Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪

সিএএ-র জের! ভারত ছেড়ে বাংলাদেশে ফেরা শুরু, ও পারে গ্রেফতার ৩০০

সূত্রের দাবি, ৩০০ জন ধরা পড়লেও কাগজপত্র ছাড়া ভারতে যাওয়া বহু মানুষ বাংলাদেশের বিভিন্ন গ্রামে ফিরে এসেছেন বলে খবর মিলেছে।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ৩০ ডিসেম্বর ২০১৯ ০২:৩১
Share: Save:

জাতীয় নাগরিক পঞ্জি (এনআরসি) ও নয়া নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) বিতর্কে গোটা দেশ উত্তপ্ত হলেও ভারত ও বাংলাদেশের সীমান্ত পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে বলে দাবি করলেন বিএসএফ ও বিজিবি— দুই সীমান্তরক্ষী বাহিনীর ডিজি। তবে ভারত থেকে বাংলাদেশে ঢোকার পরে কিছু মানুষকে সম্প্রতি আটক করেছে বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষীরা। বিজিবি সূত্রের দাবি এই প্রবণতা আগে দেখা যায়নি।

গত চার দিন ধরে দিল্লিতে দুই বাহিনীর বৈঠকের শেষে আজ বর্ডার গার্ডস বাংলাদেশ (বিজিবি)-এর ডিজি সাফিনুল ইসলাম জানান, ‘‘ভারত থেকে অবৈধ ভাবে বাংলাদেশে প্রবেশের পরে গত এক বছরে প্রায় ৩০০ জনকে আটক করা হয়েছে। কাগজপত্র দেখাতে না-পারলেও এদের দেওয়া তথ্য যাচাই-বাছাই করে দেখা গিয়েছে, এরা সকলেই বাংলাদেশের নাগরিক। জীবিকার সন্ধানে বা অন্য কারণে এরা বৈধ কাগজ ছাড়া ভারতে গিয়েছিলেন।’’ সূত্রের দাবি, ৩০০ জন ধরা পড়লেও কাগজপত্র ছাড়া ভারতে যাওয়া বহু মানুষ বাংলাদেশের বিভিন্ন গ্রামে ফিরে এসেছেন বলে খবর মিলেছে।

অসমে এনআরসি-র চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ ও তার পরেই সংসদে সিএএ পাশ হওয়ায় প্রতিবাদ-আন্দোলন শুরু হয়েছে গোটা দেশ জুড়ে। বিরোধীদের অভিযোগ ওই আইন এনে নিশানা বানানো হচ্ছে মুসলিমদের। রাজ্য বিজেপির দাবি, সরকারের ওই পদক্ষেপ দেখে বাংলাদেশ থেকে আসা অনুপ্রবেশকারীরা ভারত ছাড়তে শুরু করেছেন। অনেকেই চেষ্টা করছেন পশ্চিমবঙ্গ বা উত্তর-পূর্বের সীমান্ত দিয়ে নিজের দেশে ফিরে যাওয়ার। যদিও সীমান্তে সে ধাঁচের কোনও প্রবণতা লক্ষ্য করা যায়নি বলে আজ দাবি করেন বিজিবি-র ডিজি। পুশব্যাকও হচ্ছে না বলে জানান তিনি।

সাফিনুল বলেন, ‘‘২০১৯ সালে তিনশোর কাছাকাছি বাংলাদেশি মানুষ ভারত থেকে ফেরার পরে ধরা পড়েছেন। যাদের অধিকাংশই কাজের খোঁজে বা আত্মীয়দের সঙ্গে দেখা করতে ভারতে গিয়েছিলেন। তাঁদের কাছে কোনও বৈধ কাগজ ছিল না।’’ এনআরসি বা সিএএ-র ফলে সীমান্তে অনুপ্রবেশ সংক্রান্ত সমস্যা বাড়তে পারে কি না, সে বিষয়ে সাফিনুল বলেন, ‘‘এনআরসি ও সিএএ একেবারেই ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়। সীমান্তে অনুপ্রবেশ রোধের প্রশ্নে দু’দেশের বাহিনী সমন্বয় রেখে কাজ করে যাচ্ছে।’’

নয়া নাগরিকত্ব বিলের আলোচনায় সংসদে একাধিক বার বাংলাদেশে হিন্দুদের উপর ধর্মীয় উৎপীড়নের বিষয়টি উঠে আসে। এ নিয়ে প্রকাশ্যে কিছু না-বললেও, সংসদে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের মুখে এ ধরনের মন্তব্য আদৌ ভাল ভাবে নেয়নি হাসিনা সরকার। পাকিস্তানের সঙ্গে বাংলাদেশকে এক বন্ধনীতে রাখাতেও ক্ষুব্ধ ঢাকা। ঘটনাচক্রে ওই বিল পাশের পরেই বাংলাদেশের দুই মন্ত্রী ভারত সফর বাতিল করেন। অস্বস্তিতে পড়ে নয়াদিল্লি। বাংলাদেশের সঙ্গে ক্ষত মেরামতিতে মুখ খুলতে হয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে। তার পরে পূর্বনির্ধারিত ৪৯তম বিএসএফ-বিজিবি-র ডিজি পর্যায়ের বৈঠক সুষ্ঠু ভাবে উতরে যাওয়ায় স্বস্তিতে সব পক্ষই।

দু’দেশের আলোচনায় উঠে এসেছে অক্টোবরে পদ্মায় ইলিশ ধরতে গিয়ে ভারতীয় মৎস্যজীবীর আটক ঘিরে দু’দেশের সীমান্তরক্ষীদের মধ্যে হওয়া গোলাগুলির বিষয়টিও। বিএসএফের জওয়ান বিজয়ভান সিংহ এই ঘটনায় মারা যান।

গুলি চালানোর অভিযোগ ওঠে বিজিবি-র এক জওয়ানের দিকে। দু’দেশের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সীমান্ত

থাকা সত্ত্বেও গুলিতে এ ভাবে এক জওয়ানের মৃত্যুকে দুর্ভাগ্যজনক ও অপ্রত্যাশিত ঘটনা বলেই দাবি করেছেন দুই

বাহিনীর প্রধান। সাফিনুল বলেন, ‘‘বিজিবি-র ওই জওয়ানের বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত শুরু হয়েছে। তদন্তে তিনি দোষী প্রমাণ হলে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে।’’

ওই ঘটনায় বিজিবি-র হাতে আটক হয়েছিলেন স্থানীয় মৎস্যজীবী প্রণব মণ্ডল। তিনি কবে মুক্তি পাবেন, এই প্রশ্নের জবাবে বিজিবি-র ডিজি বলেন, ‘‘ঘটনার পরেই ওই ব্যক্তিকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়। বাংলাদেশ পুলিশ ঘটনার তদন্ত করছে।’’ ডিজি (বিএসএফ) বিবেক জোহরি এই প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘ঢাকার ভারতীয় হাইকমিশন বিষয়টি দেখছে। বিষয়টি বিচারাধীন বলে সময় লাগছে। আমাদের আশা দ্রুত ওই মৎস্যজীবী ছাড়া পাবেন।’’

অন্য বিষয়গুলি:

BGB Border Bangladesh BSF CAA
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy