গুঁড়িয়ে দেওয়া মিরপুর-১০ মেট্রো স্টেশন পরিদর্শনে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবিঃ পিটিআই।
বিক্ষোভকে ব্যবহার করে বাংলাদেশের ‘উন্নয়নের অগ্রযাত্রা’-কে পিছিয়ে দেওয়া এবং অরাজকতা তৈরি করে ক্ষমতা দখলের চক্রান্ত হয়েছিল বলে বৃহস্পতিবার মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ দিন তিনি গুঁড়িয়ে দেওয়া মিরপুর-১০ মেট্রো স্টেশন পরিদর্শন করেন। দৃশ্যত বিহ্বল হাসিনা বলেন, “আমি জনগণের কাছে বিচার চাইছি। ধ্বংসের বর্ণনা দেওয়ার ভাষা নেই আমার।”
মিরপুর-১০ ছিল বাংলাদেশের নবনির্মিত মেট্রো রেলের ব্যস্ততম স্টেশন। প্রায় সব ক’টি স্টেশন ভাঙচুর করে গুঁড়িয়ে দেওয়ার পাশাপাশি কয়েকটি জায়গায় আগুন দেওয়ার পরে অনির্দিষ্ট কালের জন্য মেট্রো চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। মেট্রো রেলের এক কর্তা জানান, ফের ট্রেন চালু করতে ঠিক কত দিন লাগবে, কারিগরি সমীক্ষা করে সেটা জানতেও অন্তত দু’সপ্তাহ সময় দরকার। তিনি জানান, মেট্রো চালু হলেও মিরপুর-১০ ও যাত্রাবাড়ি-সহ তিন চারটি স্টেশন বন্ধ রাখতে হবে। এই স্টেশনগুলি ফের চালু করতে বছর গড়িয়ে যেতে পারে। সাধারণ রেল যোগাযোগও শুক্রবার থেকে অল্প অল্প করে শুরু করা হবে, বলেছিলেন কর্তৃপক্ষ। কিন্তু সেই সিদ্ধান্ত রদ করা হয়েছে। রেলপথে সুরক্ষা বন্দোবস্ত সম্পূর্ণ পরীক্ষার পরেই রেল চালু হবে বলে জানানো হয়েছে।
বিক্ষোভ ও নাশকতার দিনগুলিতে গুলি ও ইটের আঘাতে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২০৩। বিভিন্ন হাসপাতাল ও মর্গের তথ্য মিলিয়ে বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যম এই সংখ্যাটি জানাচ্ছে। আহত অন্তত ৭ হাজার। ছররা গুলির আঘাতে অন্তত ৫০০ জনের চোখে ক্ষত হয়েছে। এর মধ্যে বিভিন্ন হাসপাতালে ২৫০-র বেশি মানুষের চোখে অস্ত্রোপচার করতে হয়েছে। হাসপাতাল সূত্রে জানানো হয়েছে, এঁদের অধিকাংশই তরুণ।
বিক্ষোভে উস্কানি এবং নাশকতার চক্রান্তে অংশ নেওয়ার জন্য জামাতে ইসলামি, বিএনপি এবং অন্য বিরোধী দলগুলির অন্তত আড়াই হাজার নেতা-কর্মীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। দেশের বাইরে থেকেও বিভিন্ন ভাবে নাশকতাকারীদের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানতে পেরেছে গোয়েন্দা পুলিশ। গোয়েন্দা পুলিশের প্রধান হারুন অর রশিদ জানিয়েছেন, ক্ষমতা দখলের উদ্দেশ্যেই নাশকতা চালানো হয়েছে বলে তাঁরা নিশ্চিত। তিনি বলেন, “এই কারণেই বাংলাদেশ টেলিভিশন এবং বিমানবন্দরকে নিশানা করা হয়েছিল। নিরাপত্তা বাহিনী ঢাকার জেলে হামলা ঠেকিয়ে দিয়েছে। নরসিংদীর মতো সেখানেও কারাবন্দি জঙ্গিদের মুক্ত করা ছিল লক্ষ্য।”
বাংলাদেশে ছাত্রবিক্ষোভ দমনে কী কী পদক্ষেপ করা হয়েছে এবং বিক্ষোভের ফলে সেখানে কী পরিস্থিতির উদ্ভব হয়েছিল, সরকারকে তা সবিস্তার জানাতে বলেছেন রাষ্ট্রপুঞ্জের মানবাধিকার বিষয়ক হাই কমিশনার ফলকার টুর্ক। তবে ‘ইউএন’ লোগো লাগানো সাঁজোয়া গাড়ি বিক্ষোভ দমনে ব্যবহার হয়েছিল, এমন ভিডিয়োর ছবি ছড়িয়ে পড়ার পরে প্রশ্ন তুলেছে রাষ্ট্রপুঞ্জও। বাংলাদেশের সেনাবাহিনী এই গাড়িগুলি রাষ্ট্রপুঞ্জের বিভিন্ন মিশনে অংশ নেওয়ার বিনিময়ে পেয়েছিল। সরকারি সূত্রে বলা হয়েছে, হঠাৎ বিক্ষোভ শুরু হওয়ায় গাড়িগুলি থেকে ‘ইউএন’ লোগো ওঠানোর সুযোগ হয়নি। এই লোগো দেওয়া হেলিকপ্টারও ঢাকার আকাশে চক্কর কাটতে দেখা গিয়েছে। রাষ্ট্রপুঞ্জ এই সব বিষয়ে অভিযোগ পাওয়ার পরে সরকারের বক্তব্য জানতে চেয়ে চিঠি দিয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy