অনড়: হুইলচেয়ার থেকেই প্রতিবাদ। ট্রাম্পের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সরব হয়ে বিক্ষোভে যোগ দেন বৃহস্পতিবারও। শুক্রবার ইজরায়েলি সেনার গুলিতে প্রাণ হারান এই প্যালেস্তাইনি যুবক। নিহতের সংখ্যা ছুঁয়েছে আট। ছবি: এএফপি।
ন’বছর আগে দু’টো পা আর একটা কিডনি গিয়েছিল ইজরায়েলি বিমান হানায়। তবু দমানো যায়নি প্যালেস্তাইনি যুবক ইব্রাহিম আবু থুরায়ে-কে। গত কালও তাঁকে দেখা গিয়েছিল গাজা-ইজরায়েল সীমান্তে। হুইলচেয়ারে বসে দু’হাতে দেশের পতাকা মাথায় তুলে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন।
আজ সেই হুইলচেয়ারটা ফিরল। ফিরলেন না আবু। ইজরায়েলি সেনার গুলিতে এ বার তাঁর প্রাণটাও গেল! তিরিশ ছোঁয়ার আগেই।
প্রথম গুলিটা লাগে আবুর মাথায়। তার পর দেখতেই দেখতেই ঝাঁঝরা হয়ে যায় গোটা শরীর। আজ গাজায় তাঁর শেষকৃত্যে তাই বিক্ষোভকারীদের স্লোগান উঠল ইজরায়েল আর আমেরিকাকে নিশানায় রেখেই। ‘‘জেরুসালেম আমাদের। ইজরায়েলকে তা কোনও ভাবেই ছাড়ব না। ঘোষণা ফিরিয়ে নিতে হবে আমেরিকাকেও,’’ বলল জনতা। মৃত্যুর ঠিক দু’দিন আগে যা বলে গিয়েছিলেন আবু।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের জেরুসালেমকে ইজরায়েলের রাজধানী ঘোষণা করার প্রতিবাদে আজ ফের পথে নামেন হাজার হাজার প্যালেস্তাইনি। বাধা দেয় ইজরায়েলি সেনা। সংঘর্ষে নিহত হয়েছেন চার জন। জখম কয়েকশো।
আরও পড়ুন: পাকিস্তানকে ফের হুমকি পেন্টাগনের
গত কালও ইজরায়েলি সেনার সঙ্গে হাতাহাতি বেধে যায় এক দল বিক্ষোভকারীর। ঝামেলার সূত্রপাত হয় শুক্রবারের প্রার্থনায়। নমাজে গিয়ে এক দল তরুণ প্যালেস্তাইনির সঙ্গে বাদানুবাদ শুরু হয় ইজরায়েলি সেনার। তাদের দিকে পাথর ছুড়তে থাকেন ওই তরুণেরা। হঠাৎ গুলি চালায় সেনা। নিহত হন তিন জন। ইজরায়েল-গাজা সীমান্তে আবুর সঙ্গে আরও এক জনের মৃত্যু হয়েছে। রামাল্লায় আবার এক বিক্ষোভকারী ছুরি দিয়ে কোপাতে যান এক ইজরায়েলি সেনাকে। পুলিশের গুলিতে নিহত হয়েছেন তিনিও।
প্যালেস্তাইনের স্বাস্থ্য মন্ত্রকের দাবি, শুধু গাজাতেই ১৬৪ জন জখম হয়েছেন। ইজরায়েলের পাল্টা দাবি, পশ্চিম ভূখণ্ডে ২৫০০ লোক সংঘর্ষ বাধাচ্ছে। গাজার দখল নিয়েছে সাড়ে তিন হাজার প্যালেস্তাইনি।
ট্রাম্পের ঘোষণার পর থেকে এ পর্যন্ত ৮ প্যালেস্তাইনির মৃত্যুর খবর মিলেছে। ইজরায়েল অবশ্য দাবি করে যাচ্ছে, নিহতেরা সকলেই প্যালেস্তাইনের সশস্ত্র রাজনৈতিক সংগঠন হামাসের সদস্য।
এরই মধ্যে ইজরায়েলে আসছেন মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্স। প্যালেস্তাইনেও যাওয়ার কথা ছিল তাঁর। কিন্তু তা বাতিল করেছে প্যালেস্তাইন। হোয়াইট হাউসের এক কর্তার কথায়, ‘‘প্যালেস্তাইন ঠান্ডা হতে আরও সময় লাগবে। কথা বলার জন্য আমরা তাই অপেক্ষা করতে রাজি।’’ তবু এই পরিস্থিতিতে ইজরায়েলে পা রেখে পেন্স আবার কী বলেন, সেটাই দেখার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy