এই বাড়িতেই ছিল দুষ্কৃতীরা। ছবি: কৌশিক সাঁতরা।
খড়্গপুরের নার্সিংহোমে কাজ করার সময় দুষ্কৃতীদলের এক সদস্যের সঙ্গে আলাপ হয় তার। বুধবার শ্রীনু নায়ডুর উপর হামলা চালাতে আসা দলেও ছিল ওই দুষ্কৃতী। হামলার সময় দলেরই অন্য এক সদস্যের হাতে গুলি লাগে। পূর্ব পরিচয়ের সূত্রে গুলিবিদ্ধ ব্যক্তির চিকিৎসার জন্য ওই দুষ্কৃতী ফোন করে নার্সিংহোম কর্মীকে। বরুণ ঘোষ নামে ওই কর্মী এখন ঘাটালের একটি নার্সিংহোমে কাজ করে। জখম ব্যক্তি ঘাটালের দ্বন্দ্বিপুরে বরুণের বাড়িতেও চলে যায়। দুষ্কৃতীকে বাড়িতে ঠাঁই দিয়েই কাল হল বরুণের। বৃহস্পতিবার বিকেলে তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
মোবাইলের টাওয়ার লোকেশন খতিয়ে দেখে ওই দিন বিকেলে ঘাটালের কুশপাতা থেকে বরুণ ও এক দুষ্কৃতীকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ জানতে পারে, শ্রীনুর উপর হামলাকারী দলে থাকা গুলিবিদ্ধ এক দৃষ্কৃতী বরুণের বাড়িতে আছে। তার সঙ্গে রয়েছে আরও একজন দুষ্কৃতী। পুলিশ দ্বন্দ্বিপুরে বরুণের বাড়ি গিয়ে ওই দু’জন দুষ্কৃতীকেও গ্রেফতার করে। ঘাটাল থেকে ধৃত চার দুষ্কৃতীর মধ্যে শুক্রবার শুধু বরুণের পরিচয়ই জানিয়েছে পুলিশ। তদন্তের স্বার্থে বাকিদের পরিচয় জানানো হয়নি।
বুধবার ঠিক কী হয়েছিল?
পুলিশ সূত্রে খবর, ওই দিন শ্রীনুকে গুলির ঘটনার পরই এক দুষ্কৃতী ফোন করে বরুণকে জানায়, তাদের দলের একজনের গুলি লেগেছে। সে জখম ব্যক্তির চিকিৎসার ভার বরুণকে নেওয়ার কথা বলে। বরুণ রাজি হয়ে যাওয়ায় বুধবার রাতেই জখম ব্যক্তিকে আর একজন ঘাটালে যায়। প্রথমে ঘাটালের নার্সিংহোমেই আহতের গুলি বের করার চেষ্টা করে বরুণ। কিন্তু নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ রাজি না হওয়ায় ওই দুষ্কৃতীকে বরুণ দ্বন্দ্বিপুরে বাড়িতে নিয়ে আসে। শুক্রবার মেদিনীপুরে সাংবাদিক বৈঠকে জেলা পুলিশ সুপার ভারতী ঘোষ জানান, বরুণ নিজেই অস্ত্রোপচার করে গুলি বের করার প্রস্তুতি নেয়। সে চিকিৎসার সমস্ত সরঞ্জামও কিনে আনে। যদিও গুলি বের করতে পারেনি।
কে এই বরুণ?
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে খবর, বছর পনেরো আগে ঘাটালের অন্য একটি নার্সিংহোমে কাজ করার সময় সেখানকারই এক রোগিণীকে বিয়ে করে সে বেপাত্তা হয়ে যায় বলে অভিযোগ। কিছুদিনের মধ্যেই সেই সম্পর্ক ভেঙেও যায়। ফের বিয়ে করে সে। তার বিরুদ্ধে একবার বধূ নিযার্তনের অভিযোগও উঠেছিল। পুলিশের হাতে ধরা পড়ে কিছুদিন জেলও খাটে সে। অভিযোগ, মা ও দাদা-বৌদির সঙ্গেও বরুণের সম্পর্ক ছিল না। সুসম্পর্ক ছিল না পড়শিদের সঙ্গেও।
সম্প্রতি বরুণ আবার বিয়ে করে। স্ত্রী ও ছেলেকে নিয়ে দ্বন্দ্বিপুরে অন্য একটি বাড়িতে থাকত সে। শুক্রবার বরুণের বাড়ি গেলে তার স্ত্রী পুতুল ঘোষ বলেন, ‘‘কী বলব। সবই তো জানেন। দোষ করলে শাস্তি পাবে।’’ বরুণের মা চণ্ডি ঘোষের কথায়, “আমি কিছুই জানি না। তবে কয়েকজন অপরিচিত যুবক ছেলের বাড়িতে ছিল। পুলিশ তাদের ধরে নিয়ে গিয়েছে। ছেলেকেও পুলিশ ধরেছে। কেন পুলিশ এসেছিল, বলতে পারব না।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy