কেটে গিয়েছে প্রায় ৩৬ ঘণ্টা। কিন্তু স্কুল সার্ভিস কমিশন বা এসএসসি-র দফতরে চাকরিপ্রার্থীদের আন্দোলন-পরিস্থিতি বদলায়নি। বুধবারেও সল্টলেকে এসএসসি-র দফতরে কমিশনের চেয়ারম্যান সুবীরেশ ভট্টাচার্যের ঘরের সামনে বসে রইলেন অনশনরত প্রার্থীরা। মেধা-তালিকায় ওই সব প্রার্থীর নাম থাকা সত্ত্বেও তাঁদের স্কুলশিক্ষক-পদে নিয়োগের কোনও উপায় নেই বলে জানিয়েছে কমিশন।
শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ও জানিয়েছেন, কমিশনের নিয়মবিধি মেনে ওই আন্দোলনকারীদের দাবির ব্যাপারে কিছু করা সম্ভব নয়। কিন্তু অনশনকারীরা অনড়। চাকরির দাবির সুরাহা না-হওয়া পর্যন্ত তাঁরা আন্দোলন চালিয়ে যেতে বদ্ধপরিকর। তাঁরা জানান, এ দিন বিকেলে দু’জন আন্দোলনকারী অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাঁদের বিধাননগর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। প্রবীর কয়াল নামে অন্য এক জন আগে থেকেই হাসপাতালে ভর্তি আছেন। রামপ্রসাদ মণ্ডল নামে আরও এক আন্দোলনকারী রাতে অনশনে যোগ দেন।
এসএসসি নিয়োগ-পরীক্ষা নিয়ে যে-মেধা তালিকা প্রকাশ করেছে, তাতে নাম থাকা সত্ত্বেও তাঁদের চাকরি দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ তুলে প্রায় এক বছর ধরে আন্দোলন করছেন এক দল প্রার্থী। কলেজ স্কোয়ার ও ধর্মতলায় অবস্থান, মিছিল ইত্যাদি করার পরে ওই প্রার্থীরা আক্ষরিক অর্থেই তাঁদের আন্দোলন তুলে নিয়ে যান একেবারে কমিশনের দফতরের অন্দরে। মঙ্গলবার বিকেলে শ’খানেক আন্দোলনকারী ১৪৪ ধারা ভেঙে এসএসসি ভবনের ভিতরে ঢুকে পড়েন। তাঁদের মধ্যে জনা পঁচিশ প্রার্থী বসেন অনশনে। বুধবার ফের আরও অন্তত ১৫ জন অনশনে যোগ দেন বলে দাবি আন্দোলনকারীদের।
এর আগে ওই প্রার্থীদের অবস্থান-মঞ্চে বিভিন্ন রাজনৈতিক শিবিরের নেতাদের দেখা গিয়েছে। শিক্ষামন্ত্রী নিজেও সহানুভূতির সঙ্গে তাঁদের দাবিদাওয়ার কথা শুনেছেন। কিন্তু কমিশনের নিয়মবিধি মেনে ওই প্রার্থীদের দাবির সুরাহা করা যাবে না বলেও জানিয়ে দিয়েছেন তিনি। প্রার্থীরা অনশন চালিয়ে গেলেও এ দিন প্রশাসন বা এসএসসি-কর্তৃপক্ষের তরফে কেউ আন্দোলনকারীদের সঙ্গে যোগাযোগ করেননি। কমিশনের দফতর থেকে আন্দোলনকারীদের জোর করে তুলে দেওয়া হবে কি না, তা নিয়ে পুলিশও দোটানায়। পুলিশি সূত্রের খবর, এ ব্যাপারে উঁচু মহলের সিদ্ধান্তের দিকেই তাকিয়ে আছেন বিধাননগর কমিশনারেটের কর্তারা।
প্রশ্ন উঠছে, আন্দোলনকারীরা আদালতে যাচ্ছেন না কেন?
আন্দোলনকারী প্রার্থীদের তরফে ইন্দ্রাণী বাগচী বলেন, “আদালতে গেলে দেরি হয়ে যেত। তাই আর আইনের পথ নেওয়া হয়নি। দেড় বছর ধরে অপেক্ষা করে থাকতে হয়েছে। আমরা আর অপেক্ষা করতে পারছি না। তাই এই রাস্তা নেওয়া হয়েছে।”
কিন্তু ১৪৪ ধারার নিষেধাজ্ঞা ভেঙে অফিসে ঢুকে এই অনশন আন্দোলন যে উচিত নয়, শিক্ষামন্ত্রী নিজেও তা জানিয়ে দিয়েছেন। ক্ষুব্ধ প্রার্থীদের বক্তব্য, মেধা-তালিকায় তাঁদের পরে ঠাঁই পাওয়া অনেক প্রার্থী নিয়োগপত্র পেয়ে গিয়েছেন। অথচ তাঁরা তালিকার উপর দিকে থাকা সত্ত্বেও চাকরি পাননি। এটা তো বঞ্চনা! এর প্রতিকার না-হওয়া পর্যন্ত তাঁরা আন্দোলনের পথ ছাড়বেন না।
কমিশন-প্রধান সুবীরেশবাবু অবশ্য বলছেন, কোনও যোগ্য প্রার্থীকেই বঞ্চিত করা হয়নি। যা কিছু নিয়োগ হয়েছে, সব নিয়ম মেনেই। কমিশনের খবর, নিয়ম মেনে ১০০ পদের জন্য ১৫০ জনের নাম দেওয়া হয় মেধা-তালিকায়। তাই তালিকাভুক্ত সব প্রার্থীরই চাকরি পাওয়ার কথা নয়। সেই জন্য এই আন্দোলনের যুক্তি নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন অনেকে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy