মেলানিয়া, ক্রিসের ক্ষতবিক্ষত নাক, মুখ। ছবি- ফেসবুকের সৌজন্যে।
প্রকাশ্যে চুমু না খাওয়ার জেরে দুই সমকামী মহিলাকে লন্ডনের বাসে বেধড়ক পেটাল দুষ্কৃতীরা। ঘুষিতে ঘুষিতে ক্ষতবিক্ষত করে দিল দুই মহিলার নাক, চোখ, মুখ। দুই সমকামী মহিলাকে নিয়ে বেশ কিছু ক্ষণ ধরে চলল রঙ্গ-রসিকতা, ব্যঙ্গ, বিদ্রূপ, টিকাটিপ্পনি। তাঁদের দিকে ছোড়া হল কয়েন। দুই মহিলাকে লক্ষ্য করে করা হল অশ্রাব্য গালিগালাজ।
গত সপ্তাহের ঘটনা। যা শুক্রবার ভাইরাল হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়, দুই নিগৃহীত মহিলার এক জনের করা ফেসবুক পোস্টের দৌলতে। পোস্ট করা হয়েছে দুই ক্ষতবিক্ষত মহিলার ছবিও। এখনও পর্যন্ত দুষ্কৃতীদের কাউকেই গ্রেফতার করতে পারেনি লন্ডন পুলিশ।
নিগৃহীত মহিলাদের এক জন মেলানিয়া গেমোনাট পরে বিবিসি রেডিওকে জানিয়েছেন, গত ৩০ মে গভীর রাতে বাসে চেপে তাঁরা যাচ্ছিলেন ক্যামডেন টাউনে। তাঁর সঙ্গীনী ক্রিসকে (পদবি জানাননি) নিয়ে ‘ডেট’ করতে। বড় বড় ক্লাব আর বার, বিয়ার পাব রয়েছে ক্যামডেন টাউনে। বাসের উপর তলায় (আপার ডেক) উঠে তাঁরা বসেছিলেন একেবারে সামনের সারির দু’টি আসনে, পাশাপাশি। সিটে বসে তাঁরা একে অন্যকে চুমু খাচ্ছিলেন, আবেগে। ওই সময়েই জনাচারেক যুবক বাসে ওঠে। ক্রিস, মেলানিয়াকে দেখে চলে আসে তাঁদের সামনে। তার পরেই দুই সমকামী মহিলাকে নিয়ে রঙ্গ, রসিকতা শুরু করে দেয় যুবকরা। শুরু হয় মেলানিয়া, ক্রিসকে নিয়ে ব্যঙ্গ, বিদ্রূপ, টিকাটিপ্পনি। চার যুবক মেলানিয়া, ক্রিসকে সকলের সামনে চুমু খেতে বলে। জড়িয়ে ধরতে বলে। বলে যুবকদেরও চুমু খেতে।
আরও পড়ুন- মোদীকে আলোচনার প্রস্তাব ইমরানের
আরও পড়ুন- শুল্ক-যুদ্ধের আবহ বিকল্পের ভাবনায় ভারত, চিন, রাশিয়া
ফেসবুক পোস্টে মেলানিয়া লিখেছেন, ‘‘আমি প্রথমে ওদের সঙ্গে মজা করে ব্যাপারটাকে হাল্কা করে দিতে চেয়েছিলাম। ভেবেছিলাম, খানিকটা হাসি, ঠাট্টা করে ওরা আমাদের সিটের সামনে থেকে চলে যাবে। ক্রিস তো অসুস্থ হয়ে পড়ার ভান করতে শুরু করল। কিন্তু তাতেও দেখলাম কিছু হল না। ওরা আমাদের নিয়ে ব্যঙ্গ, বিদ্রূপ চালিয়েই যেতে থাকল। আমাদের দিকে কয়েন ছুড়তে শুরু করল। দিতে শুরু করল অশ্রাব্য গালিগালাজ। নানা রকমের অঙ্গভঙ্গি করতে থাকল। তার পর আচমকা আমাদের একের পর এক ঘুষি মারতে শুরু করল ওরা। নাকে, মুখে, চোখে। আমার আর ক্রিসের নাক, মুখ থেকে রক্ত বেরতে শুরু করল। তার পর বাস থামতেই ওরা নেমে গেল।’’
পুলিশ জানাচ্ছে, ঘটনাটা ঘটেছে রাত আড়াইটে নাগাদ। দুই মহিলার নাকে, মুখে ঘুষি মেরে ক্ষতবিক্ষত করে তাঁদের মোবাইল ফোন ও হ্যান্ডব্যাগ নিয়ে উধাও হয়ে যায় দুষ্কৃতীরা। দুই মহিলাকে নিয়ে যাওয়া হয় হাসপাতালে। সেখানেই তাঁদের চিকিৎসা হয়। ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। কাউকে গ্রেফতার করা যায়নি। ওই বাসে যাঁরা ছিলেন, তাঁদের মধ্যে কয়েক জনকে ঘটনার সাক্ষ্য দিতে বলেছে পুলিশ।
ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছেন লন্ডনের মেয়র সাদিক খান। তাঁর কথায়, ‘‘এই ধরনের নারীবিদ্বেষী ঘটনা অত্যন্ত নিন্দনীয়। এলজিবিটিদের বিরুদ্ধে এমন বিদ্বেষমূলক অপরাধ (হেট ক্রাইম) কোনও ভাবেই বরদাস্ত করা হবে না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy