Advertisement
২৬ নভেম্বর ২০২৪

সহ্যাদ্রির বুকে একাই দৌড়ে ৬০০ কিলোমিটার পাড়ি

পাহাড়ি পথে দৌড় অর্থাৎ ‘ট্রেল রানিং’ এ দেশে জনপ্রিয় হতে শুরু করেছে।

অভিযাত্রী: সহ্যাদ্রি পর্বতমালায় অভিষেক। নিজস্ব চিত্র

অভিযাত্রী: সহ্যাদ্রি পর্বতমালায় অভিষেক। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ০৪ জানুয়ারি ২০২০ ১০:৩০
Share: Save:

অভয়ারণ্যের ভিতর দিয়ে দৌড়েছেন দেড় দিন। রাত কাটাতে হয়েছে পাহাড়ের গুহাতেও। দিনে গরম এতটাই বেশি ছিল যে পুরনো জুতোতেও বারবার ফোস্কা পড়েছে পায়ে। এ ভাবেই মাত্র ১২ দিনে সহ্যাদ্রি পর্বতমালার ৬০০ কিলোমিটার পথ সম্পূর্ণ একা দৌড়ে পেরোলেন কলকাতার ছেলে অভিষেক তুঙ্গ। শুক্রবার অভিযান শেষে পুণে থেকে ‘ট্রেল রানার’ অভিষেক বলছেন, ‘‘ট্রান্স হিমালয় দৌড়ে পার হতে পারি কি না, এটা তারই পরীক্ষা ছিল।’’

পাহাড়ি পথে দৌড় অর্থাৎ ‘ট্রেল রানিং’ এ দেশে জনপ্রিয় হতে শুরু করেছে। সাধারণত পাহাড়ের বুকে পাকা রাস্তা ছেড়ে উঁচু-নিচু হাঁটাপথ ধরে দৌড়ে যাওয়াকেই বলে ‘ট্রেল রানিং’। বছর আড়াই আগে দৌড় শুরু করার পর থেকে বাঘা যতীনের বাসিন্দা, কলেজশিক্ষক অভিষেকেরও লক্ষ্য ছিল অন্য রকমের অ্যাডভেঞ্চার। তাই ট্রেল রানিংয়ে হাতেখড়ি। এ বারের ছুটিতে তাঁর লক্ষ্য ছিল গুজরাত-মহারাষ্ট্রের সহ্যাদ্রি পর্বতমালা। ২৯ বছরের এই দৌড়বীর বলছেন, ‘‘৬০০ কিলোমিটারের এই রুটে নির্দিষ্ট কোনও পথ নেই। নিজের মতো করে ম্যাপ দেখে রুট বানিয়েছিলাম। মোবাইলের টাওয়ার ছিল না। রাত কেটেছে কখনও পাহাড়ের উপরের মন্দিরে, কখনও গুহায়। সঙ্গী বলতে শুধু ব্যাকপ্যাক।’’ সাধারণত ট্রেল রানিংয়ে ওজন নিতে না হলেও তাঁকে বইতে হয়েছে পাঁচ কেজির ব্যাকপ্যাক।

কেমন সে দৌড়? ২৩ ডিসেম্বর গুজরাতের নবপুর থেকে যাত্রা শুরু করেন অভিষেক। গড় গতিবেগ ঘণ্টায় প্রায় ৬ কিলোমিটার। প্রথম দিনেই পথে পড়ে পূর্ণা অভয়ারণ্য। জঙ্গলের মধ্যে দিয়ে এক দিনে পেরোতে হয় ৫৫ কিলোমিটার পথ! অভিষেকের কথায়, ‘‘জঙ্গল থেকে বেরোনোর পথ কোন দিকে, তা না জেনেই দৌড়ে গিয়েছি। বিপদে পড়লে ভরসা উপস্থিত বুদ্ধি। সে অভিজ্ঞতা বলে বোঝানোর নয়। তবে অভয়ারণ্যের মধ্যে রাত কাটিয়েছিলাম একটি গ্রামে।’’ ১২ দিনের যাত্রাপথে পড়েছে উঁচু জলপ্রপাত, কেল্লাও। মহারাষ্ট্রের লোনাভালায় পৌঁছে দৌড় শেষ। খাবার বলতে কখনও এনার্জি বার, কখনও ঝর্নার জল। শেষ দু’দিন ফাঁকা জলের বোতল নিয়েই দৌড়ে যাওয়া। লেপার্ডের দেখা না পেলেও আদিবাসীদের ভালবাসার ছোঁয়া এ অভিযানের বড় পাওনা বলে জানাচ্ছেন অভিষেক।

এর আগে দৌড়ে ১২ ঘণ্টায় মানেভঞ্জন থেকে সান্দাকফু হয়ে গোর্খে পৌঁছেছেন অভিষেক। দৌড়েছেন গোয়েচা লা রুটেও। বাংলার অ্যাডভেঞ্চার জগতে অভিষেকের ট্রেল রানিং নতুন দিশা দেখাচ্ছে বলে মনে করছেন পর্বতারোহী রুদ্রপ্রসাদ হালদার। তাঁর কথায়, ‘‘বাংলার অ্যাডভেঞ্চার স্পোর্টসে অভিষেক নতুন আইকন।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Mountaineer Western Ghats
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy