কী ভাবে খুন করা হয়েছিল সুমিতা ঘোষকে? মঙ্গলবার রাতে এই ঘটনায় অন্যতম অভিযুক্ত ফাল্গুনী ঘোষকে নিয়ে মধ্যমগ্রামে তাঁদের ভাড়া বাড়িতে গেল পুলিশের ফরেন্সিক দল। সেখানে তাঁকে নিয়ে গিয়ে চলল ঘটনার পুনর্নির্মাণ।
মঙ্গলবার সকালে কলকাতার কুমরোটুলি এলাকা থেকে উদ্ধার হয় এক মহিলার দেহাংশ ভরা নীল রঙের একটি ট্রলি ব্যাগ। দুই মহিলাকে গঙ্গার ধারে ওই ট্রলি ব্যাগ নিয়ে ঘুরতে দেখে প্রথমে সন্দেহ হয় স্থানীয়দের। তাঁরা চেপে ধরতেই সেই ট্রলি ব্যাগ থেকে বেরোয় ওই মহিলার দেহাংশ। তার পর মা আরতি ঘোষ এবং মেয়ে ফাল্গুনীকে আটক করে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ। পরে তাঁদের গ্রেফতারও করা হয়। পুলিশ জানতে পেরেছে, নিহত সুমিতা সম্পর্কে ফাল্গুনীর পিসিশাশুড়ি হতেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গত আড়াই বছর ধরে মধ্যমগ্রাম পুরসভার ২৩ নম্বর ওয়ার্ডে বীরেশপল্লি এলাকায় ভাড়া থাকতেন ফাল্গুনী এবং আরতি। কয়েক দিন আগে এক বৃদ্ধাকে ভাড়াবাড়িতে ঢুকতে দেখেন স্থানীয়েরা। তবে তিনি যে সম্পর্কে ফাল্গুনীর পিসিশাশুড়ি, তা তাঁরা জানতেন না বলে জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। স্থানীয় সূত্রে পুলিশ জানতে পেরেছে, সোমবার সকালে একটি ট্রলি ব্যাগ নিয়ে দু’জনকে ভাড়াবাড়িতে ঢুকতে দেখেছিলেন কয়েক জন। বিকেলে মা আর মেয়ে বেরিয়ে যান। পরের দিন মঙ্গলবার সকালে উদ্ধার হয় দেহাংশ ভরা ট্রলি ব্যাগ।
পুলিশ জানতে পেরেছে ট্রলি ব্যাগে প্রৌঢ়ার দেহ ভরে মধ্যমগ্রামের ভাড়াবাড়ি থেকে ভ্যানে চেপে প্রথমে মধ্যমগ্রামের দোলতলা মোড়ে আসেন মা ও মেয়ে। সেখান থেকে একটি নীল-সাদা ট্যাক্সিতে চেপে যান কুমোরটুলি ঘাটের কাছে। তার আগে প্রিন্সেপ ঘাটেও তাঁরা যাওয়ার চেষ্টা করেছিলেন বলে দাবি করেছেন ট্যাক্সিচালক।
প্রৌঢ়ার পায়ের একাংশ কাটা ছিল। পুলিশ সূত্রের খবর, জেরার মুখে মা-মেয়ে জানিয়েছেন, ট্রলি ব্যাগে ঢোকানোর জন্য মৃতের পায়ের পাতা দুটো কেটে দেন তাঁরা। তবে এই দাবির সত্যাসত্য খতিয়ে দেখছে পুলিশ। প্রাথমিক ভাবে পুলিশ জানতে পেরেছে, মধ্যমগ্রামের যে ভাড়াবাড়িতে মা-মেয়ে থাকতেন, সেখানে গত ১১ ফেব্রুয়ারি যান ওই প্রৌঢ়া। প্রৌঢ়ার বাড়ি অসমের যোরহাটে। শ্বশুরবাড়ি বর্ধমানের নন্দঘাটে। তবে দীর্ঘ দিন তাঁর স্বামীর সঙ্গে সম্পর্ক ছিল না বলে জানতে পেরেছে পুলিশ। এখন মধ্যমগ্রামের ভাড়া বাড়িতে ফাল্গুনীকে নিয়ে গিয়ে ঘটনার পুনর্নির্মাণ করল পুলিশ।