ভূমিকম্পে কার্যত ধ্বংসস্তূপের চেহারা নিয়েছে জাপানের একাংশ। ছবি: রয়টার্স।
৭.৬ মাত্রার ভূমিকম্প এবং সুনামির জেরে কার্যত লন্ডভন্ড মধ্য জাপান। মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত সে দেশ থেকে অন্তত ৪৮ জনের মৃত্যুর খবর মিলেছে। তবে ধ্বংসস্তূপ সরালে হতাহতের সংখ্যা ‘অসংখ্য’ হতে পারে বলে আশঙ্কাপ্রকাশ করেছেন খোদ সে দেশের প্রধানমন্ত্রী ফুমিয়ো কিশিদা। তিনি বলেন, “ভীষণ রকম ক্ষতি হয়েছে। অসংখ্য মানুষ হতাহত হয়েছেন। বহু বাড়ি ভেঙে পড়েছে।”
সে দেশের কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দফতরের তরফে জানানো হয়েছে, সোমবার দুপুর থেকে মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত মৃদু এবং মাঝারি মাত্রার কম্পনে ১৫৫ বার কেঁপে উঠেছে জাপান। এগুলির মধ্যে রিখটার স্কেলে কম্পনের সর্বোচ্চ যে মাত্রা ধরা পড়েছে, তা হল ৭.৬। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ কম্পনের মাত্রা ৬। অন্য কম্পনগুলির অধিকাংশেরই মাত্রা ৩ বা তারও কম। তবে এগুলি কম্পন বা ভূকম্প পরবর্তী কম্পন (আফটারশক), তা নিয়ে নানা মত রয়েছে ভূবিজ্ঞানীদের মধ্যেই।
আমেরিকার ভূতত্ত্ব সর্বেক্ষণের তরফে জানানো হয়েছে, সোমবার দুপুরে জাপানের মূল ভূমিকম্পটির কেন্দ্র ছিল হনসু দ্বীপের ইশিকাওয়া। যার মাত্রা ছিল ৭.৫। সোমবার দুপুর ১টা নাগাদ এই কম্পনেই প্রথম কেঁপে ওঠে জাপান। ভূমিকম্পের পরেই জাপানের বেশ কয়েকটি উপকূল এলাকায় সুনামি সতর্কতা জারি হয়। আশঙ্কাকে সত্যি করে সে দেশের পশ্চিম উপকূল সংলগ্ন একাধিক শহরে ফুঁসে ওঠে সমুদ্র। কোথাও কোথাও ঢেউয়ের উচ্চতা চার ফুট পর্যন্ত ওঠে।
ভূমিকম্পের পর এখনও পর্যন্ত জাপানের প্রায় ৩৩ হাজার বাড়িতে বিদ্যুৎ সংযোগ ফেরানো যায়নি। ভাঙা রাস্তা ধরে এগোতে গিয়ে বার বার বাধার মুখে পড়তে হচ্ছে উদ্ধারকারী দল এবং সেনাকেও। জাপানের প্রতিরক্ষা বিভাগ জানিয়েছে, অন্তত এক হাজার মানুষকে সেনা শিবিরে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তবে এখনও পর্যন্ত দেশের উত্তর প্রান্তের নোটো উপদ্বীপে পৌঁছতে পারেনি উদ্ধারকারী দল। মঙ্গলবার ভোরে জরুরি বৈঠকে বসে দ্রুত উদ্ধারকাজ শেষ করার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী কিশিদা। বলেছেন, “সময়ের বিরুদ্ধে আমাদের লড়াই করতে হবে।” উদ্ধারকাজ শেষ হলে বেশ কয়েক জনকে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করা যাবে বলে মনে করা হচ্ছে।
শহরগুলির মধ্যে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ এবং হতাহতের নিরিখে এগিয়ে রয়েছে ওয়াজিমা। এমনিতে ভূকম্পপ্রবণ জাপানে শেষ কবে ভূমিকম্পে এত ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, তা মনে করতে পারছেন না অনেকেই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy