Advertisement
২৪ নভেম্বর ২০২৪

উচ্চাকাঙ্খী কিন্তু বেহিসেবি ছিলেন রাজেশ

খুব বড় মাপের শিল্পপতি হওয়ার স্বপ্ন দেখতেন। কিন্তু আয়ের সঙ্গে ব্যয়ের সঙ্গতি কখনও ছিল না রাজেশ ঝুনঝুনওয়ালার। ফলে একটার পর একটা বড় মাপের প্রকল্পের রূপরেখা তৈরি করতেন, কিন্তু তার বেশির ভাগই দিনের আলো দেখত না। এমনই জানাচ্ছেন রাজেশের পরিবারের সদস্যরা। এমনকী শনিবার বেলা আড়াইটেতেও এক আত্মীয়কে রাজেশ বলেছিলেন চা বাগানে বড় মাপের পর্যটন কেন্দ্র গড়ার পরিকল্পনার কথা।

শনিবার সন্ধ্যায় সুনসান সোনালি চা বাগান। নিজস্ব চিত্র।

শনিবার সন্ধ্যায় সুনসান সোনালি চা বাগান। নিজস্ব চিত্র।

কিশোর সাহা ও সব্যসাচী ঘোষ
মালবাজার শেষ আপডেট: ২৩ নভেম্বর ২০১৪ ০৩:০৪
Share: Save:

খুব বড় মাপের শিল্পপতি হওয়ার স্বপ্ন দেখতেন। কিন্তু আয়ের সঙ্গে ব্যয়ের সঙ্গতি কখনও ছিল না রাজেশ ঝুনঝুনওয়ালার। ফলে একটার পর একটা বড় মাপের প্রকল্পের রূপরেখা তৈরি করতেন, কিন্তু তার বেশির ভাগই দিনের আলো দেখত না।

এমনই জানাচ্ছেন রাজেশের পরিবারের সদস্যরা। এমনকী শনিবার বেলা আড়াইটেতেও এক আত্মীয়কে রাজেশ বলেছিলেন চা বাগানে বড় মাপের পর্যটন কেন্দ্র গড়ার পরিকল্পনার কথা। সে জন্য তিনি কী ভাবে, কোথা থেকে, কত টাকা জোগাড় করবেন তা নিয়ে হিসেবও কষেছিলেন। শনিবার রাত ১০টায় মালবাজার থানা চত্বরে রাজেশের রক্তাক্ত দেহের সামনে দাড়িয়ে তাঁর খুড়তুতো ভাই অমিত অগ্রবাল বলেন, “খুব তাড়াতাড়ি বড় শিল্পপতি হওয়ার স্বপ্ন ছিল ওর। অনেক হিসেব কষেছিল, কোনও হিসেবই মিলল না।” উন্মত্ত শ্রমিকদের রোষে প্রাণ হারাতে হল রাজেশকে।

মালবাজারে তাঁর পরিচিত কয়েকজন ব্যবসায়ী জানাচ্ছেন, বাজারে অনেক ধারদেনাও রয়েছে রাজেশের। এক প্রকল্পের টাকা নিয়ে অরেকটি নতুন প্রকল্প করতে গিয়ে অনেক সময়েই দেনায় জর্জরিত হয়েছেন। ওঁর বাল্যবন্ধু রাজেশ অগ্রবাল বলেন, “ও প্রচন্ড উচ্চাকাঙ্খী ছিল। ভয়ডর বলতে কিছুই ছিল না।”

রাজেশের জন্ম মালবাজারেই। মালবাজারের সিজার স্কুলে পড়াশোনা। পৈতৃক সূত্রে চা বাগানের ব্যবসায় নেমেছিলেন তিনি। পরে সিকিমে হোটেল করতে গিয়ে আর্থিক নয়ছয়ের অভিযোগে জড়িয়ে পড়েন। আশির দশক থেকে কলকাতায় পাকাপাকি ভাবে থাকতে শুরু করেন। সেখানে রয়েছেন স্ত্রী ঋতিকা, চার বছরের মেয়ে এবং অসুস্থ মা। এ দিনের ঘটনার কথা শুনে ভেঙে পড়েছেন তাঁরা। মালবাজারের আত্মীয়দের সঙ্গে যোগাযোগ করে দেহটি যাতে কলকাতায় দ্রুত পাঠানো হয় তার ব্যবস্থা করতে অনুরোধ করেছেন।

রাজেশ যে বাগান চালাতেন, কী বলছেন সেই বাগানের শ্রমিকরা?

সিটু, তৃণমূল প্রভাবিত চা শ্রমিক সংগঠনের সদস্যদের কয়েকজন জানান, ওই বাগানে এসে মাঝেমাঝেই থাকতেন মালিক রাজেশ। তাঁদের সঙ্গে হাসিঠাট্টাও করতেন। কয়েকজন শ্রমিক বলেন, “এখানে দেশ বিদেশের পর্যটকদের আনা হবে, বাগান বড় হবে, এ সব গল্প তিনি করতেন। কিন্তু নিয়মিত রেশন দিতে পারতেন না। মজুরিও প্রতি মাসে দিতে পারতেন না।” শ্রমিকদের কয়েকজনের বক্তব্য, রাজেশের কথাবার্তা ভাল হলেও বেহিসেবি ছিলেন। তাই বাগানে একটি চা তৈরির কারখানা অবধি করতে পারেননি। বলেছিলেন আগামী বছর তিনি কারখানা করবেন। তার আগেই এ সব ঘটে গেল।

অন্য বিষয়গুলি:

murder case tea garden owner rajesh jhunjhunwala
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy