মার্টিন বশির ও যুবরানি ডায়ানা। ফাইল চিত্র
সে প্রায় পঁচিশ বছর আগের কথা। ১৯৯৫ সালের নভেম্বর। বিবিসি চ্যানেলের প্যানোরামা অনুষ্ঠানে সাংবাদিকের মুখোমুখি বসে ব্রিটেনের যুবরানি ডায়ানা। দশকের সেরা সাক্ষাৎকারের তকমা পাওয়া সেই অনুষ্ঠানে ক্যামেরার সামনে যুবরানি মেলে ধরছেন তাঁর জীবনকাহিনী। স্বামী চার্লসের সঙ্গে তাঁর প্রেমহীন সম্পর্ক থেকে শুরু করে নিজের প্রেম, এমনকি ক্যামিলা পার্কার বোলসের সঙ্গে স্বামীর বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের কথাও।
সে দিনের অনুষ্ঠানে আড়াই কোটির বেশি দর্শককে স্তব্ধ করে দিয়েছিল ডায়ানার সেই স্বীকারোক্তি, ‘‘বিয়ের শুরু থেকেই আমাদের মধ্যে তৃতীয় জন ছিল।’’ রাতারাতি কেরিয়ারের শিখরে পৌঁছে গিয়েছিলেন ডায়ানার উল্টো দিকের চেয়ারে বসা সাংবাদিকটি। নাম মার্টিন বশির।
বছর ঘুরতে না ঘুরতে বশিরের বিরুদ্ধে মিথ্যাচারের অভিযোগ জমা পড়ল বিবিসি-র দফতরে। অভিযোগ উঠল, কিছু জাল নথি দেখিয়ে ডায়ানার বিশ্বাস অর্জন করে ওই সাক্ষাৎকারের জন্য তাঁকে রাজি করিয়েছেন বশির। তদন্ত শুরু হলেও সমাধান হয়নি। অবশেষ ২৫ বছর পর সেই ঘটনায় মার্টিনকে দোষী সাব্যস্ত করল এখনকার একটি স্বাধীন তদন্তকারী কমিটি। গত কালই সেই রিপোর্ট প্রকাশ্যে এসেছে।
ডায়ানার ভাই আর্ল স্পেন্সারের অভিযোগের ভিত্তিতে গত বছর প্রাক্তন বিচারপতি লর্ড ডায়সনের নেতৃত্বে এই তদন্ত কমিটি গড়েন বিবিসি কর্তৃপক্ষ। রিপোর্ট প্রকাশের পরে প্রিন্স অব ওয়েলস চার্লস, রাজকুমার উইলিয়াম ও হ্যারি এবং ডায়ানার ভাই আর্ল স্পেন্সারের কাছে ক্ষমা চেয়েছে বিবিসি।
গত রাতেই এ নিয়ে ক্ষোভে ফেটে পড়েছিলেন প্রিন্স উইলিয়াম। সাগরপারে আমেরিকায় বসে একই প্রতিক্রিয়া ছিল প্রিন্স হ্যারিরও। বৃহস্পতিবার রাত দশটার বুলেটিনে প্রকাশিত হয়েছে উইলিয়ামের বিবৃতি। তিনি বলেছেন, ‘‘ওই সাক্ষাৎকারের কোনও যৌক্তিকতা নেই। ওটা আর কখনও সম্প্রচার করা উচিত নয়।’’ উইলিয়ামের কথায়, ওই সাক্ষাৎকার সম্প্রচারের পরে তাঁর বাবা-মায়ের সম্পর্ক আরও খারাপ হয়ে যায়। তাঁর মায়ের মানসিক অস্থিরতা, কষ্ট বাড়িয়ে দিয়েছিল ওই ঘটনা।
১৯৯৭ সালের ৩১ অগস্ট প্যারিসে এক পথ দুর্ঘটনায় মারা যান ডায়ানা। তার ঠিক দু’বছর আগে ১৯৯৫ সালের ৩১ অগস্ট ডায়ানার ভাই আর্ল স্পেন্সারের সঙ্গে আলাপ বশিরের। সেই সময়ে চার্লস ও ডায়ানার সম্পর্ক তলানিতে। স্পেন্সারকে ব্যাঙ্কের কিছু নথি দেখান বশির। নবীন সাংবাদিক দাবি করেন, ডায়ানার খুব ঘনিষ্ঠ, বিশ্বাসভাজন কিছু কর্মচারী এবং কাছের মানুষ অর্থের বিনিময়ে নিরাপত্তা সংস্থার কাছে যুবরানির খবর পাচার করছেন। ভাইয়ের কাছে সে কথা জানতে পেরে বিচলিত হয়ে পড়েন প্রয়াত প্রাক্তন যুবরানি। রাজি হয়ে যান সাক্ষাৎকার দিতে।
স্পেন্সার জানিয়েছেন, ডায়ানার মৃত্যুর পরে ওই সাক্ষাৎকারের সঙ্গে একটা অদ্ভুত সম্পর্ক খুঁজে পান তিনি। বিষয়টি নিয়ে নাড়াচাড়া করতেই বেরিয়ে আসে, ব্যাঙ্কের জাল নথির বিষয়টি। বিবিসির কাছে তদন্তের দাবি করেন তিনি। সাক্ষাৎকারের পরে ডায়ানা নিজেও বিবিসিকে চিঠি লিখে জানিয়েছিলেন, যে ভাবে সাক্ষাৎকারটি নেওয়া হয়েছে তাতে তিনি খুশি নন। তবে নথি জালের বিষয়টি তিনি জানতেন না।
তদন্তে সাক্ষ্য দিয়েছেন বিবিসির প্রাক্তন গ্রাফিক ডিজাইনার ম্যাট ওয়েসলার। বশিরের উদ্দেশ্য নিয়ে সম্পূর্ণ অন্ধকারে থাকা ম্যাটই ব্যাঙ্কের জাল নথিটি বানিয়েছিলেন। ম্যাটের অভিযোগ ছিল, বিবিসির তৎকালীন ডিরেক্টর-জেনারেল লর্ড ব্রিট এবং তদন্তকারী অফিসার লর্ড হল তদন্তে গা-ছাড়া মনোভাব দেখিয়েছেন।
অসুস্থতার কারণে গত সপ্তাহেই বিবিসির চাকরি থেকে ইস্তফা দিয়েছেন বশির। ৫৮ বছরের এই সাংবাদিক এখন হাসপাতাল ভর্তি। তবে জানা গিয়েছে, তদন্ত কমিটির কাছে তিনি এই
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy