ইউরো কাপের একটি ম্যাচে দর্শকাসনে ভিড়। ফাইল চিত্র।
এক সপ্তাহে কোভিড সংক্রমণ হার বেড়েছে তিন গুণ। পরিস্থিতি এমনই স্পেনের। গোটা ইউরোপেই সংক্রমণ বাড়ছে হু হু করে। এর মধ্যে সবচেয়ে খারাপ দশা স্পেনের।
জুলাই মাসের গোড়া থেকেই সংক্রমণ বাড়তে শুরু করেছিল ইউরোপে। আগের দু’মাসে একেবারেই কমে গিয়েছিল করোনার প্রকোপ। এতে করোনা-বিধি লঘু করে দেওয়া হয় বহু দেশে। মাস্ক, দূরত্ব-বিধি— এ জাতীয় সব নিয়ম শিকেয় ওঠে। পর্যটনেও ছাড়পত্র দিয়ে দেওয়া হয়। এর মধ্যে ফ্রেঞ্চ ওপেন, উইম্বলডন, ইউরো কাপ, একাধিক স্পোর্টস টুর্নামেন্ট শুরু হয়ে যায়। বারবার সাবধান করেছিলেন বিশেষজ্ঞেরা। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)-র ইউরোপ শাখার প্রধান হান্স ক্লুগ জানিয়েছিলেন, মারাত্মক ঝুঁকি নিচ্ছে দেশগুলো। টুর্নামেন্টগুলো ‘সুপার স্প্রেডার’ হয়ে উঠতে পারে, সেই হুঁশিয়ারিও দেন। কিন্তু তাতে সিদ্ধান্ত পাল্টায়নি। ফলে যা হওয়ার, তা-ই হচ্ছে।
স্পেনের বাসিন্দা ৪৮ বছর বয়সি জুলিয়ো মিরান্ডা জানাচ্ছেন, আতঙ্কে রয়েছেন। এখনও দ্বিতীয় ডোজ়টি নেওয়া হয়নি তাঁর। অধীর অপেক্ষায় রয়েছেন, কবে নির্দিষ্ট সময় আসবে। তাঁর দেশে ভ্যাকসিনের কোনও অভাব নেই। এটাই যা বাঁচোয়া। মিরান্ডা জানান, গত মাসে এক সহকর্মী সংক্রমিত হন। তার পরেই আর এক সহকর্মীর স্ত্রী। এক এক করে তাঁর পাঁচ সহকর্মীই শয্যাশায়ী হয়ে পড়েন। তার পরে এক দিন পেটে ব্যথা শুরু হয় নিজের। সেই সঙ্গে শ্বাসকষ্ট। মিরান্ডা বলেন, ‘‘একমাত্র নিজের হলেই মানুষ বুঝতে পারবে, করোনা কী ভয়ঙ্কর!’’
গত এক সপ্তাহ আইসিইউয়ে ছিলেন মিরান্ডা। এখনও হাসপাতালে। জ্ঞান রয়েছে, কিন্তু যান্ত্রিক নলে অক্সিজেন চলছে।
বার্সেলোনার একটি হাসপাতালের ম্যানেজারের বক্তব্য, ‘‘কিছু দিনের জন্য দম ফেলার সময় পেয়েছিলাম। এখন ফের রোগীর ভিড় উপচে পড়ছে!’’ নতুন করে সংক্রমণ বাড়ার কারণ একটাই— ডেল্টা স্ট্রেন। বিশেষজ্ঞেরা বলছেন, অতিসংক্রামক স্ট্রেনটি সহজেই ছড়িয়ে পড়ছে। এ বারে বেশি সংক্রমিত হচ্ছেন অল্পবয়সিরা। যাঁদের টিকাকরণ হয়নি। কম বয়সের জন্য অসুস্থতা আইসিইউ পর্যন্ত গড়াচ্ছে কম। কিন্তু হাসপাতালে ভর্তি হতে হচ্ছে অনেককেই। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, ২০ থেকে ৩০ বছরের রোগীদের, শ্বাসকষ্ট কম হচ্ছে। স্টেরয়েডে কাজ দিচ্ছে। বেশির ভাগই আসছেন নিউমোনিয়া নিয়ে।
ইউরোপের অন্য দেশগুলির পরিস্থিতিও ভাল না। ব্রিটেনেও ডেল্টা স্ট্রেনের জেরে সংক্রমণ বেড়েছে। রাশিয়া থেকে সংক্রমণ বৃদ্ধির খবর মিলেছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, ডেল্টার পাশাপাশি সংক্রমণ বৃদ্ধির অন্যতম কারণ মহাদেশ জুড়ে বিভিন্ন টুর্নামেন্ট। যেমন, লন্ডন ও সেন্ট পিটার্সবার্গ থেকে ইউরোর ম্যাচ দেখে ফেরার পরে বহু দর্শকের করোনা-পজ়িটিভ ধরা পড়েছে। স্কটল্যান্ডের স্বাস্থ্য দফতর জানিয়েছে, ম্যাচ দেখে লন্ডন-ফেরত অন্তত ১২৯৪ জনের সংক্রমণ ঘটেছে।
এ নিয়ে সমালোচনার মুখে পড়েছে ফুটবল পরিচালন সংস্থা উয়েফা। সেমিফাইনাল ও ফাইনালে তারা ৬০ হাজার দর্শককে স্টেডিয়ামে ঢোকার অনুমতি দিয়েছে। এক জার্মান মন্ত্রীর ক্ষোভ, ‘‘দায়িত্বজ্ঞানহীনতার কাজ করছে ওরা। যে ভাবে দর্শকরা একে অপরকে জড়িয়ে ধরছেন, উল্লাস করছেন, তাতে ভয়ানক ভাবে ছড়িয়ে পড়বে ভাইরাস।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy