মাটি থেকে ১০ হাজার ফুট উচ্চতায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেন চালক। পাক খেতে খেতে নীচে নেমে আসতে শুরু করে বিমান। বেগতিক বুঝে ন’হাজার ফুট উচ্চতায় পৌঁছলে চালক বিমান খালি করার নির্দেশ দেন। পাঁচ জন নিরাপদে প্যারাশুটে নীচে নেমে আসতে পেরেছিলেন। ঠিকমতো অবতরণ করতে না পারায় এক জনের মৃত্যু হয়েছিল। বাকি দু’জন দু’হাজার ফুট উচ্চতায় বিমান বিস্ফোরণে মারা যান।
এই দুর্ঘটনা নাড়িয়ে দিয়েছিল আমেরিকাকে। ওই বিমানে থাকা দু’টি পরমাণু বোমা নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছিল গোটা বিশ্ব। হিরোশিমায় ধ্বংসলীলা চালিয়েছিল যে পরমাণু বোমা, তার চেয়ে ২৫০ গুণ বেশি শক্তিশালী ছিল এই দু’টি বোমা। এতটাই শক্তিশালী ছিল যে অন্তত ১৪ কিলোমিটার ব্যাস জুড়ে এলাকা নিমেষে মরুভূমিতে পরিণত করে দেওয়ার ক্ষমতা রাখত। ওই অংশে একটিও প্রাণ খুঁজে পাওয়া যেত না। ধ্বংসের প্রভাব পড়ত তার পরেও।
ঘণ্টায় প্রায় হাজার কিমি গতিবেগে নীচে নেমে এসেছিল ওই পরমাণু বোমাটি। গোল্ডসবোরোর ভেজা মাটিতে প্রায় ২০ ফুট গভীরে পুঁতে গিয়েছিল। বোমাটির অর্ধেকেরও বেশি সক্রিয় হয়ে গিয়েছিল তখন। খুব সাবধানে বোমার ভিতর থেকে বিস্ফোরক বার করে নিয়ে এনেছিলেন বোমা বিশেষজ্ঞরা। কিন্তু ভিতরের বেশির ভাগ ইউরেনিয়াম এবং প্লুটোনিয়াম যত্র তত্র ছড়িয়ে যাওয়ায় সেগুলি সবটা বার করে আনা সম্ভব হয়নি। তার উপর জায়গাটি জলে পরিপূর্ণ থাকায় কাজ করতে সমস্যায় পড়তে হচ্ছিল।
আমেরিকার স্যান্ডিয়া ন্যাশনাল ল্যাবরেটরিজের সুপারভাইজার পার্কার এফ জোনস পরবর্তীকালে ওই এলাকা পরিদর্শন করে রিপোর্ট দিয়েছিলেন, “আমেরিকা এবং বড় বিপর্যয়ের মাঝে দাঁড়িয়েছিল একটি লো-ভোল্টেজ সুইচ।” তাঁর পর্যবেক্ষণ ছিল, বিমান দুর্ঘটনার সময় যদি কোনও ভাবে বোমাটির আর্ম লাইনে শর্ট সার্কিট হয়ে যেত তা হলে বিপর্যয় রোখা যেত না।
পরবর্তীকালে এই এলাকায় চাষাবাদের অনুমতি মিলেছে প্রশাসনের তরফে। কিন্তু এখনও সেখানে ঘর-বাড়ি তৈরির অনুমতি দেওয়া হয়নি। ২০১২ সালে উত্তর ক্যারোলিনার প্রশাসন এই এলাকাকে ঐতিহাসিক স্থান হিসাবে চিহ্নিত করে। এই এলাকা থেকে প্রায় পাঁচ কিলোমিটার দূরে ঘটনার সংক্ষিপ্ত বর্ণনা দিয়ে ‘নিউক্লিয়ার মিসহ্যাপ’ নামেএকটি বোর্ড লাগিয়ে দেয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy