ভারতের পরে এ বার উদ্বেগ প্রকাশ করল আমেরিকাও। ছবি: সংগৃহীত।
বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতনের ঘটনা বাড়ায় ভারতের পরে এ বার উদ্বেগ প্রকাশ করল আমেরিকাও। এর আগে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রার্থী হিসেবে ডোনাল্ড ট্রাম্প দীপাবলির শুভেচ্ছাবার্তায় ইউনূস সরকারের আমলে ‘সংখ্যালঘু হিন্দু, বৌদ্ধ ও খ্রিস্টানদের উপরে নির্যাতন’-এর নিন্দা করে বাংলাদেশের পরিস্থিতিকে আমেরিকার বাইডেন সরকারের ব্যর্থতা বলে মন্তব্য করেছিলেন। এর পরে ট্রাম্প নির্বাচনে জয়ী হয়েছেন। আগামী ২০ জানুয়ারি তিনি ক্ষমতাসীন হওয়ার পরে আমেরিকার বাংলাদেশ নীতি বদলাতে পারে বলে কূটনীতিকদের ধারণা। কিন্তু তার আগেই শুক্রবার আমেরিকার বিদেশ মন্ত্রকের সাংবাদিক বৈঠকে উপস্থিত সে দেশের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের স্ট্র্যাটেজিক কমিউনিকেশন কোঅর্ডিনেটর জন কার্বি জানান, “(বাংলাদেশের সংখ্যালঘু পরিস্থিতি) আমরা খুব, খুব নিবিড় ভাবে পর্যবেক্ষণ করছি। আরও নিবিড় ভাবে পর্যবেক্ষণ করছেন প্রেসিডেন্ট বাইডেন।” তাঁর কথায়, “আগের প্রধানমন্ত্রী ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পরে বাংলাদেশে নিরাপত্তা পরিস্থিতি সঙ্কটজনক হয়। চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও নিরাপত্তা বাহিনীগুলোর দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য আমরা অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে কাজ করছি।”
মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে আলোচনায় বাইডেন এ বিষয়ে তাঁর উদ্বেগের কথা জানিয়েছেন কি না, এই প্রশ্নের উত্তরে কার্বি বলেন, “বাংলাদেশি নেতাদের সঙ্গে আমাদের আলোচনার সময়ে আমরা স্পষ্ট করে বলেছি যে ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘুদের সুরক্ষার বিষয়টি অত্যন্ত জরুরি।” কার্বি জানিয়েছেন, অন্তর্বর্তী সরকারের নেতারা বার বার জাতধর্ম নির্বিশেষে সব বাংলাদেশির নিরাপত্তা নিশ্চিত করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
ইউনূস সরকারের মুখপাত্রেরা অবশ্য তাঁদের আমলে সংখ্যালঘু নিপীড়নের ঘটনাগুলি অস্বীকার করে ‘ভারতের অপপ্রচার’ বলে বর্ণনা করছেন। ইউনূস বা তাঁর প্রচার সচিবের যুক্তি— “ধর্মীয় কারণে নয়, সংখ্যালঘুদের উপরে রাজনৈতিক কারণে হামলা হচ্ছে। এরা আওয়ামী লীগের সমর্থক বলে আক্রমণের শিকার হচ্ছে।” সংখ্যালঘুদের পাল্টা প্রশ্ন, সুরক্ষা নিশ্চিত করা তো দূর, এই যুক্তি তুলে ইউনূস কি হামলাকারীদের প্রশ্রয় দিচ্ছেন না?
শনিবার ‘শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবস’ পালিত হবে বাংলাদেশে। সেই উপলক্ষে বার্তা দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ শাহাবুদ্দিন ও প্রধান উপদেষ্টা ইউনূস। ১৬ ডিসেম্বর পরাজিত হয়ে আত্মসমর্পণের আগে ১৪ তারিখ রাতে পাকিস্তানি সেনারা ঢাকায় স্বাধীনতাপন্থী শিক্ষাবিদ, সাংবাদিক, সাহিত্যিক, চিকিৎসক, বিজ্ঞানী, আইনজীবী, শিল্পী, দার্শনিক ও রাজনৈতিক চিন্তাবিদদের বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে গুম ও খুন করে। পাক বাহিনীর উদ্দেশ্য ছিল বাঙালিদের মেধাশূন্য করে দেওয়া। পাক সেনাদের সঙ্গী হয়ে এঁদের বাসস্থান চিনিয়ে দেয় স্বাধীনতা-বিরোধী এক দল রাজাকার ও আল বদর সদস্য। এঁদের অধিকাংশই পরে জামায়াতে ইসলামের নেতা হন। সেই দলের আমির শফিকুর রহমান এ বার জামায়াত কর্মীদের যথাযোগ্য মর্যাদায় ‘শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবস’ ও ‘বিজয় দিবস’ পালনের পরামর্শ দিয়েছেন।
এ বছর ‘বিজয় দিবস’ পালনে সেনাদের কুচকাওয়াজ ও শোভাযাত্রা বাদ দিয়েছে ইউনূস সরকার। তবে সব স্কুল-কলেজে দিনটি ‘যথাযোগ্য মর্যাদা’-য় পালনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু ‘বিজয় দিবস’-এর সরকারি পোস্টার ফেস্টুনে মুক্তিযুদ্ধের বদলে হাসিনা-বিরোধী আন্দোলনের নানা ছবি দেওয়ায় বিতর্ক তৈরি হয়েছে। একটি ফেস্টুনে ‘বিজয় দিবস’ লেখার নীচে রয়েছে দু’হাত ছড়ানো আবু সাইদের ছবি। রংপুরের আবু সাইদ পুলিশের গুলিতে নিহত হয়েছিলেন বলে দাবি করা হয়। কয়েক জন পুলিশকে এর জন্য কড়া শাস্তিও দেওয়া হয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, ময়না তদন্তের রিপোর্ট বলছে, গুলিতে নয়, মাথায় রহস্যজনক আঘাতের কারণে সাইদ মারা যান।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy