শেখ হাসিনা। —ফাইল চিত্র।
অবশেষে কট্টরপন্থী মৌলবাদী সংগঠন জামাতে ইসলামিকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করল বাংলাদেশ সরকার। নিষিদ্ধ করা হয়েছে তাদের শাখা সংগঠন ইসলামি ছাত্র শিবিরকেও, যাদের নেতৃত্বের সঙ্গে আল কায়দার সংশ্রব থাকার দাবি অতীতে করেছে গোয়েন্দা সংস্থাগুলি।
অর্ধশতাব্দীর বেশি সময় ধরে বাংলাদেশে রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলি আন্দোলন করে গিয়েছে জামাতে ইসলামিকে নিষিদ্ধ করার দাবিতে। আইনি লড়াইও হয়েছে। বাংলাদেশের সংবিধানকে সর্বোচ্চ হিসেবে স্বীকার না করার কারণে নির্বাচন কমিশন রাজনৈতিক দল হিসাবে জামাতে ইসলামির নিবন্ধন অবৈধ ঘোষণা করেছে ২০১৮-য়। অবশেষে সন্ত্রাস-বিরোধী আইনে পাকিস্তানি সেনাদের সহচর জামাতে ইসলামিকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করল শেখ হাসিনা সরকার।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক এ দিন বিকেলে নোটিস দিয়ে দুই সংগঠনকে নিষিদ্ধ ঘোষণার পরে একটি অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, “জামাত ও ছাত্র শিবিরকে এখন থেকে জঙ্গি সংগঠন হিসাবেই মোকাবিলা করা হবে। আমি নিশ্চিত, নিষিদ্ধ হওয়ার পরে এরা আত্মগোপনে যাবে এবং নাশকতার কাজ শুরু করবে।” প্রাণহানি ও নাশকতার তদন্তে তিনি রাষ্ট্রপুঞ্জের সাহায্য নিতে চান বলেও ঘোষণা করেন।
বাংলাদেশে সাম্প্রতিক কোটা-বিরোধী আন্দোলনকে ছিনতাই করে দেশজুড়ে নাশকতা এবং প্রাণহানির মতো পরিস্থিতি তৈরির জন্য জামাতে ইসলামি, ছাত্র শিবিরের বড় ভূমিকা সামনে এসেছে বলে গোয়েন্দারা দাবি করেছেন। তাঁদের দাবি, তিন মাস ধরে রাজশাহি, চট্টগ্রাম, ফেনি, বরিশাল, সিলেট, ফরিদপুর থেকে অন্তত পাঁচ হাজার ক্যাডারকে ঢাকায় আনা হয়েছিল। দাহ্য তেল, বিস্ফোরক এবং দেশি অস্ত্রশস্ত্র মজুত করা হয়েছিল। বাগমারা এলাকা থেকে প্রশিক্ষিত সাবেক জেএমবি জঙ্গিদেরও ঢাকায় আনা হয়েছিল। গোয়েন্দাদের দাবি, এই প্রস্তুতি থেকে বোঝা যাচ্ছে, কোটা আন্দোলন না হলেও নাশকতা করার পরিকল্পনা নিয়েছিল তারা।
এর পরেই সোমবার আওয়ামী লীগ নেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর ১৪ দলের জোট-শরিকদের নিয়ে বৈঠকে গোয়েন্দা রিপোর্টের পর্যালোচনা করেন। সেখানে শরিক ওয়ার্কার্স পার্টির নেতা রাশেদ খান মেনন বলেন, “এই কাজে আর দেরি করা উচিত হবে না।” জাসদ (জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল) নেতা হাসানুল হক ইনু বলেন, “অনেক আগেই এই কাজ করা উচিত ছিল। তা হলে আজ এই পরিস্থিতির উদ্ভব হত না।” সূত্রের খবর, শেখ হাসিনা বৈঠকে বলেন সরকার এত দিন রাজনৈতিক ভাবে জামাতের মোকাবিলার পথে চলেছে। এখন আর উপায় নেই।
বাংলাদেশের অসাম্প্রদায়িক সংগঠনগুলি সরকারের পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়ে বলেছে, অনেক আগেই এই কাজ করা উচিত ছিল। জামাতের শরিক বিএনপি এই পদক্ষেপকে অগণতান্ত্রিক এবং অসাংবিধানিক আখ্যা দিয়েছে। জামাতের আমির শফিকুর রহমান বিবৃতি দিয়ে সরকারের এই পদক্ষেপের নিন্দা করেছেন।
জামাতকে নিষিদ্ধ করার আর্জি জানিয়ে নিরন্তর আইনি লড়াই চালানো সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী তানিয়া আমির বলেন, “বহু আগে যে কাজ করা যেত, অজানা কারণে সরকার তা করেনি। এখান থেকে পরবর্তী কাজ শুরু হল।” কী সেই কাজ? বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রের লেখক আমিরুল ইসলামের কন্যা তানিয়ার কথায়, “সর্বত্র বাঙালি সংস্কৃতি প্রসারের কর্মসূচি নিতে হবে। পাঠ্যসূচিতে মৌলবাদীদের দাবি মেনে করা পরিবর্তন সংশোধন করতে হবে। তাদের উপরে নজরদারিও সমানে করে যেতে হবে, যাতে আর মাথা
তুলতে না পারে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy