এ বার কিম জং-উনের রোষে তাঁরই দেশের ৩৩ জন নাগরিক। খুব শিগগির উত্তর কোরিয়ার এই স্বৈরাচারী নেতা ফাঁসি দেবেন তাঁদের।
কী তাঁদের অপরাধ? অভিযোগ, কিমকে তাঁর গদি থেকে সরানোর ষড়যন্ত্র চালাচ্ছিলেন তাঁরা। শুধু তাই নয়, এক দক্ষিণ কোরীয় খ্রিস্টান মিশনারির সঙ্গে হাত মিলিয়ে ওই ৩৩ জন নাকি দেশে গোপনে গির্জা তৈরি করতে চাইছিলেন। এক-আধটা নয়। মোট ৫০০টা। প্রশাসনের চোখে ধুলো দিয়ে দক্ষিণ কোরিয়ার সরকারের কাছ থেকে তাঁরা নাকি প্রচুর অর্থও নিয়েছিলেন।
আপাতত ওই ৩৩ জন উত্তর কোরীয়কে জাতীয় নিরাপত্তা বিভাগের কোনও গোপন সেলে আটকে রাখা হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। আশঙ্কা, রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অভিযোগে যে কোনও দিন তাঁদের ফাঁসিকাঠে ঝোলানো হবে। এর আগেও নৃশংস অত্যাচারের জন্য বারবার শিরোনামে এসেছে কিম জং-উনের নাম। ফের সেই একই কারণে আরও এক বার খবরে তিনি।
গত ডিসেম্বরেই নিজের পিসেমশাই জ্যাংকে নৃশংস ভাবে খুন করেছিলেন কিম। অভিযোগ ছিল, উত্তর কোরিয়ার কমিউনিস্ট শাসনের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করেছিলেন জ্যাং। কিমের কানে সে খবর পৌঁছতেই জ্যাংকে গ্রেফতার করা হয়। অকথ্য অত্যাচারের পরে তাঁকে মারা হয়। ফলে এই ৩৩ জনের জন্য কী ধরনের নির্যাতন অপেক্ষা করছে, তা ভেবে এখন থেকেই আতঙ্কিত বিশেষজ্ঞরা।
কিছু দিন আগেও নিজের যাবতীয় কার্যকলাপের জন্য রাষ্ট্রপুঞ্জের কঠোর সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছিল কিমকে। এমনিতে দেশের পরিস্থিতি পর্যালোচনা করার জন্য রাষ্ট্রপুঞ্জের প্রতিনিধিদের উত্তর কোরিয়ার প্রবেশ নিষেধ। তা সত্ত্বেও রাষ্ট্রপুঞ্জ জানিয়েছিল, মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য কড়া শাস্তি প্রাপ্য কিমের। প্রয়োজনে আন্তর্জাতিক কোর্টে তাঁর বিচারও চালাতে চায় রাষ্ট্রপুঞ্জ। কিন্তু কিম সে সবে আমল দেননি। নিজের ক্ষমতা কায়েম রাখতে তাঁর যা কিছু ঠিক মনে হয়, তিনি সেটাই করে চলেছেন।
যে দক্ষিণ কোরীয় মিশনারিকে নিয়ে বিতর্ক, সেই কিম জাং-উক গত সপ্তাহে সাংবাদিক বৈঠক করে নিজের ভুল কবুল করেছেন। রাষ্ট্রদোহের অভিযোগে গত অক্টোবর থেকে তিনি জেলে বন্দি। সাংবাদিক বৈঠকে উক কার্যত স্বীকার করে নিয়েছেন যে দক্ষিণ কোরিয়ার গোয়েন্দা সংস্থার কাছ থেকে নিয়মিত অর্থ পেতেন তিনি। সোলের চর হয়ে কাজও করতেন। উত্তর কোরিয়ায় গোপনে গির্জা তৈরির পরিকল্পনাও ছিল তাঁদের। তবে সাংবাদিক বৈঠকে ফলাও করে উক যতই নিজের ভুল স্বীকার করুন না কেন, এর পিছনেও কিমেরই মস্তিষ্ক রয়েছে বলে মনে করছেন অনেকে। অর্থাৎ তিনিই জোর করে সংবাদমাধ্যমের সামনে উককে মুখ খুলতে বাধ্য করেছেন বলে অভিযোগ।
এরই মধ্যে আবার গত কাল থেকে খোঁজ মিলছে না উত্তর কোরিয়ার দ্বিতীয় প্রধান নেতা ছো রিয়ং হেইয়ের। দেশের বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদে তাঁকে বসিয়েছিলেন কিম। কিন্তু সম্প্রতি বেশ কয়েকটি সরকারি শিল্প সংস্থার মাথায় বসেন ছো। আর সেই কারণেই তিনি কিমের বিরাগভাজন হন। ছোয়ের এই অন্তর্ধানের পিছনেও কিমেরই হাত রয়েছে বলে সন্দেহ। কিম তাঁর সঙ্গে নিজের পিসেমশাইয়ের মতোই ব্যবহার করেন কি না, সেটাই এখন দেখার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy