প্যালেস্টাইনিদের উপর ইজ়রায়েলি হামলার প্রতিবাদে গত কয়েক দিন ধরে বাংলাদেশে বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। এরই মধ্যে সোমবার সিলেট-সহ বাংলাদেশের বেশ কিছু শহরে দোকান এবং কিছু ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানে হামলা এবং ভাঙচুরের অভিযোগ উঠে আসে। জুতো বিক্রয়কারী প্রতিষ্ঠান ‘বাটা’-র বিভিন্ন বিক্রয়কেন্দ্রে ভাঙচুর চালানো হয়েছে বলে অভিযোগ। এ ছাড়া ‘কেএফসি’-র কিছু শাখাতেও জনরোষ আছড়ে পড়েছে বলে অভিযোগ উঠে এসেছে। বাংলাদেশের বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, ইজ়রায়েলি প্রতিষ্ঠান দাবি করে সেগুলিতে হামলা চালিয়েছে স্থানীয় জনতা।
ঘটনার পরে সোমবার রাতে সমাজমাধ্যমে একটি পোস্ট করে ‘বাটা’। বিবৃতিতে ওই জুতো বিক্রয়কারী সংস্থা জানিয়েছে, তাদের সংস্থার বিষয়ে কিছু বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়ানো হয়েছে। সেখানে দাবি করা হয়েছে এটি নাকি একটি ইজ়রায়েলি মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান এবং ইজ়রায়েল-প্যালেস্টাইন সংঘর্ষে রাজনৈতিক ভাবে জড়িত। ওই দাবি উড়িয়ে দিয়ে বিবৃতিতে সংস্থা জানিয়েছে, বাটা একটি পারিবারিক মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান, যেটি তৈরি হয় চেক প্রজাতন্ত্রে। কোনও সংঘর্ষের সঙ্গে এই প্রতিষ্ঠানের কোনও রাজনৈতিক যোগ নেই। সংস্থা জানিয়েছে, ভুল ধারণার জেরে বাংলাদেশে তাদের সংস্থার বেশ কিছু দোকানে ভাঙচুর চালানো হয়েছে। ওই হামলার নিন্দাও করেছে তারা।
বস্তুত, সোমবার থেকেই বাংলাদেশে চার দিনের বিনিয়োগ সম্মেলন শুরু হয়েছে। সেই দিনেই এই হামলার ঘটনায় নিন্দা করেছেন বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা)। এই ধরনের ঘটনাকে ‘ন্যক্কারজনক দৃষ্টান্ত’ বলে ব্যাখ্যা করছেন বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান। বাংলাদেশ পুলিশও ইতিমধ্যে পদক্ষেপ করতে শুরু করেছে।
বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের সমাজমাধ্যমের পাতা থেকে সোমবার রাতেই জানানো হয়, সিলেট-সহ অন্য এলাকায় দোকান এবং ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানে হামলার ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতারের নির্দেশ দিয়েছেন বাংলাদেশ পুলিশের আইজিপি বাহারুল আলম। মঙ্গলবার সকালে আরও একটি পোস্ট করা হয় ইউনূসের সমাজমাধ্যম পাতায়। সেখানে এক বিবৃতিতে জানানো হয়, প্রতিবাদ কর্মসূচির সময়ে দোকান ভাঙচুরের ঘটনায় অন্তত ৪৯ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
আরও পড়ুন:
প্রধান উপদেষ্টার বিবৃতিতে আরও জানানো হয়েছে, পুলিশ দ্রুত পদক্ষেপ করেছে এবং দু’টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। ঘটনার আরও তদন্ত চলছে এবং এই নিন্দনীয় কাজের জন্য অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আরও মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চলছে। ঘটনায় অভিযুক্তদের বিচারের আওতায় আনতে পুলিশ গত রাতে বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়েছে বলেও জানানো হয়েছে প্রধান উপদেষ্টার সমাজমাধ্যমের বিবৃতিতে। বিক্ষোভের সময়ের বিভিন্ন ফুটেজ খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলেও জানানো হয়েছে। আশ্বস্ত করা হয়েছে, অভিযুক্ত সকলকে গ্রেফতার না-করা পর্যন্ত পুলিশি অভিযান চলবে।