Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Human Trafficking

অভিযোগ তুলতে ‘হুমকি’ পাচার হওয়া তরুণীকে 

এক বার নয়, এর আগেও তাঁকে হুমকি দেওয়া হয়েছে বলে জানাচ্ছেন উদ্ধার হওয়া ওই তরুণী।

—প্রতীকী চিত্র।

—প্রতীকী চিত্র।

দীক্ষা ভুঁইয়া
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০১:২৮
Share: Save:

কাজের টোপ দিয়ে বসিরহাটের মেয়েকে পাচার করা হয়েছিল ভিন্‌ রাজ্যে। পরে উদ্ধার করা হয়। জেলে যায় চার অভিযুক্তও। সেই মামলার চার্জশিটও পেশ হয়েছে ইতিমধ্যে। তবে সেই অভিযোগ তুলে নেওয়ার জন্য মোটরবাইকে করে এসে দু’জন ওই নির্যাতিতাকে হুমকি দিয়ে গিয়েছে বলে অভিযোগ।

এক বার নয়, এর আগেও তাঁকে হুমকি দেওয়া হয়েছে বলে জানাচ্ছেন উদ্ধার হওয়া ওই তরুণী। হুমকির জেরে গত ফেব্রুয়ারিতে ওই তরুণীকে পুলিশি নিরাপত্তা দিতে বলেছিল বসিরহাট আদালত। কিন্তু অভিযোগ, প্রথম প্রথম পুলিশি পাহারা থাকলেও পরে তা আর দেয়নি বসিরহাট থানা। ফলে ওই তরুণীর নিরাপত্তা নিয়ে চরম উৎকণ্ঠায় ভুগছে তাঁর পাশে দাঁড়ানো স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা।

উত্তর ২৪ পরগনার ওই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার তরফে বিকাশ দাস জানাচ্ছেন, ২০১৬ সালে কিশোরী অবস্থায় পাচার করা হয়েছিল ওই মেয়েটিকে। বসিরহাটের একটি নার্সিংহোমে সে সময়ে আয়ার প্রশিক্ষণ নিতেন তিনি। সেখানে চিকিৎসাধীন হাসিরুল লস্কর নামে এক মহিলার সঙ্গে পরিচয় হয় তাঁর। বারাসতের ভাল নার্সিংহোমে কাজ দেওয়ার নামে তাঁকে টোপ দেয় হাসিরুল ও তার স্বামী রফিকুল ইসলাম। এক দিন সেই নার্সিংহোমে নিয়ে যাওয়ার নাম করে মাঝপথে নাকে রুমাল চেপে অজ্ঞান করে প্রথমে মেয়েটিকে প্রথমে তারা আমদাবাদে পাচার করে দেয় তারা।

অভিযোগ, সেখানে ইশরাফুল নামে এক জনের কাছে বিক্রি করা হয় তাঁকে। সেখান থেকে ফের বিক্রি পুণের যৌনপল্লিতে। বসিরহাট থানায় অভিযোগ দায়ের করা হলেও তারা উদ্ধারের কোনও চেষ্টাই করেনি বলে অভিযোগ। পরে হাইকোর্টের নির্দেশে সিআইডি তদন্ত শুরু করে এবং পুণে থেকে উদ্ধার করা হয় ওই তরুণীকে। গ্রেফতার হয় পুণের যৌনপল্লির তিন মহিলা-সহ হাসিরুল, রফিকুল ও ইশরাফুল। বর্তমানে হাসিরুল এবং এক মহিলা জামিনে বাইরে থাকলেও বাকিরা সকলেই জেলে।

ওই তরুণী জানান, উদ্ধারের পরে চার্জশিট জমা দিয়ে আদালতে সাক্ষ্য দেওয়ার দিন ধার্য হতেই হুমকি দেওয়া শুরু হয়েছিল। অভিযোগ, ফেব্রুয়ারিতে প্রথমে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দেওয়া হয় তাঁকে। সে কথা আদালতে জানালে পুলিশি পাহারার নির্দেশ দেওয়া হয়। প্রথম প্রথম সেই পাহারা থাকলেও লকডাউন শুরু হতে আর কোনও পুলিশি নিরাপত্তা মেলেনি। এর মধ্যে গত ১ সেপ্টেম্বর দিদির সঙ্গে হাসপাতালে যাওয়ার পথে হেলমেটে মুখ ঢেকে মোটরবাইকে করে দু’জন এসে কেস তুলে নেওয়ার জন্য হুমকি দিয়ে যায় বলে অভিযোগ।

এই মামলার বিশেষ সরকারি কৌঁসুলি দেবরঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘কোভিডের কারণে এই মামলায় তরুণীর সাক্ষ্যদান পিছিয়ে গিয়েছে। সেই সুযোগেই পাচারকারীদের লোকজন হুমকি দিয়ে যাচ্ছে যাতে সাক্ষ্য দিতে না যান। তাতে তাদের সুবিধা হবে।’’ যদিও হুমকির মুখে পড়ে পিছু হটতে রাজি নন তরুণী। বসিরহাটের পুলিশ সুপার কঙ্করপ্রসাদ বারুই বলেছেন, ‘‘আদালতের তারিখ থাকলে সিআইডি-র তরফ থেকে আমায় বলা হয়। তখন পুলিশি পাহারায় নিয়ে যাওয়া হয়। তার পরেও যদি কোনও অসুবিধা হয় আমি অবশ্যই দেখে ব্যবস্থা করব।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Human Trafficking Crime Women
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy