২৫ জনকে উদ্ধার করে নিয়ে যাচ্ছিল বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী। প্রতীকী ছবি
যত দিন যাচ্ছে, বন্যা পরিস্থিতি আরও খারাপ হচ্ছে পাকিস্তানে। প্রবল বৃষ্টি ও প্রাকৃতিক দুর্যোগজনিত ঘটনায় ইতিমধ্যেই মৃতের সংখ্যা ১১০০ ছাড়িয়েছে। এর মধ্যেই বন্যার জলে আটক কিছু মানুষকে উদ্ধার করতে গিয়ে একটি নৌকা উল্টে মৃত্যু হয়েছে ১৩ জনের। পাশাপাশি প্রায় দু’মাস ধরে চলা এই প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের জেরে আনাজ-সহ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম বেড়ে হয়েছে আকাশছোঁয়া। দু’বেলা পেট ভরাতে হিমশিম খাচ্ছেন পাকিস্তানের সাধারণ মানুষ। পরিস্থিতি সামাল দিতে ভারতের সঙ্গে স্থল সীমান্ত খুলে আনাজ-সহ বাকি কিছু নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস আমদানির সিদ্ধান্ত নিয়েছে পাক সরকার। পড়শি দেশকে ত্রাণ দিয়ে সাহায্য করার চিন্তা-ভাবনা শুরু করেছে নয়াদিল্লিও। তবে এখনও পর্যন্ত সরকারি স্তরে কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি বলেই খবর।
গত কাল দুর্ঘটনাটি ঘটে পাক সিন্ধু প্রদেশের সেহওয়ান এলাকার বিলাবলপুর গ্রামে। প্রবল বৃষ্টিতে ফুঁসতে থাকা সিন্ধু নদের জলে ভেসে গিয়েছিল গ্রামটি। একটি নৌকায় সেখান থেকে ২৫ জনকে উদ্ধার করে নিয়ে যাচ্ছিল বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী। ফুলে ফেঁপে ওঠা নদে উল্টে যায় নৌকাটি। ১৩ জনের দেহ উদ্ধার হয়েছে। নিখোঁজ অনেকে।
গত জুন মাস থেকে বৃষ্টি শুরু হয়েছে পাকিস্তানে। পরিবেশ বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে যা হিসেব করা হয়েছিল, তার থেকেও দ্রুত গলছে হিমালয়ের বরফ। একই সঙ্গে অতিরিক্ত উষ্ণ হয়ে উঠছে মহাসাগরের জল। এই দুইয়ের জেরে এ বার এই নজিরবিহীন বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে পাকিস্তানে। পাক জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রী শেরি রহমান সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, আকাশ থেকে বন্যা-দুর্গত মানুষকে ত্রাণ দেওয়ার মতো শুকনো জমি খুঁজে পাচ্ছে না সেনা।
পাক অর্থমন্ত্রী মিফতাহ ইসমাইল জানিয়েছেন, ক্ষতির পরিমাণ এক হাজার কোটি টাকা ছাড়াতে চলেছে। তাঁর কথায়, ‘‘আমার হাতে একটুও অর্থ নেই। তবু আশা রাখছি কোনও একটা উপায়ে লোকসান সামাল দিতে পারব। পাকিস্তান ডুবছে। চারদিকে শুধু ধ্বংসের ছবি।’’ বন্যা-দুর্গতদের জন্য ত্রাণ ও অর্থ জোগাড়ের কাজে নেমেছেন প্রাক্তন পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানও।
এই পরিস্থিতিতে পেঁয়াজ, টোম্যাটো-সহ বিভিন্ন আনাজ ও নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম এক ধাক্কায় বেড়েছে কয়েক গুণ। একরের পর একর জমির তুলো আর টোম্যাটো অতিবৃষ্টিতে নষ্ট হয়ে গিয়েছে বলে জানিয়েছে সরকার। লাহোরের এক বাজারে এসে খালি হাতে ফিরতে হয়েছে স্থানীয় বাসিন্দা জ়াহিদা বিবিকে। বললেন, ‘‘আনাজের এত দাম যে কিছুই কিনতে পারলাম না।’’ মানুষ কিছু কিনতে না পারায় মাথায় হাত বিক্রেতাদেরও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy