এক অনুষ্ঠানে ‘ঈগলস অফ ডেথ মেটাল’ ব্যান্ডের সদস্যরা। ছবি: টুইটার।
১৩ নভেম্বর প্যারিসের শতাব্দী প্রাচীন থিয়েটার হল বাতাক্লঁতে জঙ্গি হামলার পর কেটে গিয়েছে নয় দিন। সে’দিনের সেই হামলায় মৃত্যু হয় ১৩০ জনের। তার মধ্যে বাতাক্লঁতেই প্রাণ হারান ৮৭ জন। সকলেই চিন্তায় ছিলেন জঙ্গি হামলায় ক্যালিফোর্নিয়ার রক ব্যান্ড ‘ঈগলস অফ ডেথ’ সদস্যদেরও কিছু হয়নি তো! তাঁদের আশ্বস্ত করে এক সদস্যের আত্মীয় জানান, সব সদস্যই সুস্থ আছে। হামলায় তাঁদের কিছু হয়নি। তবুও আশঙ্কা ছিল, কারণ মুখ খুলছিলেন না ব্যান্ডের কোনও সদস্য। দীর্ঘ নীরবতা ভেঙে মুখ খুললেন ব্যান্ডের দুই সদস্য জেস হিউগস এবং জোসুয়া হোম। সম্প্রতি সংবাদ সংস্থা ভাইসকে দেওয়া এক সাক্ষাত্কারে জেস এবং জোসুয়া তাঁদের সে’দিনের অভিজ্ঞতার কথা শোনান। তাঁরা বলেন, ‘ঈগলস-এর সুরের মুর্ছনায় মুগ্ধ তখন সকল দর্শক। হঠাত্ আলোর ঝলকানি। সঙ্গে তীব্র আওয়াজ। আওয়াজটি ড্রামের চিরপরিচিত আওয়াজ নয়। ঝটকাটা ভাঙল দর্শকদের আর্তনাদ এবং সিটের মধ্যেই ঢলে পড়তে দেখে। ঘাড় ঘোরাতেই নজরে এল কয়েকজন বন্দুকবাজ। প্রত্যেকেরই হাতে ধরা অত্যাধুনিক স্বয়ংক্রিয় রাইফেল। সামনে যাকে পাচ্ছে গুলিতে এঁফোড় ওঁফোড় করে দিচ্ছে তারা। বাচ্চা-বুড়ো কেউই বাদ নেই। ব্যাপারটা দেখে পা চলছিল না। ভাবছিলাম কোনও অ্যাকশন ছবির দৃশ্য দেখছি না কি! সম্বিত ফিরতেই পড়ি মড়ি করে দৌড়। নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে। কয়েক জনকে আমাদের ড্রেসিং রুমের মধ্যেও লুকোতে যেতে দেখলাম। আশা ছিল নিরাপদেই থাকবেন তাঁরা। পুলিশ এসে উদ্ধার করবেন আমাদের। জঙ্গিরা খোঁজ পাবে না কারোর। ভুল ছিলাম। ড্রেসিং রুমে আশ্রয় নিয়েও বন্দুকের নলকে এড়াতে পারেননি অনেকে। লুকিয়ে থাকা প্রায় প্রত্যেককে খুঁজে খুঁজে গুলি করে মারে জঙ্গিরা। শুধু প্রাণে বাঁচেন এক ব্যক্তি। চামড়ার জ্যাকেটের মধ্যে লুকিয়ে প্রাণে বাঁচেন তিনি।’
সে’দিনের নারকীয় হত্যালীলার বর্ণনা দিতে গিয়ে আবেগ চেপে রাখতে পারেননি হিউজস। তিনি বলেন, “অনেকে প্রিয়জনদের শেষ মুহূর্তেও ছেড়ে যাননি। তাই এক সঙ্গে এত জনের মৃত্যু হয় বাতাক্লঁতে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy