প্রতীকী ছবি।
আমাদের বাঙালির বারো মাসে তেরো পার্বণ, তার সঙ্গে জুড়ে থাকে খাওয়া-দাওয়া আর আড্ডা। আর দুর্গাপুজো এমনই একটি অনুষ্ঠান, যা বাঙালির জীবনে শ্বাস-প্রশ্বাসের মতো জড়িয়ে থাকে। আজ থেকে দশ বছর আগে যখন দুবাই পাড়ি দিয়েছিলাম, তখন ভেবেছিলাম দুর্গাপুজোর আনন্দ উপভোগ করা হয়তো এখন আর সম্ভব হবে না। এখানে এসে যখন বুঝলাম যে, আমাদের পরবর্তী প্রজন্ম হয়তো বাঙালি সংস্কৃতি থেকে অনেকটাই দূরে চলে যাচ্ছে, তখন কিছু সমমনস্ক পরিবার একত্রিত হয়ে একটি সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের স্থাপন করলাম, নাম দিলাম ‘ম্যাডক্স দুবাই’। কলকাতার ম্যাডক্স স্কোয়ারের পুজোর চারপাশেই বড় হয়েছি আমরা। সকালে অঞ্জলি, সন্ধেবেলা মাঠে বসে আড্ডা আর স্টলে গিয়ে খাওয়া-দাওয়া যেন ছিল দুর্গাপুজোর পরিভাষা। সেই স্মৃতিকে ধরে রাখতেই এই ‘ম্যাডক্স দুবাই ক্লাব’।
আমাদের দুর্গাপুজো এ বার চার বছরে পা দিতে চলেছে। দুবাইয়ে কোভিডের সব রকম নিয়ম মেনেই শুরু হয়ে গিয়েছে প্রস্তুতি। ‘ম্যাডক্স দুবাই’য়ের পুজো শুরু হয় পঞ্চমীর ‘আনন্দমেলা’ দিয়ে। ক্লাবের মহিলারা একত্রিত হয়ে ফুড স্টলের আয়োজন করেন। এই স্টলে পাওয়া যায় কিছু নির্ভেজাল বাঙালি রান্না, যা সচরাচর বিদেশে বাঙালি বাড়িতে রান্না হয় না। ষষ্ঠীর সকাল থেকে শুরু হয় প্রতিমা প্রতিষ্ঠা ও হল সাজানোর কাজ। এ বার আমাদের থিম দুবাইয়ের ‘মির্যাকল গার্ডেন’। ক্লাব মেম্বারদের হাতে বানানো কাগজের রঙিন ফুল, পাতা দিয়ে সুসজ্জিত হবে মণ্ডপ।
আমাদের পুজো হয় কলকাতার সময় মেনেই। এমন কি, ঠাকুরমশাইও আসেন বাঁকুড়া থেকে। পুজোর চার দিনের বিশেষ আকর্ষণ হল সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। ক্লাবে ছোটরা ও বড়রা এখন খুবই ব্যস্ত রিহার্সাল নিয়ে। আমাদের পুজো একটি হোটেলে হওয়া সত্ত্বেও খাবার হয় পুরো ১৬ আনা বাঙালি। হোটেলের শেফকে বাঙালি রান্নার জন্য পাঁচফোড়ন ও মশলার সঠিক ব্যবহার আমাদের ক্লাবের মহিলারাই শিখিয়ে দেন। এই সমস্ত আয়োজনেরউদ্দেশ্য শুথু একত্রিত হয়ে আনন্দ উপভোগ করাই নয়, এর সঙ্গে আমাদের মাটির সংস্কৃতি ও ভাবধারা সম্বন্ধে পরবর্তী প্রজন্মকে জানানো এবং তাদের জন্য এক সুস্থ ও আনন্দময় পরিবেশে গড়ে তোলা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy