Advertisement
২৫ নভেম্বর ২০২৪
Myanmar Violence

ফের উত্তপ্ত মায়ানমার, নিহত ১০ বিক্ষোভকারী

সেনা অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে প্রথম থেকেই গর্জে উঠেছেন মায়ানমারের সাধারণ মানুষ।

আত্মরক্ষা: পুলিশের গুলি থেকে বাঁচতে রাস্তায় শুয়ে পড়েছেন বিক্ষোভকারীরা। বুধবার ম্যান্ডালে-তে। রয়টার্স

আত্মরক্ষা: পুলিশের গুলি থেকে বাঁচতে রাস্তায় শুয়ে পড়েছেন বিক্ষোভকারীরা। বুধবার ম্যান্ডালে-তে। রয়টার্স

সংবাদ সংস্থা
ইয়াঙ্গন শেষ আপডেট: ০৪ মার্চ ২০২১ ০৬:০০
Share: Save:

সেনা-পুলিশের যৌথ অভিযানে ফের রক্তাক্ত মায়ানমারের বিভিন্ন শহর। আজ সেনার চোখ রাঙানি উপেক্ষা করে ফের মিছিলে অংশ নিয়েছিলেন হাজার হাজার মানুষ। সেই মিছিল ছত্রভঙ্গ করতে বেশ কয়েকটি শহরে ফের গুলি চালিয়েছে পুলিশ। কোথাও কোথাও রবার বুলেট আর কাঁদানে গ্যাসও চলেছে। আজকের পুলিশি অভিযানে মৃত্যু হয়েছে কমপক্ষে দশ জন বিক্ষোভকারীর। আহত অনেকে। তবে সেই সংখ্যাটা নিশ্চিত করে বলতে পারেনি কোনও হাসপাতালই।

সেনা অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে প্রথম থেকেই গর্জে উঠেছেন মায়ানমারের সাধারণ মানুষ। সরকারি কর্মীদের একটা বড় অংশ অসহযোগ আন্দোলন চালাচ্ছেন। গণতন্ত্রকামী বিক্ষোভকারীদের দাবি, আউং সাং সু চি-সহ গৃহবন্দি সব নেতানেত্রীর মুক্তি। সেই সঙ্গে গণতান্ত্রিক সরকার ফিরিয়ে দেওয়ার দাবিতেও চলছে আন্দোলন। গত রবিবারের বিক্ষোভ দমনে কঠোর নীতি নিয়েছিল সেনা। মৃত্যু হয়েছিল ১৮ জনের। চলতি সেনা অভ্যুত্থানে সেটাই ছিল সবচেয়ে রক্তাক্ত দিন। সোমবার থেকে অবশ্য ফের পথে নেমেছেন মানুষ। আজও তেমনই মিছিল-বিক্ষোভে অবরুদ্ধ ছিল বিভিন্ন শহর। মূলত তিনটি শহর থেকে বিক্ষোভকারীদের মৃত্যুর খবর এসেছে আজ। সবচেয়ে বেশি মানুষ মারা গিয়েছেন মনিওয়া শহরে। ছবির মতো এই শহরে মৃত্যু হয়েছে সাত জনের। ম্যান্ডালে, ইয়াঙ্গনের মতো শহরেও বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে দফায় দফায় সংঘর্ষ বেধেছে সেনা-পুলিশের।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক চিকিৎসক জানিয়েছেন, মাথায় গুলি লেগে ম্যান্ডালে-তে মৃত্যু হয়েছে বছর উনিশের এক তরুণের। কাঁদানে গ্যাসেও অসুস্থ হয়ে পড়েছেন প্রচুর মানুষ। ইয়াঙ্গনে সেনার হাত থেকে বাঁচতে অভিনব পন্থা নিয়েছেন বিক্ষোভকারীরা। বিক্ষোভের রাস্তায় সাঁটা হচ্ছে সেনা প্রধান মিং আউং লাইংয়ের মুখ দেওয়া পোস্টার। যাতে তার উপরে দাঁড়াতে সাহস না-পায় মিংয়েরই নিজস্ব বাহিনী।

সেনার নিশানায় এখন সাংবাদিকেরাও। সম্প্রতি আটক ছয় সাংবাদিকের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা দায়ের করা হয়েছে। যার মধ্যে রয়েছেন অ্যাসোসিয়েট প্রেসের এক সাংবাদিকও। তাঁদের বিরুদ্ধে দেশদ্রোহিতা, ভুয়ো খবর ছড়ানোর মতো অভিযোগ আনা হয়েছে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে দু’ থেকে তিন বছর কারাদণ্ড হতে পারে তাঁদের।

বিক্ষোভ দমনে সেনা ডিজিটাল অস্ত্রও ব্যবহার করছে বলে জানিয়েছে বেশ কয়েটি মানবাধিকার সংগঠন। তাদের দাবি, সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারকারীদের ব্যক্তিগত তথ্য এখন সেনার হাতের মুঠোয়। ক্লোন ফোন, ট্র্যাক সিগন্যাল ব্যবহার করা থেকে পাসওয়ার্ড হ্যাক করার মতো সাইবার অপরাধ করতেও পিছপা হচ্ছে না সেনা। বিক্ষোভকারীদের উপরে নজরদারি করতে ব্যবহার করা হচ্ছে ড্রোনেরও। দেশে নতুন সাইবার নিরাপত্তা আইন চালু করে ব্যবহারকারীদের তথ্য তিন বছরের জন্য জমিয়ে রাখার পরিকল্পনাও করে রেখেছেন সেনা কর্তারা।

এই সপ্তাহেই আটক গৃহবন্দি নোবেলজয়ী নেত্রী সু চি ভিডিয়ো কনফারেন্সের মাধ্যমে আদালতে হাজিরা দিয়েছেন। তাঁর বিরুদ্ধে আরও দু’টি নতুন ধারায় অভিযোগ আনার পরে এটাই ছিল প্রথম হাজিরা। তবে তাঁকে কবে মুক্তি দেওয়া হবে, তার সদুত্তর নেই কারওর কাছেই। এই পরিস্থিতিতে জুন্টার কাছে আটক সব রাজনৈতিক বন্দিকে মুক্তি দেওয়ার আর্জি জানিয়েছেন পোপ ফ্রান্সিস। মায়ানমারের সঙ্কট নিয়ে আলোচনা করতে আগামী শুক্রবার রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদে বৈঠক ডেকেছে ব্রিটেন। অবিলম্বে সেনাকে যাবতীয় অস্ত্র বিক্রির ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা জারিরও দাবি উঠেছে।

অন্য বিষয়গুলি:

Death Myanmar Violence
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy