রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে জিটিএ চুক্তি ঠিকঠাক না মানার অভিযোগ তুলে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে দ্রুত ত্রিপাক্ষিক বৈঠক ডাকার দাবি জানাল গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা। সোমবার মোর্চা সভাপতি বিমল গুরুঙ্গের নেতৃত্বে মোর্চার এক প্রতিনিধি দল দিল্লিতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করা ওই দাবি তুলেছেন। সেখানে দার্জিলিঙের বিজেপি সাংসদ সুরেন্দ্র সিংহ অহলুওয়ালিয়া উপস্থিত ছিলেন। সরকারি সূত্রের খবর, বৈঠকে মোর্চার নেতারা রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে অসহযোগিতার অভিযোগ তোলেন। তাঁরা জানান, জিটিএ চুক্তি মেনে যা যা হওয়ার উচিত ছিল তা পাহাড়ে মানা হয়নি। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আশ্বস্ত করেছেন বলে মোর্চার দাবি।
দার্জিলিঙের বিজেপি সাংসদ বলেন, “রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে মোর্চা নেতারা জিটিএ চুক্তি না মানার অভিযোগ করেছেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সংসদের শীতকালীন অধিবেশনের পর ত্রিপাক্ষিক বৈঠক নিয়ে সরকার উদ্যোগী হবেন বলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মোর্চা নেতাদের জানিয়েছেন।” তবে ত্রিপাক্ষিক বৈঠক নিয়ে এখনই কোনও মন্তব্য করতেন চাননি মোর্চার সহকারি সম্পাদক বিনয় তামাঙ্গ। তিনিও এদিনের বৈঠকে ছিলেন। মোর্চার এই নেতা বলেন, “আমি ত্রিপাক্ষিক বৈঠক নিয়ে এখনই সরকারিভাবে কিছু বলছি না। যথাসময়ে আমরা তা বলব।”
মোর্চা সূত্রের খবর, নানা বিষয়ে বেশ কিছুদিন ধরেই মোর্চার সঙ্গে রাজ্য সরকারের সঙ্গে সম্পর্ক ঠিকঠাক চলছে না। দলের এক কেন্দ্রীয় কমিটির নেতার জানান, জিটিএ চুক্তি অনুসারে ৫৬টি দফতরের মধ্যে তথ্য সংস্কৃতি, পূর্ত, উচ্চ শিক্ষা, দমকল, আবগারি-র মত গুরুত্বপূর্ণ দফতর পুরোপুরি হস্তান্তর হওয়ার কথা থাকলেও তা হয়নি। তা ছাড়া রাস্তার কাজ, পর্যটন-সহ বিভিন্নভাবে রাজ্য সরকার জিটিএ-র কাজে হস্তক্ষেপ করছে। এখন প্রত্যাহার হয়নি দলীয় নেতাদের মামলা। তা ছাড়া পাহাড়ের বিভিন্ন জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের ১২ শতাংশ শেয়ারও জিটিএ-কে এখনও দেওয়া হয়নি। তাই কেন্দ্রের উচিত বৈঠক ডেকে এর সমাধন সূত্র বার করা।
মোচার্র অভিযোগকে উড়িয়ে দিয়েছেন শাসক তৃণমূল কংগ্রেসের পাহাড়ের নেতারা। তৃণমূলের পাহাড়ের সাধারণ সম্পাদক বিন্নি শর্মা বলেন, “কোনও হস্তক্ষেপের ব্যাপার নেই। চুক্তি মতই কাজ হচ্ছে। আর সবকিছু হস্তান্তর হতে কিছু সময় তো প্রয়োজন। তবে ত্রিপাক্ষিক বৈঠক নিয়ে কিছু বলতে পারব না। ওটা সরকারের নিজস্ব বিষয়।”
এদিনই দিল্লিতে বৈঠকের পর গোর্খাল্যান্ডের দাবি খতিয়ে দেখার জন্য আলাদা কমিটি গঠন করা হবে বলে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী আশ্বাস দিয়েছেন বলে দাবি করেছে মোর্চা। বিমল গুরঙ্গ নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে বলেছেন, “আমি খুব আনন্দের সঙ্গে আমাদের সমর্থকদের জানাচ্ছি, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী একটি বিশেষ কমিটি গঠনের আশ্বাস দিয়েছেন। ওই কমিটি আমাদের শতাব্দী প্রাচীন গোর্খাল্যান্ডের দাবি খতিয়ে দেখবে। আমরা এই জন্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে ধন্যবাদও জানিয়েছি।”
কিন্তু, বিজেপি সাংসদ জানান, গোর্খাল্যান্ডের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে গোর্খা জনজাতি শুধু নয়, দার্জিলিঙের সব সম্প্রদায়ের মানুষ, তরাই-ডুয়ার্সের বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে সিংহভাগ মানুষ যা চাইবেন সেই মতো পদক্ষেপ করার কথা তো বিজেপি গোড়া থেকেই বলছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy