Advertisement
২৬ ডিসেম্বর ২০২৪
Taliban regime

Afghanistan Artist: বিষয়বস্তু আফগান নারীর আধুনিক রূপ, তালিবানের ভয়ে ছবি পুঁতে ফেলছেন আফগান শিল্পীরা

গত কুড়ি বছর ধরে পাশ্চাত্য শাসনে অভ্যস্ত আফগান শিল্প ও সংস্কৃতি আচমকা থমকে গিয়েছে তালিবানি অত্যাচারের ভয়ে।

ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

সংবাদ সংস্থা
কাবুল শেষ আপডেট: ০২ অক্টোবর ২০২১ ০৭:১৩
Share: Save:

তাঁদের জন্য এখনও পর্যন্ত কোনও ফরমান জারি করেননি তালিবান নেতৃত্ব। কিন্তু কুড়ি বছর আগের সেই ভয়াবহ স্মৃতি এখনও তাড়া করে বেড়ায় আফগান চিত্রশিল্পীদের। তালিবান যোদ্ধারা কাবুলের দোরগোড়ায় পৌঁছনোর আগেই তাই নিজেদের আঁকা কমপক্ষে ১৫টি আধুনিক ছবি মাটির তলায় পুঁতে দিয়েছেন বেশ কয়েক জন আফগান শিল্পী। সব ক’টি ছবিরই বিষয়বস্তু ছিল আফগান নারীদের আধুনিক রূপ। একটি আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম সূত্রে সম্প্রতি এ খবর জানানো হয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বেশ কয়েক জন আফগান শিল্পী এই খবরের সত্যতাও স্বীকার করে নিয়েছেন। শুধু ছবিই নয়, আফগান শিল্পীরা নষ্ট করে দিচ্ছেন নিজেদের অনেক ভাস্কর্যও।

একটি প্রথম সারির আমেরিকান দৈনিক আবার জানাচ্ছে, এক আফগান মহিলা চিত্র পরিচালক দেশ ছেড়ে পালানোর আগে কুড়িটিরও বেশি ফিল্ম পেন ড্রাইভে একটি গোপন স্থানে লুকিয়ে রেখে গিয়েছেন। নতুন তালিবানি শাসনে বিদেশি বইও বিক্রি করতে ভয় পাচ্ছেন দোকানদারেরা। তালিবানি অত্যাচারের ভয়ে স্থানীয় ভাষায় অনুবাদ করা বাইবেল লুকিয়ে রাখতে বাধ্য হচ্ছেন কাবুলের বিক্রেতারা। তাঁরা পরিষ্কার জানাচ্ছেন, এই সব বই বিক্রি হচ্ছে জানতে পারলে তাঁদের মেরে ফেলতে পারে তালিবান।

গত কুড়ি বছর ধরে পাশ্চাত্য শাসনে অভ্যস্ত আফগান শিল্প ও সংস্কৃতি আচমকা থমকে গিয়েছে তালিবানি অত্যাচারের ভয়ে। কাবুলের সব ক’টি আর্ট গ্যালারি বন্ধ হয়ে গিয়েছে। আফগান ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিও বন্ধ। বাদ্যযন্ত্রের দোকানগুলি ঝাঁপ ফেলে দিয়েছে ভয়ে। বিয়ে বাড়িতে ব্যান্ড বাজানোও বন্ধ এখন। সাহরা করিমি নামে এক ফিল্ম পরিচালক বলেছেন, ‘‘আমরা স্বাধীন ভাবে ভাবনা-চিন্তার মাধ্যমে কাজ করতে শিখেছি। এই শাসনের আমলে যা ভাবাই অসম্ভব।’’

সরকারি ভাবে শিল্প ও সংস্কৃতি মন্ত্রক কিন্তু এখনও পর্যন্ত কোনও কিছুতেই নিষেধাজ্ঞা জারি করেনি সে ভাবে। তবে বিষয়টি নিয়ে ভাবনা-চিন্তা চলছে বলে জানিয়েছেন তালিবানের উপ মুখপাত্র বিলাল করিমি। তিনি আরও জানান, শরিয়ত অনুযায়ী পরিকাঠামো তৈরি হবে।

কাবুলের ফাইন আর্টস ইনস্টিটিউটের ডিরেক্টর সফিউল্লা হাবিবি বললেন, ‘‘তালিবান মুখে কিছু না বললেও আফগান শিল্পীরা সব কিছু ধ্বংস করে ফেলছেন। আসলে আগের শাসনের তিক্ত স্মৃতি তাঁরা কেউই ভোলেননি। তাঁরা জানেন, এই সব আধুনিক পাশ্চাত্য শিল্প তালিবানের চোখে পড়লেই তাঁদের শাসকের রোষে পড়তে হবে।’’

আফগানিস্তানের মানুষ এই পরিস্থিতিতে দেশ ছেড়ে পালাতে গেলেও তালিবান তাঁদের কার্যত হুমকির সুরে বলছে, ‘এই দেশ তোমাদের, তোমরা এখান থেকে পালাতে পারবে না’। স্পিন বোল্দাক এলাকায় পাক সীমান্ত থেকে মাত্র ১০০ মিটার দূরে গত কয়েক দিন ধরে আশ্রয় নিয়েছেন জ়াকারিউল্লা। জানালেন, দেশে কোনও কাজ নেই। পরিবারের মুখে খাবার জোগাতে পারছেন না। পড়শি দেশ পাকিস্তানে কাজের খোঁজে যেতে চান। কিন্তু তাঁদের রাস্তা আটাকাচ্ছেন তালিবান প্রহরীরা। সীমান্তে টহলরত এমনই এক তালিবান জানালেন, বৈধ কাগজ না থাকায় পাক প্রশাসনই এই সব শরণার্থীদের তাদের দেশে ঢুকতে দিচ্ছে না। তবে দেশ-বিদেশের সংবাদমাধ্যমগুলো জানাচ্ছে, তালিবানের চোখ রাঙানিতেই দেশ ছাড়তে ভয় পাচ্ছেন অভুক্ত, দরিদ্র আফগানরা।

অন্য বিষয়গুলি:

Taliban regime Afghanistan Crisis Artists
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy