শেখ হাসিনা। ফাইল চিত্র।
দু’মাস আগে নয়াদিল্লি সফরে এসে জাতীয় নাগরিক পঞ্জি বা এনআরসি নিয়ে মুখ খুলেছিলেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। জানিয়েছিলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী তাঁকে আশ্বস্ত করেছেন যে এটি ভারতের ‘অভ্যন্তরীণ বিষয়’। এই নিয়ে তিনি ভাবিত নন।
কূটনৈতিক সূত্র বলছে, প্রকাশ্যে না বললেও দুশ্চিন্তা তখনও ছিল। কিন্তু বর্তমানে নাগরিকত্ব সংশোধন বিলটি (সিএবি) সংসদে পাশ করানো নিয়ে ভারত সরকার যে তোড়জোড় শুরু হয়েছে, তাতে ঢাকার দুশ্চিন্তা বাড়ছে। বাংলাদেশ সরকারের একটি সূত্রের দাবি, প্রধানমন্ত্রী মোদী এবং বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর ঢাকাকে বার্তা দিচ্ছেন যে ভারতের নাগরিকত্বের বিষয় নিয়ে বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি টালমাটাল হয়ে যাক, নয়াদিল্লি তা চায় না। তাঁদের আগেই বলা হয়েছিল, অসমে চিহ্নিত হওয়া শরণার্থী এবং অনুপ্রবেশকারীদের ভারত বাংলাদেশে ফেরত পাঠাবে না— হাসিনা সে ব্যাপারে নিশ্চিন্ত থাকতে পারেন। পাশাপাশি মোদী এ কথাও জানিয়েছিলেন, রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানের জন্য ঢাকাকে দোরে দোরে ঘুরতে হবে না। বাংলাদেশের আশঙ্কার জায়গা অন্যত্র। ঢাকার সরকারি কর্তাদের বক্তব্য, এখনই কিছু হচ্ছে না ঠিকই, কিন্তু গোটা বিষয়টি নিয়ে বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে যে আবেগ-আশঙ্কা তৈরি হয়েছে, নেত্রী হিসেবে তাকে এড়িয়ে যাওয়ার উপায় নেই হাসিনার। বাংলাদেশের এক সরকারি কর্তার কথায়, ‘‘ওই বিলের মাধ্যমে যে বাঙালি মুসলিমদের একঘরে করার চেষ্টা হচ্ছে। তাঁরা যে পাকিস্তান কিংবা আফগানিস্তান থেকে আসেননি, সেটা বলাই বাহুল্য। তা হলে তাঁরা কোথায় যাবেন, সেই প্রশ্নকে অস্বীকার করা যায় না। বাংলাদেশের রাজনৈতিক ও সামাজিক স্তরে এ নিয়ে আশঙ্কা শুরু হয়ে গিয়েছে।’’
ঢাকার এক শীর্ষ কর্তার কথায়, ‘‘ভারতের বিদেশমন্ত্রী আন্তর্জাতিক স্তরে প্রধানমন্ত্রীর ভাবমূর্তি পরিচ্ছন্ন রাখার জন্য যা দরকার, করছেন। কিন্তু স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ আবার অন্য কথা বলছেন। আমরা জানি, ভারতের বিদেশমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর রাজনৈতিক কর্তৃত্বের মধ্যে বিস্তর ফারাক রয়েছে।’’ সূত্রের বক্তব্য, রোহিঙ্গা শরণার্থীদের কক্সবাজারে আশ্রয় দেওয়ার পর দেশের রাজনীতিতে যথেষ্ট সমালোচনার মুখে পড়েছেন হাসিনা। শরণার্থী সমস্যা তাঁদের কাছে গলার কাঁটা হয়ে রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে ভারতে নাগরিকত্ব থেকে বঞ্চিত হওয়া বাঙালি মুসলিমদের ঢল নামলে, তা ঢাকার কাছে প্রবল সমস্যা হয়ে উঠবে বলেই মনে করছে সে দেশের সরকার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy