পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ় শরিফ। —ফাইল চিত্র।
গত কয়েক বছর ধরেই তীব্র আর্থিক সঙ্কটে ভুগছে পাকিস্তান। আন্তর্জাতিক অর্থ ভান্ডারের মতো প্রতিষ্ঠান থেকে বিপুল অঙ্কের ঋণ নেওয়া পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ় শরিফ গত কালই ইসলামবাদে একটি বৈঠকের পরে সরকারের আওতায় থাকা অধিকাংশ সংস্থা বিক্রি করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। আর এর মধ্যেই ফাঁস হয়েছে ‘দুবাই আনলকড’ নামে একটি তদন্ত রিপোর্ট। এক প্রথম সারির পাক দৈনিক তাদের রিপোর্টে দাবি করেছে, সংযুক্ত আরব আমিরশাহির দুবাই শহরে একাধিক পাকিস্তানি প্রভাবশালীদের গোপনে কোটি কোটি ডলারের সম্পত্তি রয়েছে। সেই তালিকায় রয়েছেন রাজনৈতিক নেতা থেকে শুরু করে পাকিস্তানের বহু শীর্ষ স্থানীয় আমলা, সেনা অফিসার, বিজ্ঞানী, কূটনৈতিক দূত এবং ব্যাঙ্কিং ক্ষেত্রের ব্যক্তিরা। অভিযোগ, মূলত আয়কর ফাঁকি দেওয়ার জন্য নিজেদের সন্তান বা স্ত্রীদের নামে ওই বিপুল অঙ্কের সম্পত্তি (মূলত বাংলোর মতো বিলাসবহুল বসতবাড়ি) কিনে রেখেছেন বহু প্রভাবশালী পাকিস্তানি।
‘দুবাই আনলকড’ হল দুবাই শহরের রিয়্যাল এস্টেট সম্পত্তি নিয়ে করা একটি তদন্ত রিপোর্ট। সবার প্রথমে আমেরিকার ‘দ্য সেন্টার ফর অ্যাডভান্সড ডিফেন্স স্টাডিজ়’ নামে একটি অলাভজনক সংস্থার হাতে এই রিপোর্টটি আসে। সেখান থেকে সেটির নাগাল পায় ওই প্রথম সারির পাক সংবাদমাধ্যম। ওই রিপোর্টে বলা হয়েছে, দুবাইয়ে বর্তমানে ১৭ হাজার পাকিস্তানি নাগরিকের ২৩ হাজার আবাসন বা বাসভবন সংক্রান্ত সম্পত্তি রয়েছে। ২০২২ সালের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গোটা দুবাইয়ে মোট ১৭০০ কোটি ডলারের রিয়্যাল এস্টেট সম্পত্তি রয়েছে। যার মধ্যে প্রায় ৩০ হাজার ভিলা বা বিলাসবহুল বাংলোর মালিক বিদেশি। মূলত এমিরেট্স হিলস, দুবাই মেরিনা, পাম জুমেইরা-র মতো দুবাইয়ের অভিজাত এলাকাতেই রয়েছে এই সব আবাসন বা বাসভবন। তবে পাক সংবাদমাধ্যমের রিপোর্টে পাকিস্তানি ব্যক্তিত্বদের নাম নিয়ে হইচই শুরু হলেও, ‘দুবাই আনলকড’-এর রিপোর্ট বলছে, ওই শহরে সবচেয়ে বেশি রিয়্যাল এস্টেট সম্পত্তি রয়েছে ভারতীয়দেরই।
পাক সংবাদমাধ্যমটির দাবি, ‘দুবাই আনলকড’-এর রিপোর্টে রয়েছে পাক নেতা-মন্ত্রী ও প্রভাবশালী ব্যক্তিদের স্ত্রী-সন্তান-পরিজনের নাম। পাক প্রেসিডেন্ট আসিফ আলি জ়ারদারির দুই সন্তান, প্রাক্তন পাক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ় শরিফের পুত্র হুসেন নওয়াজ় শরিফ, অভ্যন্তরীণ মন্ত্রী মোহসিন নকভির স্ত্রী, সেনেটর ফয়জ়ল ভাওদা, প্রাক্তন পাক প্রেসিডেন্ট জেনারেল পারভেজ় মুশারফ, প্রাক্তন পাক প্রধানমন্ত্রী শওকত আজ়িজ়— নামগুলি উল্লেখযোগ্য। অভিযোগ, অভ্যন্তরীণ মন্ত্রী মোহসিন নকভি সর্বশেষ নির্বাচনের আগে সেনেটে যে মনোয়নয়ন পত্র জমা দিয়েছিলেন, তাতে তাঁর স্ত্রীর নামে যে দুবাইয়ে বিপুল পরিমাণ সম্পত্তি রয়েছে, তার উল্লেখ ছিল না।
বিষয়টি প্রকাশ্যে আসায় অস্বস্তিতে জ়ারদারি পরিবারও। প্রেসিডেন্ট-পুত্র বিলাবল ভুট্টো জ়ারদারির মুখপাত্র জ়ুলফিকার আলি বদর জানান, বিলাবল এবং আসিফা ভুট্টো জ়ারদারির নামে দেশে-বিদেশে থাকা যাবতীয় সম্পত্তির হিসাব জাতীয় নির্বাচন কমিশনকে জানানো রয়েছে। পাকিস্তানের জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান মালিক আমজ়াদ জ়ুবের তিওয়ানা রিপোর্ট ফাঁস করা ওই পাক দৈনিককেই দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জানান, আয়কর ফাঁকির যে অভিযোগ ওই দৈনিক তুলেছে, তা সত্যি প্রমাণিত হলে, অভিযুক্ত ব্যক্তিদের থেকে সম পরিমাণ আয়কর আদায় করা হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy