তলব যারা করেছে, সেই ২১ জুলাই কমিশনেরই সাংবিধানিক বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে মামলা হয়েছে কলকাতা হাইকোর্টে। বুধবার সেই মামলা করেন কলকাতার প্রাক্তন পুলিশ কমিশনার তুষার তালুকদার। তার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই, বৃহস্পতিবার কলকাতা পুলিশের প্রাক্তন কর্তা দীনেশ বাজপাইয়ের কাছে ওই কমিশনের পাঠানো সমন খারিজ হয়ে গেল হাইকোর্টে।
বিচারপতি নাদিরা পাথেরিয়া সমন খারিজ করে এ দিন রায় দিয়েছেন, ওই প্রাক্তন পুলিশকর্তাকে যদি ২১ জুলাই কমিশনের সামনে হাজির করাতে হয়, তা হলে তাঁর কাছে নতুন সমন পাঠাতে হবে কমিশনকে। তবে পরবর্তী সমন পাঠানোর আগে তাঁর বিরুদ্ধে তিন প্রাক্তন পুলিশ অফিসার যে-সাক্ষ্য দিয়েছেন, তার বয়ান নথির আকারে বাজপাইয়ের কাছে পেশ করতে হবে।
১৯৯৩ সালের ২১ জুলাই ধর্মতলা-চত্বরে যুব কংগ্রেসের আন্দোলনে পুলিশ গুলি চালালে ১৩ জনের মৃত্যু হয়। বাজপাই তখন ছিলেন কলকাতা পুলিশের ডিসি (সদর)। ২০১১ সালে রাজ্যের ক্ষমতায় এসে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গুলি চালানোর সেই ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দেন। গড়া হয় ২১ জুলাই কমিশন। তার চেয়ারম্যান করা হয় অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি সুশান্ত চট্টোপাধ্যায়কে। সেই কমিশনের পাঠানো সমনকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে বাজপাই হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন।
বাজপাইয়ের আইনজীবী ময়ূখ মৈত্র জানান, ২৭ অক্টোবর কমিশনের পক্ষ থেকে তাঁর মক্কেলের কাছে নোটিস পাঠানো হয়। তাতে বলা হয়, ’৯৩ সালের ২১ জুলাই ধর্মতলা-চত্বরে কর্তব্যরত তিন পুলিশ অফিসার কমিশনের কাছে তাঁর (বাজপাইয়ের) বিরুদ্ধে কয়েকটি অভিযোগ করেছেন। বাজপেয়ী এই ব্যাপারে ওই তিন প্রাক্তন পুলিশ অফিসারকে জেরা করতে চান কি না, তা জানতে চেয়েছিল কমিশন। কৌঁসুলি জানান, বাজপাই ৭ নভেম্বর কমিশনকে জানান, তিনি ওই তিন জনকে জেরা করতে চান। তবে তার আগে ওই তিন জন কমিশনে তাঁর বিরুদ্ধে কী অভিযোগ করেছেন, তা তাঁর কাছে নথির আকারে পেশ করা হোক।
ওই কৌঁসুলি আরও জানান, বাজপাই ৭ নভেম্বরের চিঠিতে উল্লেখ করেন, তৎকালীন কংগ্রেস নেতা তথা বর্তমান তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায়ও কমিশনে সাক্ষ্য দিয়েছিলেন। তিনি কিন্তু তাঁর (বাজপাইয়ের) বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ করেননি। ওই চিঠি পাওয়ার পরেই কমিশন ১১ নভেম্বর সমন পাঠায় বাজপাইয়ের কাছে। তাতে বলা হয়, তিনি প্রাক্তন তিন পুলিশ অফিসারকে জেরা করতে পারবেন না। ১৯ নভেম্বর বেলা সাড়ে ১২টায় তাঁকে কমিশনে হাজির হয়ে আত্মপক্ষ সমর্থন করতে হবে।
সেই সমনকে চ্যালেঞ্জ জানিয়েই হাইকোর্টে যান বাজপাই। ১৯ নভেম্বর সেই মামলার শুনানি হয়। শুনানি শেষে বিচারপতি পাথেরিয়া সে-দিন নির্দেশ দিয়েছিলেন, বাজপাইকে আপাতত সাত দিন কমিশনে হাজির হতে হবে না। এক সপ্তাহের সেই সময়সীমার শেষে এ দিন ফের শুনানি হয়। বিচারপতি নির্দেশ দেন, এই সমন আর বলবৎ থাকছে না। ফের তলব করে সমন পাঠানোর আগে সাক্ষ্যের যাবতীয় তথ্য নথিবদ্ধ করে পাঠাতে হবে বাজপাইয়ের কাছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy