নিহতদের স্মরণ। শনিবার। ছবি: রয়টর্স।
সামনে বড়দিন। আলোয় আলোয় সেজেছে জার্মানির ম্যাগডেবার্গ শহর। জার্মান প্রথা মতোই রাস্তার দু’পাশ দিয়ে বসেছে বড়দিনের বাজার। লোকে লোকারণ্য। সেই ভিড়ের মধ্যে আচমকাই বিএমডব্লিউ চালিয়ে ঢুকে পড়ল এক আততায়ী। চোখের নিমেষে গাড়ির চাকায় পিষে দিতে শুরু করল লোকজনকে। গত কালের এই ঘটনায় দু’শোরও বেশি মানুষ জখম। যাঁদের মধ্যে অন্তত ৭ জন ভারতীয় রয়েছেন বলেও জানা যাচ্ছে। এ পর্যন্ত পাঁচ জনের মৃত্যু হয়েছে। জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শোলৎজ় বলেন, ‘‘কমপক্ষে ৪০ জন এতটাই জখম যে তাঁদের নিয়ে চিন্তায় রয়েছে প্রশাসন।’’ আততায়ীকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে, অপরাধী ৫০ বছর বয়সি এক সৌদি চিকিৎসক। নাম টামারা জিয়েশচ্যাং। ২০০৬ সাল নাগাদ সে জার্মানিতে চলে আসে এবং এখানেই বসবাস শুরু করে। তার সমাজমাধ্যমের অ্যাকাউন্ট থেকে জানা গিয়েছে, পেশায় মনোরোগ বিশেষজ্ঞ টামারা একটি অতি দক্ষিণপন্থী রাজনৈতিক দলের সমর্থক। তাকে সবাই ইসলাম-বিরোধী বলেই জানত। সে নিজে আগে মুসলিম ছিল বলেও জানা গিয়েছে।
গত কাল হামলার পরেই ঘটনাস্থল থেকে গ্রেফতার করা হয় টামারাকে। ওই সময়ে বাজারে উপস্থিত অনেকেই ভিডিয়ো করেছিলেন। তাতে দেখা গিয়েছে, মাটিতে পড়ে রয়েছে একটি লোক। তার মাথার দিকে বন্দুক তাক করে চিৎকার করছে পুলিশ। ম্যাগডেবার্গের বাসিন্দা ডোরিন স্টেফেন জানান, তিনি কাছেই একটি গির্জায় ছিলেন। সেখানে কনসার্ট চলছিল। তার মধ্যেই তিনি সাইরেনের শব্দ শুনতে পান। ডোরিন বলেন, ‘‘এত ভয়ানক শব্দ, শুনেই বুঝেছিলাম, কিছু একটা ভয়ানক ঘটেছে। ভয়ে সারা শরীর কাঁপছে।’’
ম্যাগডেবার্গ শহরে ২ লক্ষ ৪০ হাজার মানুষের বাস। এটি স্যাক্সোনি-অ্যানল্ট প্রদেশের রাজধানী। সেখানকার অভ্যন্তরীণ মন্ত্রী জানিয়েছেন, ম্যাগডেবার্গের ৪০ কিলোমিটার দক্ষিণে বার্নবার্গে ডাক্তারি করত টামারা। ওই প্রদেশের গভর্নর রেনার হেসলোফ বলেন, ‘‘প্রাথমিক তদন্তে যা দেখা যাচ্ছে, লোকটি একাই যা করার করেছে। এতে আর কেউযুক্ত নেই। ফলে নতুন করে আতঙ্কের কিছু নেই।’’
বড়দিনের বাজার জার্মান সংস্কৃতির একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। বছরের এই সময়টা উৎসবে মাতেন জার্মানরা। তাঁদের দেখাদেখি পশ্চিমের অন্য দেশগুলিতেও বড়দিনের বাজারের এই রীতি ছড়িয়ে পড়েছে। শুধু বার্লিনেই গত মাস থেকে শতাধিক বাজার বসছে। রকমারি ওয়াইন থেকে শুরু করে রোস্টেড আমন্ড, নানা ধরনের সুস্বাদু খাবার ও পানীয়ের পসরা সাজিয়ে বসেছেন দোকানিরা। এমন উৎসবের মাঝে এই ঘটনা আতঙ্ক ছড়িয়েছেদেশ জুড়ে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy