Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
Lesbian love

Lesbian love: ‘সমকামী সম্পর্ক’ ছেড়ে পুরুষে আকৃষ্ট বান্ধবী! ইছাপুরে গিয়ে ‘আত্মঘাতী’ ব্যারাকপুরের তরুণী

চর্চিতার বান্ধবীর মা বলেন, ‘‘ওদের মধ্যে কিছু দিন হল কথাবার্তা বন্ধ। চর্চিতা আমার মেয়েকে বলত, ‘আমার সঙ্গে কথা বল, না হলে আমি মরে যাব।’

চর্চিতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

চর্চিতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
ইছাপুর শেষ আপডেট: ০৮ মে ২০২২ ১৭:৪০
Share: Save:

বান্ধবীর প্রেমে পড়েছিলেন বছর কুড়ির তরুণী। তাঁকে ছাড়া বাঁচতে পারবেন না বলে পরিবারকে জানিয়েছিলেন। তবে কিছু দিন ধরে আচমকাই কথাবার্তা বন্ধ করে দেওয়ায় ইছাপুরে সেই বান্ধবীর বাড়িতে ছুটে গিয়েছিলেন তিনি। তাঁর সঙ্গে কথা বলার জন্য বার বার অনুরোধ করলেও সাড়া মেলেনি। অভিযোগ, এর কিছু ক্ষণের মধ্যেই বান্ধবীর বাড়িতে গায়ে আগুন দিয়ে আত্মঘাতী হন ব্যারাকপুরের ওই তরুণী। যদিও ওই তরুণীর পরিবারের পাল্টা দাবি, এই সম্পর্ক ছেড়ে বেরিয়ে আসতে চেয়েছিলেন ওই বান্ধবী। সে জন্যই বাড়িতে ডেকে নিয়ে গিয়ে তাঁদের মেয়েকে খুন করা হয়েছে। শনিবার রাতে ইছাপুরের আনন্দমঠ সি ব্লকের এই ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।

পুলিশ সূত্রে খবর, মৃতার নাম চর্চিতা বন্দ্যোপাধ্যায় (২০)। তাঁর বাড়ি ব্যারাকপুরের পঞ্চাননতলায়। শনিবার রাতে নোয়াপাড়া থানা এলাকায় ইছাপুর আনন্দমঠ সি ব্লকে মৃতার বান্ধবীর বাড়ি থেকে তাঁর ঝলসানো দেহ উদ্ধার করা হয়েছে। সেই অবস্থায় চর্চিতাকে উদ্ধার করে ব্যারাকপুর বি এন বসু হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।

চর্চিতার বান্ধবী তথা ওই উচ্চমাধ্যমিক পড়ুয়া জানিয়েছেন, ফেসবুকে আলাপের পর তাঁদের মধ্যে বন্ধুত্ব হয়েছিল। তিনি বলেন, ‘‘চর্চিতার সঙ্গে বন্ধুত্ব গড়ে উঠেছিল। ও আমার বাড়ি আসত। আমিও ওর বাড়িতে যেতাম। তবে কিছু দিন হল আমাদের কথাবার্তা বন্ধ ছিল।’’ তাঁর দাবি, শনিবার রাতে বাড়িতে এসে কথা বলার জন্য পীড়াপীড়ি করতে থাকেন চর্চিতা। তবে চর্চিতার সঙ্গে কথা বলতে রাজি ছিলেন না তিনি। তাঁর কথায়, ‘‘শনিবার রাতে বাড়িতে ফিরে এসে দেখি, চর্চিতা দাঁড়িয়ে রয়েছে। আমাকে বলছিল, ‘তুই শুধু কথা বল। তোর সঙ্গে কথা না বলে আমি থাকতে পারব না।’ তখন আমি কথা বলতে রাজি হইনি। এর পর আমাকে আর মাকে বলে ও চলে যায়।’’

কিছু ক্ষণ বাদে তাঁর বন্ধু বিজয় চিৎকার করতে থাকেন বলে দাবি করেছেন মৃতার বান্ধবী। দেখা যায়, ওই বান্ধবীর বাড়ির ওপরতলায় আগুন জ্বলছে। অভিযোগ, নিজের বাড়ি ফিরে না গিয়ে ওই ঘরেই দরজা বন্ধ করে গায়ে আগুন লাগিয়ে আত্মঘাতী হয়েছেন চর্চিতা। সেখান থেকে ধোঁয়া বার হতে দেখে পাড়ার ছেলেরা ছুটে আসেন। এর পর ঝলসানো অবস্থায় চর্চিতাকে হাসপাতালে যাওয়া হলে সেখানে চিকিৎসকেরা মৃত তাঁকে বলে ঘোষণা করেন।

চর্চিতার বান্ধবী তাঁর ‘সম্পর্ক’ ছেড়ে কি বেরিয়ে যেতে চেয়েছিলেন? সে জন্যই কি ‘আত্মঘাতী’ হয়েছেন চর্চিতা? নাকি তাঁকে খুন করা হয়েছে? প্রশ্ন উঠছে। চর্চিতার মা’র দাবি, ‘‘আমার মেয়ে একটা মেয়েকে ভালবাসে। আমরা বোঝাতাম, মেয়ে-মেয়েতে ভালবাসা হয় না। আমার মেয়ে ইউটিউব-মোবাইল দেখিয়ে বলত, ‘মা, দেখো এ রকম লেসবিয়ান সম্পর্ক অনেক রয়েছে। আমি ওকে নিয়ে বাঁচতে চাই। আমাকে তোমরা মেনে নাও।’ আমরা তা-ই মেনে নিয়েছিলাম।’’ মহিলার আরও দাবি, ‘‘মেয়েটি আমাদের বাড়িতে দু’বছর ধরে আসত। আমার মেয়ে ওকে অনেক জিনিসও কিনে দিয়েছে। আমি জিজ্ঞাসা করাতে ওই মেয়েটি বলেছিল, ‘কাকিমা, আমি আপনার মেয়েকে ভালবাসি!’ তবে কয়েক দিন ধরে ফোনে আমার মেয়েকে বলছিল, ‘আমি এই জীবন চাই না। তুই আর আমার সঙ্গে কথা বলবি না।’ ওকে ডেকে নিয়ে গিয়ে খুন করিয়েছে। বিজয়, শুভ (ইছাপুরের স্থানীয় যুবক) বলছিল, ৪৫ মিনিট ধরে আমার মেয়ের সঙ্গে ওই মা-মেয়ের কথা হয়েছে। এ নিয়ে আমি থানায় যাব।’’

চর্চিতার বান্ধবীর দাবি, ‘‘চর্চিতা পড়াশোনা করত না। তবে বিউটিশিয়নের কোর্স করছিল। আমি কেরিয়ারে মন দিতেই চর্চিতার সঙ্গে কথা বন্ধ করেছিলাম।’’ অন্য দিকে, তাঁর মা বলেন, ‘‘আমার মেয়ের সঙ্গে চর্চিতার অনেক দিন ধরে বন্ধুত্ব। তবে ওদের মধ্যে কিছু দিন হল কথাবার্তা বন্ধ রয়েছে। চর্চিতা আমার মেয়েকে বলত, ‘আমার সঙ্গে কথা বল, না হলে আমি মরে যাব।’ ওকে বুঝিয়েছিলাম, ‘আজ কথাবার্তা বন্ধ তো কী হয়েছে! পরে নিশ্চয়ই কথা বলবে।’ শনিবারও আমাদের বাড়ি এসে একই কথা বলছিল। তবে আমাদের বলে ও ফিরে যায়। আমি ঘরের কাজে ব্যস্ত ছিলাম। হঠাৎ চিৎকার শুনে দেখি, বাড়ি থেকে ধোঁয়া বার হচ্ছে। দরজা ভেঙে ঘরে ঢুকে ওর দেহ বার করা হয়।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Lesbian love LGBT LGBTQUIA Ichapur
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy