Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪
Medical Negligence

প্রসবের পর চলাফেরার শক্তি হারিয়েছেন বধূ! চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ পরিবারের

স্ত্রী ও প্রসূতি রোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক স্বপন বিশ্বাসের তত্ত্বাবধানে সিজ়ারের পর সন্তানের জন্ম দেন ২৭ বছরের গৌরী সরকার। অভিযোগ, অস্ত্রোপচারের ৭২ ঘণ্টা পর থেকে তাঁর নিম্নাঙ্গে সাড় ফেরেনি।

Representational picture of young mother

কলকাতা এবং বেঙ্গালুরুতে চিকিৎসা করানো হলেও গৌরী সরকারের দু’পায়ের সাড় ফেরেনি বলে দাবি। প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
ডোমকল শেষ আপডেট: ২৪ মার্চ ২০২৩ ১২:০১
Share: Save:

প্রসবের আগে সুস্থ-সবল ছিলেন। তবে সন্তানের জন্মের পর থেকেই হাঁটাচলা করতে পারছেন না। সে জন্য হুইল চেয়ারই ভরসা। প্রসবের সময় চিকিৎসকদের গাফিলতির জেরেই শরীরের নিম্নাঙ্গ পুরোপুরি অসাড় হয়ে গিয়েছে বলে দাবি মুর্শিদাবাদের ডোমকলের এক বধূর। এ নিয়ে জেলা তথা রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরে চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছে বধূর পরিবার। যদিও অভিযুক্ত চিকিৎসকদের দাবি, অভিযোগ পুরোপুরি ভিত্তিহীন। একে ‘ব্যতিক্রমী ঘটনা’ বলেও দাবি তাঁদের।

স্থানীয় সূত্রে খবর, প্রসবের জন্য ডোমকলের এক বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল গৌরী সরকার নামে এলাকার এক বধূকে। স্ত্রী ও প্রসূতি রোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক স্বপন বিশ্বাসের তত্ত্বাবধানে সিজ়ারের পর সন্তানের জন্ম দেন ২৭ বছরের গৌরী। সিজ়ারের জন্য গৌরীর অ্যানাস্থেশিয়া করেন অভিজিৎ গুপ্ত নামে আর এক চিকিৎসক। অভিযোগ, সিজ়ারিয়ান সার্জারির ৭২ ঘণ্টা পর থেকে গৌরীর নিম্নাঙ্গে আর সাড় ফেরেনি। এ নিয়ে ওই দুই চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তাঁরা বিষয়টিকে গুরুত্ব দেননি বলেও পরিবারের অভিযোগ। গৌরী বলেন, ‘‘সিজ়ারের পর সন্তানের জন্মের দু’দিন কেটে গেলে আমার পায়ে কোনও অনুভূতি ছিল না। আমি এখনও নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারি না। হুইল চেয়ারেই চলাফেরা করতে হয়। চিকিৎসকদের গাফিলতিতেই আমাকে পঙ্গু হয়ে জীবন কাটাতে হচ্ছে। ওই চিকিৎসকদের কঠোর শাস্তি চাই।’’ স্ত্রীর মতোই চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন স্বামী সৌরভ সরকার। তিনি বলেন, ‘‘ওই নার্সিংহোমে আমার স্ত্রীর সিজ়ার করানোর জন্য পরামর্শ দিয়েছিলেন চিকিৎসক স্বপন বিশ্বাস। তাঁর পরামর্শ মেনেই স্ত্রীকে এই নার্সিংহোমে ভর্তি করি। কিন্তু তার পরিণতি যে এমন হবে, তা কল্পনাও করিনি।’’

চিকিৎসার জন্য কলকাতার ইনস্টিটিউট অফ নিউরোসায়েন্সেস-এ নিয়ে যাওয়া হয়েছিল গৌরীকে। এর পর বেঙ্গালুরুতেও চিকিৎসা করানো হয়েছে। তবে কোনও ভাবেই তাঁর দু’পায়ের সাড় ফেরেনি বলে দাবি। সৌরভ বলেন, ‘‘কলকাতা এবং বেঙ্গালুরুতে চিকিৎসা করানো হলেও পুরোপুরি সুস্থ হয়ে উঠেনি আমার স্ত্রী। আমি জেলা ও রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরে অভিযোগ জানিয়েছি। ওই চিকিৎসকদের কঠোর শাস্তি চাই।’’

গৌরীর শারীরিক অবস্থার জন্য অন্য সমস্যা দায়ী বলে দাবি স্ত্রী ও প্রসূতি রোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক স্বপন বিশ্বাসের। তিনি বলেন, ‘‘চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। ওই মহিলার শিরদাঁড়ায় আগে থেকে সমস্যা থাকায় তাঁর শরীরের নিম্নাংশ অসাড় হয়ে গিয়েছে।’’ যদিও এ বিষয়ে তদন্ত করা হবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন মুর্শিদাবাদ জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সন্দীপ সান্যাল। তিনি বলেন, ‘‘অভিযোগ পেলে নিঃসন্দেহে তদন্ত করা হবে। দোষী প্রমাণিত হলে শাস্তিও পাবেন তাঁরা।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Medical Negligence Domkal Cesarean Delivery
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE