আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দাবি করেছেন, বাংলাদেশের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাকে ২৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলার সাহায্য দিয়েছিল ইউএসএইড। ‘রাজনৈতিক’ কাজে ব্যবহার করা হয়েছিল সেই অনুদান। ভারতীয় মুদ্রায় তার মূল্য প্রায় আড়াইশো কোটি টাকা। বাংলাদেশি মুদ্রায় তার মূল্য প্রায় ৩৫০ কোটি টাকা। এই নিয়ে ইউএসএইডের সমালোচনা করেছিলেন ট্রাম্প। এ বার এই নিয়ে জবাব দিল মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার। তারা দাবি করল, সরকারকে না জানিয়েই ওই টাকা এসেছিল বাংলাদেশের এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার হাতে। এই বিষয়ে বাংলাদেশের এনজিও বিষয়ক ব্যুরো কোনও ছাড়পত্রও দেয়নি।
বাংলাদেশের ১৯৭৮ সালের একটি অধ্যাদেশ অনুযায়ী, সে দেশের যে সব স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন বিদেশি অনুদান নিয়ে কাজ করে, তাদের উপর নজরদারি চালায় এই এনজিও বিষয়ক ব্যুরো। বিদেশ থেকে আসা অনুদানের উপরেও নজর রাখে তারা। এই ব্যুরোর ডিরেক্টর জেনারেল মহম্মদ আনোয়ার হোসেন সংবাদ সংস্থা এএনআইকে বলেন, ‘‘ডোনাল্ড ট্রাম্প যে ২৯ মিলিয়ন (দু’কোটি ৯০ লক্ষ) মার্কিন ডলার অনুদানের কথা বলেছেন, তা আমরা জানি না। যে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলিকে ওই টাকা দেওয়া হয়েছে, তাদের নাম প্রকাশ করা হলে আমরা যাচাই করতে পারি। তবে ওই অনুদানের কথা আমাদের কাছে নথিভুক্ত নেই।’’ হোসেন বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যম ‘প্রথম আলো’-কে জানিয়েছেন, এই বিষয়ে সরকারের ‘উচ্চতর মহলে’ জানানো হয়েছে।
ক্ষমতায় আসার পরে বেশ কিছু বিদেশি রাষ্ট্রের স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনকে অনুদান দেওয়া বন্ধ করেছে ট্রাম্প সরকার। সেই তালিকায় রয়েছে ভারত, বাংলাদেশও। বাংলাদেশের এনজিও ব্যুরোর ডিরেক্টর জেনারেল হোসেন জানিয়েছেন, সে দেশে এর দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব পড়তে পারে। তিনি আরও জানিয়েছেন, অনেক দেশের থেকেই অনুদান পায় বাংলাদেশ। এখন আমেরিকার পরিবর্তে বিকল্প দেশের সাহায্য পাওয়ার চেষ্টা করছে তারা। তবে ইউএসএইড রোহিঙ্গাদের সাহায্যকারী প্রকল্পগুলিকে আগের মতোই অনুদান দিচ্ছে বলে জানিয়েছেন তিনি। ওই নিয়ে সে দেশে কাজ করে প্রায় ৭০টি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা।
আরও পড়ুন:
রোহিঙ্গাদের প্রকল্পে সাহায্য বন্ধ না করলেও বাংলাদেশের এক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনকে প্রায় ৩৫০ কোটি টাকা অনুদান দেওয়া নিয়ে ইউএসএডের সমালোচনা করেছেন ট্রাম্প। তিনি কটাক্ষ করে বলেন, ‘‘আপনারা কল্পনা করতে পারেন যে, ছোট্ট একটা সংগঠন, যাতে দু’জন কাজ করেন, তাঁরা ২৯ মিলিয়ন ডলার পাচ্ছেন? খুব শীঘ্রই কোনও বাণিজ্য পত্রিকার শিরোনামে আসবেন তাঁরা, দুনিয়ার বৃহত্তম দুর্নীতিকারী হিসাবে।’’ তিনি এ-ও দাবি করেছেন, ‘রাজনৈতিক প্রকল্প’-এ ব্যবহার করা হয়েছে সেই টাকা। এ বার এই নিয়েই মুখ খুলল ইউনূস সরকার।