Advertisement
E-Paper

অধীর অপেক্ষার অবসান, বিধানসভায় ফিরল কংগ্রেস, ‘মুর্শিদাবাদের চৌধুরী’ কি খানিক অক্সিজেন পেলেন?

নব্বইয়ের দশকের গোড়ায় আরএসপি ছেড়ে কংগ্রেসে যোগদান করেন অধীর চৌধুরী। তার পর শুধুই এগিয়েছেন নিজের রাজনৈতিক যাত্রাপথে। তবে তিনি প্রদেশ সভাপতি হওয়ার পরে শূন্য হয়ে যায় কংগ্রেস।

সাগরদিঘির উপনির্বাচনে জয়ের কৃতিত্ব অধীর দিয়েছেন কেন্দ্রীয় বাহিনী ও সাগরদিঘির সাধারণ মানুষকে।

সাগরদিঘির উপনির্বাচনে জয়ের কৃতিত্ব অধীর দিয়েছেন কেন্দ্রীয় বাহিনী ও সাগরদিঘির সাধারণ মানুষকে। বাইরন বিশ্বাসের ফেসবুক থেকে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০২ মার্চ ২০২৩ ১৭:৩২
Share
Save

হারতে হারতে পিঠ দেওয়ালে ঠেকে গিয়েছিল। নিজের ‘সাম্রাজ্যেও’ ভাঙন দেখছিলেন। শেষ পর্যন্ত নিজের ‘গড়’ থেকেই যেন প্রত্যাবর্তনের বার্তা দিলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। বৃহস্পতিবার সাগরদিঘির উপনির্বাচনে কংগ্রেসের জয়ের পরে আবার যেন মুর্শিদাবাদ জেলায় তাঁর নেতৃত্বের বিজয়কেতন ওড়ার নির্ঘোষ শোনা গেল তাঁর গলায়। কংগ্রেসের প্রার্থী বাইরন বিশ্বাসের জয় যখন নিশ্চিত, তখনই অধীর ঘোষণা করে দিলেন, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অপরাজেয় নন!’’

নব্বইয়ের দশকের গোড়ার দিকে আরএসপি ছেড়ে কংগ্রেসে যোগ দেন অধীর। তার পর শুধুই তিনি এগিয়ে গিয়েছেন নিজের রাজনৈতিক যাত্রাপথে। এখন গোটা রাজ্যে কংগ্রেস দুর্বল হলেও লোকসভায় দলের সংসদীয় নেতা অধীর। তবুও মুর্শিদাবাদ জেলা ‘হাতছাড়া’ হওয়ার আক্ষেপ ছিল তাঁর। গোটা রাজ্যে তো বটেই, নিজের জেলায় গত বিধানসভা নির্বাচনে একটিও আসন মেলেনি ‘হাত’ চিহ্নের। তাঁর নেতৃত্বেই শূন্যে পৌঁছে গিয়েছিল কংগ্রেস। এমন পরিস্থিতিতে সাগরদিঘির উপনির্বাচন যেমন ধাক্কা দিল শাসকদল তৃণমূলকে, তেমনই কি খানিক অক্সিজেন দিল বাম-কংগ্রেস জোট নেতৃত্বকে? আরও বেশি করে অধীরকে?

সাগরদিঘিতে উপনির্বাচন ঘোষণা হওয়ার পর থেকেই জয়ের জন্য ঝাঁপিয়েছিলেন অধীর। প্রার্থী মনোনয়ন থেকে শুরু করে বামেদের সমর্থন পেতে সব কিছুই করেছিলেন তিনি। তার পরে কখনও প্রার্থীকে নিয়ে, কখনও বা একা সাগরদিঘিতে ভোট চেয়েছেন দরজায় দরজায়। শুধু নেতৃত্ব দেওয়া নয়, ঘামও ঝরিয়েছেন। তাই বৃহস্পতিবার গণনাপর্ব যত এগিয়েছে, ততই মুখের হাসি চওড়া হয়েছে অধীরের।

১৯৯৬ সালে আত্মগোপন করে নবগ্রাম আসনে ভোটে লড়েছিলেন। জেতেনও। ১৯৯৯ সালে বহরমপুর লোকসভা থেকে প্রার্থী হয়ে প্রথম বারেই জয়। বামফ্রন্টের শাসনকালেও তাঁর ‘দুর্গ’ ছিল অটুট। পঞ্চায়েত, পুরসভা, বিধানসভা বা লোকসভা— সবেতেই অধীরের নেতৃত্বের কাছে হার মানত সেই সময়ের দোর্দণ্ডপ্রতাপ সিপিএম। কিন্তু ২০১১ সালে পালাবদলের পর ছন্দপতন হতে শুরু করে। ২০১১ সালে বিধানসভা ভোটে জোট করে কংগ্রেস-তৃণমূল লড়াই করলেও মুর্শিদাবাদে জোট না মেনে একক ভাবে ভোট করিয়েছিলেন অধীর। কংগ্রেস বিজয়ী হয়েছিল। অধীর সফল হয়েছিলেন।

২০১২ সালের সেপ্টেম্বর মাসে কংগ্রেসের সঙ্গে জোট ভেঙে যাওয়ার পর তৃণমূল নেতৃত্বের নজর পড়ে মুর্শিদাবাদে। ২০১৪ সালের লোকসভা ভোটে একক ভাবে প্রার্থী দিয়েও সুবিধা করতে পারেনি তৃণমূল। মাত্র ১৪ শতাংশ ভোট পায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল। ২০১৬ সালে একক ভাবে প্রথম বার বিধানসভা ভোটে মুর্শিদাবাদের ২২টি বিধানসভায় প্রার্থী দেয় তৃণমূল। ৩২.৪ শতাংশ ভোট পেয়ে জেলায় চারটি আসন দখল করে তারা। তার পরেই একে একে অধীরের বিশ্বস্ত অনুচররা কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিতে শুরু করেন। ক্রমশ জেলা পরিষদ, পঞ্চায়েত সমিতি, গ্রাম পঞ্চায়েত এবং পুরসভা হাতছাড়া হতে শুরু করে অধীরের। কংগ্রেস বিধায়কেরাও তৃণমূলে যোগ দেন। চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ে অধীরের নেতৃত্ব। যদিও কংগ্রেসের অভিযোগ ছিল, পুলিশ-প্রশাসনকে কাজে লাগিয়ে তৃণমূল অধীরের বিরুদ্ধে ‘রাজনৈতিক সাফল্য’ পেয়েছিল। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছেছিল যে, ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটে বহরমপুর আসনের অধীন সাতটি বিধানসভার পাঁচটিতেই পরাজিত হয়েছিলেন অধীর। শুধুমাত্র বহরমপুর ও কান্দি বিধানসভায় বড় ব্যবধান পেয়ে পঞ্চম বারের জন্য লোকসভার সাংসদ হন মুর্শিদাবাদের ‘মুকুটহীন নবাব’। তবে বিধানসভা ভোটে কংগ্রেস শূন্য হয়ে যাওয়া ছিল তাঁর কাছে বড় ধাক্কা। বৃহস্পতিবার সেই ধাক্কা খানিকটা কাটিয়ে উঠেছেন অধীর। রাজ্য বিধানসভায় ফিরেছে কংগ্রেস।

তবে সাগরদিঘির উপনির্বাচনে জয়ের কৃতিত্ব অধীর দিয়েছেন কেন্দ্রীয় বাহিনী ও সাগরদিঘির সাধারণ মানুষকে। তিনি বলেছেন, ‘‘কেন্দ্রীয় বাহিনীর উপস্থিতিতে নিরপেক্ষ ভোট হয়েছে সাগরদিঘিতে। তাই সাধারণ মানুষ ভোট দিতে পেরেছেন। সে কারণেই সেখানে সাধারণ মানুষের মতামতের প্রতিফলন হয়েছে। এমন নিরপেক্ষ ভোট হলে সর্বত্রই শাসকদলকে হারের সম্মুখীন হতে হবে।’’

Sagardighi By Election Adhir Chowdhry Congress

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

এটি একটি প্রিন্ট আর্টিক্‌ল…

  • এমন অনেক খবরই এখন আপনার হাতের মুঠোয়

  • সঙ্গে রোজ পান আনন্দবাজার পত্রিকার নতুন ই-পেপার পড়ার সুযোগ

  • ই-পেপারের খবর এখন শুধুই ছবিতে নয়, টেক্সটেও

প্ল্যান সিলেক্ট করুন

মেয়াদ শেষে নতুন দামে আপনাকে নতুন করে গ্রাহক হতে হবে

Best Value
এক বছরে

৫১৪৮

১৯৯৯

এক বছর পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।
*মান্থলি প্ল্যান সাপেক্ষে
এক মাসে

৪২৯

১৬৯

এক মাস পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।