Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Amartya Sen

মামলার মধ্যেই অমর্ত্য সেনকে ‘দোষী’ এবং ‘অপরাধী’ বলে দাবি করে বিবৃতি বিশ্বভারতীর

চলতি জানুয়ারিতে ‘প্রতীচী’ বাড়িতে গিয়ে যে দিন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে অমর্ত্যের হাতে জমির কাগজ তুলে দেন, তার পরে পরে মুখ্যমন্ত্রীকে আক্রমণ করেও বিবৃতি দিয়েছিল বিশ্বভারতী।

Amartya Sen

অমর্ত্য সেনকে ফের ‘দখলদার’ বলে আক্রমণ করল বিশ্বভারতী। —ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শান্তিনিকেতন শেষ আপডেট: ০৭ জুলাই ২০২৩ ০৬:৫৯
Share: Save:

জমি বিতর্ক প্রসঙ্গে বুধবার বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীকে নিশানা করেছিলেন অমর্ত্য সেন। বৃহস্পতিবার নাম না করে অমর্ত্য সেনকে ফের ‘দখলদার’ বলে আক্রমণ করল বিশ্বভারতী। যে বিষয়টি জেলার আদালতের বিচারাধীন, সেই বিষয়ে অমর্ত্যকে তাঁদের চোখে ‘দোষী’ এবং ‘অপরাধী’ দাবি করে একটি বিবৃতিতে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের হুঁশিয়ারি, ‘বিতর্কিত’ জমি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যে কোনও আইনানুগ পদক্ষেপ করতে পিছপা হবে না।

যে-ভাষা প্রয়োগ করা হয়েছে বিবৃতিতে, তার নিন্দা করেছেন বিশ্বভারতীর আশ্রমিক থেকে শুরু করে প্রাক্তনী, শিক্ষকদের একাংশ। চলতি জানুয়ারিতে ‘প্রতীচী’ বাড়িতে গিয়ে যে দিন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে অমর্ত্যের হাতে জমির কাগজ তুলে দেন, তার পরে পরে মুখ্যমন্ত্রীকে আক্রমণ করেও বিবৃতি দিয়েছিল বিশ্বভারতী। সেই বিবৃতির ভাষা নিয়েও নিন্দার ঝড় উঠেছিল। বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ অবশ্য নিজেদের অবস্থান থেকে এক চুলও সরার কোনও ইঙ্গিত দেননি। এ বারও অমর্ত্যকে যে ভাষায় আক্রমণ করা হয়েছে, তাতে স্তম্ভিত অনেকে।

বুধবার শান্তিনিকেতনের ‘প্রতীচী’ বাড়িতে বিশ্বভারতীর পড়ুয়াদের সঙ্গে আলাপচারিতায় জমি-বিতর্ক প্রসঙ্গে নোবেলজয়ী জানিয়েছিলেন, তাঁকে ‘অপমান’ করা খুব সহজ নয়। আশি বছর যেখানে তিনি থেকে এসেছেন, সেই ভিটে তাঁকে ‘উচ্ছেদ’ করার চেষ্টা চলছে বলেও অভিযোগ করেন। বিশ্বভারতীর বর্তমান পরিস্থিতি নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেন তিনি।

এ দিন বিশ্বভারতী পাল্টা বিবৃতি দিয়ে বলেছে, ‘বিশ্বভারতী কাউকে অপমান করে না। অপমান করার ইচ্ছাও পোষণ করে না। তবে, যদি কেউ মনে করেন যে, যে-হেতু তিনি জগৎবিখ্যাত শিক্ষাবিদ, তাই অন্যায় ভাবে বা আইনকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে বিশ্বভারতীর জমি দখল করবেন, তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন যে কোনও আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে পিছপা হবে না। তিনি যতই অন্যায় সমর্থনকারী চাটুকার দ্বারা সমর্থিত হোন না কেন, বিশ্বভারতী নিজের উদ্দেশ্য থেকে এক পা-ও সরবে না।’ নাম না-করে অর্থনীতিবিদের প্রতি কর্তৃপক্ষের কটাক্ষ, ‘বিশ্বভারতীর আজকের পরিস্থিতি নিয়ে কোনও পরিযায়ী পরিব্রাজকের মন্তব্যের ঘোরতর বিরোধী।’ তাঁদের অভিযোগ, ‘যিনি এই বক্তব্য সর্বসমক্ষে রাখছেন, তিনি এত দিন বিশ্বভারতীতে চলমান অশান্ত পরিবেশের ফসল তুলেছেন এবং বিশ্বে বিশ্বভারতীকে পণ্যদ্রব্য করে ফায়দা লুটেছেন।’ বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘এই সমস্ত মেকি রাবীন্দ্রিকদের যাতে এই পবিত্র স্থানে জায়গা না হয়, বিশ্বভারতী তার জন্য প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। বিশ্বভারতীর উপর যারা ভর করে তাঁদের পেট চালাচ্ছেন, তাঁদেরকে সাবধান হতে অনুরোধ জানাচ্ছি।’

অনেকেই বলছেন, এক অর্থে এটা অমর্ত্য এবং তাঁর সমর্থকদের প্রচ্ছন্ন হুঁশিয়ারি। প্রবীণ আশ্রমিক সুপ্রিয় ঠাকুর বলেন, “এই ভাষা যাঁরা প্রয়োগ করছেন, তাঁরা ওই জায়গাতেই নেমে এসেছেন এটা ধরে নিতে হবে।” আশ্রমিক তথা শান্তিনিকেতন ট্রাস্টের সম্পাদক অনিল কোনারের কথায়, “এই নিয়ে তর্ক-বিতর্ক করার কোনও জায়গায় নেই। কারণ বিষয়টি আদালতের বিচারাধীন রয়েছে। তবে বিশ্বভারতীর ভাষা তার রুচি সম্মত নয়।” অমর্ত্য সেনের ‘প্রতীচী’ বাড়ির দেখভালের দায়িত্বে থাকা গীতিকন্ঠ মজুমদার বলেন, “বিশ্বভারতী বিজ্ঞপ্তিতে যে ভাষা প্রয়োগ করেছে, তা নজিরবিহীন ও আইনগত অপরাধ। এই বিষয়ে প্রতিবাদ সংগঠিত হওয়া প্রয়োজন।”

অন্য বিষয়গুলি:

Amartya Sen Visva Bharati University
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy