স্মরণ: আউশভিৎস-বার্কেনাউয়ে আঙ্গেলা ম্যার্কেল। শুক্রবার। ছবি: এএফপি
গত চোদ্দো বছর ধরে তিনি জার্মানির চ্যান্সেলর। এই প্রথম ‘আউশভিৎস-বার্কেনাউ মেমোরিয়াল’-এ পা রাখলেন আঙ্গেলা ম্যার্কেল। হিটলারের নাৎসি কনসেনট্রেশন ক্যাম্প সংরক্ষণের জন্য আজ ৬ কোটি ইউরো (৪৭৩ কোটি টাকা) সরকারি অর্থসাহায্য ঘোষণা করলেন তিনি।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালীন হলোকস্টের সময়ে পোল্যান্ডের অশচিয়ামচিমে তৈরি করা হয়েছিল এই জার্মান নাৎসি ক্যাম্প। ‘আউশভিৎস-বার্কেনাউ কনসেনট্রেশন অ্যান্ড এক্সটারমিনেশন’ ক্যাম্প এখন প্রদর্শনীশালা। কোনও কোনও ক্যাম্প শুধুই কনসেনট্রেশন ক্যাম্প ছিল। মাত্রাতিরিক্ত খাটানো, খেতে না দিয়ে মারা হত ইহুদি বন্দিদের। এক্সটারমিনেশন ক্যাম্পগুলোয় বন্দিদের এক দিনও বাঁচিয়ে রাখা হত না। মূলত গ্যাস চেম্বার বা গ্যাস ভ্যানে ঢুকিয়ে মেরে দেওয়া হত। আউশভিৎসে দু’টি ক্যাম্পই ছিল। নাৎজ়ি অধিকৃত পোল্যান্ডে ১০ লক্ষেরও বেশি মানুষকে খুন করা হয়েছিল। মিউজ়িয়ামের ডিরেক্টর পিয়ৎর সিভিয়িসকি বলেন, ‘‘আউশভিৎস এখন প্রদর্শনীশালা হয়ে গেলেও বিশ্বের সব চেয়ে বড় কবরস্থান... বর্তমান ও ভবিষ্যতের চাবিকাঠি।’’ হলোকস্টে ৩০ লক্ষেরও বেশি ইহুদিকে খুন করা হয়েছিল।
‘আউশভিৎস-বার্কেনাউ ফাউন্ডেশন’-এর দশম প্রতিষ্ঠা দিবস উপলক্ষে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল ম্যার্কেলকে। সেখানেই তিনি অর্থসাহায্য ঘোষণা করেন। অর্ধেক অর্থসাহায্য দেবে জার্মানির ফেডারেল সরকার। বাকি অর্ধেক সাহায্য করবে আঞ্চলিক সরকার। আউশভিৎস-বার্কেনাউ ক্যাম্পে এই প্রথম গেলেও অন্য কনসেনট্রেশন ক্যাম্পে গিয়েছেন ম্যার্কেল। হলোকস্ট থেকে বেঁচে ফেরা ইহুদিদের সঙ্গে দেখাও করেছেন।
ওই অর্থ দিয়ে বার্কেনাউ ক্যাম্পে ৩০টি ইটের তৈরি ব্যারাক, পুরনো রান্নাঘর, শৌচাগার সারানো হবে। সিভিয়িসকি বলেন, ‘‘বাড়িগুলো মজবুত করে তৈরি করা হয়নি। দীর্ঘদিন এই বাড়ি দাঁড়িয়ে থাকবে, এমন পরিকল্পনা তো ছিল না। বার্ষিক ৪৬ লক্ষ ডলার থেকে ৫১ লক্ষ ডলার প্রয়োজন সংরক্ষণের জন্য।’’
সিভিয়িসকি আরও বলেন, ‘‘ক্যাম্পটিকে সংরক্ষণের চেষ্টার পিছনে কোনও দেশের কুখ্যাত ইতিহাসকে মনে করিয়ে দেওয়ার উদ্দেশ্য নেই। সাহায্যের এই অর্থ ভবিষ্যতের জন্য ব্যবহার করা হবে। আগামী প্রজন্ম, তাদের জানার জন্য, পড়াশোনার জন্য সংরক্ষণ করা হচ্ছে।’’ জানিয়েছেন, দশ বছর আগে ক্যাম্পটি সংরক্ষণের জন্য তহবিল গঠন করা হয়েছিল। কিন্তু প্রয়োজনীয় অর্থ ওঠেনি। বছর দুয়েক আগে একাধিক দেশের কাছে সাহায্য চান সিভিয়িসকি। জার্মানিই প্রথম এগিয়ে এল। তবে এর আগে আমেরিকা ও পোলান্ড সরকার নিজে বড় অঙ্কের অর্থসাহায্য করেছিল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy