বিতর্কিত নাগোরনো-কারাবাখ অঞ্চলের দখলদারি নিয়ে আজারবাইজান এবং আর্মেনিয়ার বিরোধী ফের গড়াল রক্তক্ষয়ী সীমান্ত সংঘর্ষে। মঙ্গলবার ভোররাতে আর্মেনিয়ার ছ’টি সেনাঘাঁটিতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে আজারবাইজান। আর্মেনিয়ার প্রধানমন্ত্রী নিকোল পাশিনয়ান জানিয়েছেন, সে দেশের ৫০ জন সেনা আজারবাইজানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় নিহত হয়েছেন।
আর্মেনিয়া সেনা আজারবাইজানের আগ্রাসনের ‘সমুচিত জবাব’ দিতে তৈরি বলেও জানিয়েছেন নিকোল। বস্তুত, আজারবাইজানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পরে সীমান্তে প্রত্যাঘাতের চেষ্টাও করেছে আমের্নিয়ার ফৌজ। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের আবহেই সাবেক সোভিয়েত প্রজাতন্ত্রের আরও দুই দেশের দ্বন্দ্ব এ বার পুরোদস্তুর যুদ্ধের রূপ নিতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। ইতিমধ্যেই মুসলিম রাষ্ট্র আজারবাইজানের পাশে দাঁড়ানোর ইঙ্গিত দিয়েছে তুরস্ক।
Unlike Armenian AFs #Azerbaijan Army never targets civilian population and infrastructure.
— Ali Alizada
As it was during 44 days of Patriotic War, the targeting of civilians and densely populated areas is a methodology used by #Armenia’n Armed Forces.#StopArmenianLies pic.twitter.com/W7zCWlAenB(@Ali_F_Alizada) September 13, 2022
বিতর্কিত নাগোরনো-কারাবাখ অঞ্চলের দখল নিয়ে ২০২০ সালে দু’দেশের যুদ্ধে প্রায় সাড়ে ছ’হাজার মানুষ নিহত হয়েছিলেন। সে সময় মস্কোর মধ্যস্থতায় সংঘর্ষ বিরতি হয়েছিল। কিন্তু এ বার ইউক্রেন সমস্যায় ব্যতিব্যস্ত ভ্লাদিমির পুতিনের পক্ষে সেই ভূমিকা নেওয়া সম্ভব হয় বলেই কূটনীতি বিশেষজ্ঞদের একাংশ মনে করছেন। যদিও নিকোল মঙ্গলবার বলেন, ‘‘আমরা আশাবাদী, এ বারও রাশিয়া মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা নেবে।’’

আজারবাইজান সেনার ক্ষেপণাস্ত্র হামলা আর্মেনিয়ায়। ছবি: টুইটার থেকে নেওয়া।
৪,৪০০ বর্গকিলোমিটারের নাগোরনো-কারাবাখের অধিকার নিয়ে আর্মেনিয়া-আজাবাইজান মতবিরোধের সূচনা ১৯৮৮ সালে। ১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর সদ্যস্বাধীন দুই দেশের মতবিরোধ গড়ায় সামরিক সঙ্ঘাতে। সোভিয়েত জমানায় আজারবাইজানের অন্তর্ভুক্ত এই অঞ্চলের প্রায় দেড় লক্ষ বাসিন্দার অধিকাংশই আর্মেনীয় খ্রিস্টান। তাঁরা আজারবাইজানের অধীনে থাকতে নারাজ।
আরও পড়ুন:
১৯৯৪ সালের লড়াইয়ের পর থেকে তা আর্মেনিয়ার মদতে পুষ্ট মিলিশিয়া গোষ্ঠী ‘আর্টসাক ডিফেন্স আর্মি’ দখলে ছিল। ২০২০ সালের সেপ্টেম্বরে ওই অঞ্চল দখল করতে অভিযান শুরু করেছিল আজারবাইজান ফৌজ। প্রাথমিক ভাবে তাদের সঙ্গে সেখানকার সংখ্যাগরিষ্ঠ আর্মেনীয় বাসিন্দাদের মিলিশিয়া বাহিনী ‘আর্টসাক ডিফেন্স আর্মি’র সংঘর্ষ বাধে। এর পর যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে আর্মেনিয়া ফৌজও। কিন্তু দেড় মাসের যুদ্ধে নাগোরনো-কারাবাখের বিস্তীর্ণ অংশ দখল করে নিয়েছিল আজারবাইজান সেনা। সামরিক পর্যবেক্ষকদের একাংশ মনে করছেন, এ বার তুরস্কের মদতে পুরো এলাকা দখল করতে সক্রিয় তারা।