, যে প্রদেশে ক্ষমতায় ছিল যে দল, সেখানে সেই স্থিতাবস্থা মোটামুটি বজায় থেকেছে। ব্যতিক্রম শুধু মেরিল্যান্ড ও ম্যাসাচুসেটস। দু’টি প্রদেশই রিপাবলিকানদের কাছ থেকে ছিনিয়ে নিয়ে ডেমোক্র্যাটেরা। এবং দুই প্রদেশের ফলাফলই ঐতিহাসিক। মেরিল্যান্ডের প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ গভর্নর হিসেবে নির্বাচিত হচ্ছেন ৪৪ বছর বয়সি ওয়েস মুর। আর ম্যাসাচুসেটসের গভর্নর পদে জয়ী হয়েছেন, মাউরা হিলি। দেশের সমকামী আন্দোলনের অন্যতম জনপ্রিয় মুখ তিনি।
কয়েকটি প্রদেশের ফলাফল নিয়ে আজ দিনভর চর্চা চলেছে। যেমন কলোরাডোয় কংগ্রেসের দু’টি কক্ষেই এগিয়ে রয়েছে ডেমোক্র্যাটেরা। সম্ভবত, অ্যারিজ়োনা ডেমোক্র্যাটদের দখলে যাচ্ছে। তবে জর্জিয়ার সেনেট পদে জোর লড়াই চলছে। শুধু জিতলেই হবে না, অন্তত ৫০ শতাংশ ভোট পেলেই জয়ী ঘোষণা করা হবে কোনও প্রার্থীকে। এখনও সেখানকার ডেমোক্র্যাটিক সেনেটর র্যাফায়েল ওয়ারনক ও তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী রিপাবলিকান হের্শেল ওয়াকার কেউ-ই সেই ৫০ শতাংশের কোঠায় পৌঁছতে পারেননি। তাই মনে হচ্ছে যে, জর্জিয়ায় সেনেটের সিদ্ধান্ত হয়তো আপাতত ঝুলেই থাকবে। ফল অমীমাংসিত থাকলে ৬ ডিসেম্বর পুনর্নির্বাচন হবে। অন্য দিকে, আলাস্কা, নেভাডা ও উইসকনসিনে খুবই স্বচ্ছন্দ জয়ের দিকে এগোচ্ছে রিপাবলিকানেরা।
ইতিহাস বলছে, প্রেসিডেন্ট যে দলের, সেই দল অন্তর্বর্তী নির্বাচনে হাউস বা সেনেটের সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারায়। সেই পথে চলে এ বার উভয় কক্ষে বা কোনও একটিতে রিপাবলিকানেরা জিতলে বিভিন্ন আইন পাশে নানা বাধার সম্মুখীন হতে হবে বাইডেন প্রশাসনকে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy