ভোটের আসরে ফের বিশিষ্টজনেরা। তবে সরাসরি কোনও রাজনীতির বার্তা দিতে নয়। রাজ্যে সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন চেয়ে তাঁরা নির্বাচন কমিশনের দরবারে। কমিশনের কাছে দেওয়া এক চিঠিতে তাঁদের বক্তব্য, রাজ্যে তৃতীয় দফার ভোটে ব্যাপক হারে পেশীশক্তির ব্যবহার হয়েছে। বৈধ ভোটারদের গণতান্ত্রিক অধিকারের উপর আক্রমণ হয়েছে বলে সংবাদে উঠে এসেছে। চতুর্থ ও পঞ্চম দফার ভোটে মানুষের আস্থা ফেরাতে কমিশনকে সক্রিয় হওয়ার আর্জি জানিয়েছেন তাঁরা।
শুক্রবার রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী অফিসার সুনীল গুপ্তকে দেওয়া এই চিঠিতে সই করেছেন সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়, সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়, বুদ্ধদেব দাশগুপ্ত, তরুণ মজুমদার, সব্যসাচী চক্রবর্তী, পবিত্র সরকার, যশোধরা বাগচি, চন্দন সেন, মালিনী ভট্টাচার্য-সহ আরও অনেকে।
স্বাক্ষরকারীরা প্রায় কেউই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ বৃত্তে পড়েন না। তাঁদের রাজনৈতিক মতও ভিন্ন। এই অবস্থায় কমিশনের কাছে তাঁদের আর্জি তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন অনেকে।
কারণ, গত ৩০ এপ্রিল রাজ্যে তৃতীয় দফার নির্বাচনে ন’টি লোকসভা কেন্দ্রের বহু বুথে ভোট লুঠ ও সন্ত্রাসের অভিযোগ করে বিরোধীরা। সিপিএম, কংগ্রেস, বিজেপি-সহ বিরোধীদের অভিযোগ, কমিশন সে দিন সক্রিয় ভূমিকা নিতে ব্যর্থ। পরোক্ষে রাজ্যের শাসক দলকেই সাহায্য করেছে তারা। অনেকেই মনে করছেন, এই অবস্থায় কমিশনের কাছে বিশিষ্টজনদের একাংশের আর্জি বোঝাতে চেয়েছে, তৃতীয় দফার ভোটের দিন শাসক দলের মতোই কমিশনের ভূমিকাও ঠিক ছিল না। সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়, তরুণ মজুমদার, পবিত্র সরকার প্রমুখের কাছে ওই চিঠির কথা জানতে চাওয়া হলে প্রত্যেকেই চিঠির বক্তব্যের সঙ্গে সহমত প্রকাশ করেন। সৌমিত্রবাবুর মতে, “ভোটে পেশীশক্তির প্রয়োগ কাম্য নয়।” পবিত্রবাবুর কথায়, “গণমাধ্যমে দেখে যা হয়েছে বলে মনে হয়েছে, তা ভোট নয়, ভোটের নামে প্রহসন। পঞ্চায়েত, পুরসভায় সম্প্রতি যে ভাবে বিরোধীদের প্রতিনিধিদের বার করে দিয়ে ভোট হয়েছিল, লোকসভাতেও এ বার তাই হয়েছে। মনে হয় না, আর কখনও এ রাজ্যে এমন ভোট হয়েছে।”
ভোটের পরে তা নিয়ে অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগের পরম্পরা এ রাজ্যে নতুন নয়। এ প্রসঙ্গে তরুণবাবু বলেন, “যা ঘটেছে, তা অভূতপূর্ব কি না, তা বিচার করতে যাওয়া অবান্তর! আগে কোথাও কখনও খুন হয়ে থাকলে, ফের যদি খুনের ঘটনা ঘটে তা হলে কি তার প্রতিবাদ করব না?” আর সৌমিত্রবাবুর মন্তব্য, “এ বার প্রতিবাদ করতেই হচ্ছে, কারণ ভোট নিয়ে সন্ত্রাস আগে কখনওই এমন পর্যায়ে যায়নি। আশা করি, প্রতিকারের ব্যবস্থা করবে কমিশন।” পবিত্রবাবুও বলেন, “যে ভাবে এতগুলো রাজনৈতিক দল ভোটের জুলুম নিয়ে সরব হয়েছে, তেমন আগে কখনও ঘটেনি।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy