Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪

প্রদেশে কাজিয়ায় বিরক্ত রাহুল

নানা নেতা নানা মতের দশা এখন পশ্চিমবঙ্গ প্রদেশ কংগ্রেসের! সারদা-কাণ্ডে সিবিআই তদন্তের ধাক্কায় কোণঠাসা তৃণমূলকে চেপে ধরার প্রশ্নে বিজেপি-বাম দুই শিবিরের থেকেই পিছিয়ে পড়েছে দল। অথচ দলের হাল ফেরানোর পথ খোঁজার জন্য রাহুল গাঁধীর ডাকা বৈঠকে আজ নিজেদের চাপানউতোরটাই মুখ্য হয়ে উঠল। কংগ্রেস কেন তৃণমূলকে চেপে ধরার প্রশ্নে অন্যদের থেকে পিছিয়ে পড়ছে, তার কারণ খুঁজতেই রাহুল আজ বাংলার নেতাদের বৈঠকে ডেকেছিলেন।

সারদা-কাণ্ডের প্রতিবাদে কংগ্রেসের মিছিল। সোমবার।  নিজস্ব চিত্র

সারদা-কাণ্ডের প্রতিবাদে কংগ্রেসের মিছিল। সোমবার। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৬ ডিসেম্বর ২০১৪ ০৩:৪৫
Share: Save:

নানা নেতা নানা মতের দশা এখন পশ্চিমবঙ্গ প্রদেশ কংগ্রেসের! সারদা-কাণ্ডে সিবিআই তদন্তের ধাক্কায় কোণঠাসা তৃণমূলকে চেপে ধরার প্রশ্নে বিজেপি-বাম দুই শিবিরের থেকেই পিছিয়ে পড়েছে দল। অথচ দলের হাল ফেরানোর পথ খোঁজার জন্য রাহুল গাঁধীর ডাকা বৈঠকে আজ নিজেদের চাপানউতোরটাই মুখ্য হয়ে উঠল।

কংগ্রেস কেন তৃণমূলকে চেপে ধরার প্রশ্নে অন্যদের থেকে পিছিয়ে পড়ছে, তার কারণ খুঁজতেই রাহুল আজ বাংলার নেতাদের বৈঠকে ডেকেছিলেন। কিন্তু তাঁদের মধ্যে মিলমিশের এতটাই অভাব দেখে বিরক্ত রাহুল সাফ জানিয়ে দেন, আগে নিজেদের মধ্যে ঝামেলা মিটিয়ে আসুন। রাজ্যে কংগ্রেসকে প্রাসঙ্গিক করে তুলতে নিজেরা বসে একটা দিশা নথি (ভিশন ডকুমেন্ট) তৈরি করুন। কেন্দ্রীয় স্তরে দলের দিশা নির্ধারণের কথা পরে ভাবা যাবে। এই ‘হোম টাস্ক’ সেরে ফেলার জন্য অধীর চৌধুরীদের সপ্তাহখানেকের বেশি সময় দেননি রাহুল। আগামী সপ্তাহে ফের তিনি রাজ্য নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন।

একটি বিষয়ে বাংলার কংগ্রেস নেতারা এ দিন একমত হন। তা হল, সারদা কেলেঙ্কারির কালি তৃণমূলের গায়ে এতটাই লেপে গিয়েছে যে, ভবিষ্যতে তাদের সঙ্গে হাত মেলালে রাজ্যের মানুষ কংগ্রেসকে আর ছোঁবেই না। রাজ্যে ধুয়ে মুছে যেতে পারে দল।

সারদা কাণ্ডে সিবিআই তদন্ত দাবি করে সুপ্রিম কোর্টে মামলা দায়ের করার নেপথ্যে ছিলেন প্রদেশ কংগ্রেস নেতা আবদুল মান্নান। কিন্তু মান্নান সহ রাজ্য কংগ্রেসের একাংশ নেতার ক্ষোভ, সুপ্রিম কোর্ট এ ব্যাপারে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেওয়ার পরই তৃণমূল সরকারের বিরুদ্ধে যে ধরনের আন্দোলন গড়ে তোলা দরকার ছিল, দল তা পারেনি। উল্টে সেই পরিসর ক্রমশই দখল করে নিচ্ছে বিজেপি। এই অবস্থায় কখনও সরাসরি কখনও বা পরোক্ষে অধীর চৌধুরীকেই দুষছিলেন রাজ্যের এই নেতারা। এই পরিস্থিতিতেই প্রদেশ নেতাদের দিল্লিতে বৈঠকে ডাকেন রাহুল। অধীর, প্রাক্তন তিন প্রদেশ সভাপতি প্রদীপ ভট্টাচার্য, মানস ভুঁইয়া ও সোমেন মিত্র সেখানে ছিলেন। ছিলেন আব্দুল মান্নান, দীপা দাশমুন্সিও। সূত্রের খবর, পশ্চিমবঙ্গে কংগ্রেসকে প্রাসঙ্গিক করে তোলার ব্যাপারে প্রত্যেকের মত শুনতে চান রাহুল। আলোচনা প্রসঙ্গে অধীরবাবু বলেন, ডাকা হলেও দলের বিক্ষোভ কর্মসূচিতে যান না আব্দুুল মান্নান। হতে পারে লোকসভা ভোটে প্রার্থী মনোনয়ন নিয়ে মনোমালিন্য পুষে রেখেছেন তিনি।

মান্নান তখনই বলেন, তিনি সম্মানের সঙ্গে দল করতে চান। জেলায় কোথায় কে প্রার্থী হবে তা জেলার নেতা হিসেবে তিনি ভাল জানেন। অধীরবাবুও অতীতে দলের বিরুদ্ধে নির্দল প্রার্থী দিয়েছিলেন। তাতে শৃঙ্খলাভঙ্গ হয়নি! সূত্রের খবর, সরাসরি অধীরের সমালোচনা না করলেও দীপা বলেন, প্রদেশ কংগ্রেসের বৈঠকে তাঁকে ডাকা হয় না। সেই অভিযোগ খারিজ করেন অধীরবাবু। মানস ভুঁইয়া অবশ্য কারও বিরুদ্ধে ক্ষোভপ্রকাশের পথে না হেঁটে তৃণমূল সরকারের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের কথাই বলেন। এ সব দেখেশুনেই বিরক্ত হন রাহুল।

ঘটনাচক্রে রাহুলের এই বৈঠকের দিনেই মধ্য কলকাতা জেলা কংগ্রেস সারদা কর্তা সুদীপ্ত সেনের মুখোমুখি বসিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে জেরা করার দাবিতে মিছিল করেছে কলকাতায়। কিন্তু এ ক্ষেত্রেও তারা পিছিয়ে। ওই একই দাবিতে আগেই পথে নেমেছে বামেরা।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE