(বাঁ দিকে) শেখ হাসিনা এবং মুহাম্মদ ইউনূস (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।
বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দেশে ফেরাতে উদ্যোগী সে দেশের অন্তর্বর্তী সরকার। কিছু আইনি প্রক্রিয়ার জন্য অপেক্ষা করছে মুহাম্মদ ইউনূসের প্রশাসন। রবিবার রাতে এ কথা জানিয়েছেন ইউনূসের প্রেস সচিব শফিকুল আলম। তিনি জানান, ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের বর্তমান প্রত্যপর্ণ চুক্তি অনুসারে কিছু আইনি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হয়। তার পরে প্রত্যর্পণের জন্য অনুরোধ জানানো যায়। বর্তমানে সেই আইনি প্রক্রিয়াগুলি সম্পন্ন করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশের তদারকি সরকারের প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব। এই প্রক্রিয়া শেষের পরেই আনুষ্ঠানিক ভাবে হাসিনাকে প্রত্যর্পণের জন্য ভারতের কাছে অনুরোধ জানাতে চাইছে ইউনূসের সরকার।
ঘটনাচক্রে, সোমবার রাতেই ব্রিটেনে এক ভার্চুয়াল সভায় বক্তৃতা করেছেন হাসিনা। লন্ডনে আওয়ামী লীগের সমর্থকদের উদ্দেশে ওই বক্তৃতা করেছেন তিনি। তাঁর বক্তৃতার দিনেই আবারও তাঁর প্রত্যর্পণ প্রসঙ্গে মুখ খুলল ইউনূসের প্রশাসন। আওয়ামী লীগের সমাজমাধ্যম পাতায় ওই বক্তৃতার অডিয়ো শেয়ার করা হয়েছে। সেখানে হাসিনা তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ নিয়ে মন্তব্য করেছেন। ইউনূসের প্রশাসনকে নিশানা করে তিনি বলেন, “(ওরা) বলছে হাসিনার বিচার করবে। কী বিচার করবে? আমি কী অন্যায় করেছি? আমার হাত দিয়ে কোনও খুন হয়নি। আমি মানুষের জীবন নিতে আসিনি।” তিনি আরও বলেন, “কেউ অবৈধ ভাবে ক্ষমতা দখল করলে, তার বিচার হবে। একজন জনপ্রতিনিধি অপর এক জনপ্রতিনিধির কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে পারে। আমি তো সেই সুযোগ পাইনি।” যদিও ওই অডিয়ো বার্তার সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন।
গত ৫ অগস্ট বাংলাদেশ ছাড়েন হাসিনা। তার পরে সাময়িক ভাবে আশ্রয় নেন ভারতে। প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ ছাড়ার পরে পর তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রুজু হয়েছে সে দেশে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা সাইদুর রহমানের খুনের ঘটনায় হাসিনা-সহ ১৪৩ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হয়েছে। হাসিনা বাংলাদেশ ছাড়ার পর থেকে সে দেশের বিভিন্ন থানায় অন্তত ২৩৩টি ফৌজদারি মামলা দায়ের হয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। এর মধ্যে ১৯৮টি ক্ষেত্রে খুনের অভিযোগ আনা হয়েছে। হাসিনা-সহ ১৪৩ জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানাও জারি করেছে বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনাল।
এর পর থেকেই হাসিনাকে বাংলাদেশে ফেরানোর অভিপ্রায় নিয়ে বিভিন্ন মন্তব্য করেন সে দেশের তদারকি সরকারের উপদেষ্টারা। গত মাসে বাংলাদেশ অন্তর্বর্তী সরকারের আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল জানান, ইন্টারপোলের মাধ্যমে গণহত্যায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ‘রেড কর্নার নোটিস’ জারির ভাবনাচিন্তা চলছে। যদিও অক্টোবরের শেষের দিকে এক আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ইউনূস জানিয়েছিলেন, আদালতের রায়ের আগে হাসিনাকে দেশে ফেরানোর বিষয়ে কোনও পদক্ষেপ করা হবে না। তবে সাম্প্রতিক পরিস্থিতিতে হাসিনার বিরুদ্ধে বিএনপি শিবির বার বার সরব হয়েছে।
ভারত-বাংলাদেশ টানাপড়েনের আবহে রবিবারই বিএনপির এক প্রতিনিধিদল ঢাকায় ভারতীয় দূতাবাসে একটি স্মারকলিপি জমা দিয়েছে। বাংলাদেশ ত্যাগের পর প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী হাসিনার ভারতে আশ্রয় নেওয়া যে বিএনপি পছন্দ করছে না, তা উল্লেখ রয়েছে স্মারকলিপিতে। এই পরিস্থিতিতে বিদেশসচিব পর্যায়ের দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে যোগ দিতে সোমবার সকালে ঢাকা গিয়েছেন ভারতের বিদেশসচিব বিক্রম মিস্রী। ওই বৈঠকে বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচারের অভিযোগ, চিন্ময়কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতারির প্রসঙ্গের পাশাপাশি হাসিনার প্রসঙ্গও উঠে আসতে পারে বলে অনুমান করা হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy