মহুয়া মৈত্র। —গ্রাফিক শৌভিক দেবনাথ।
শনিবার ছবিটা ছিল এক রকম। রবিবার তা বদলে গেল। শনিবার তাঁর পাশে দাঁড়িয়ে লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লাকে চিঠি দিয়েছিলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি তথা লোকসভায় কংগ্রেসের নেতা অধীর চৌধুরী। সর্বদল বৈঠকে তাঁর হয়ে সরব হয়েছিলেন লোকসভায় তৃণমূলের দলনেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। তার পরে মহুয়া মৈত্রকে প্রশ্ন করা হয়েছিল সোমবার কী মনোভাব নিয়ে লোকসভায় ঢুকবেন? স্বভাবসিদ্ধ ঢঙে মহুয়ার জবাব ছিল, ‘‘যেমন সব সময় থাকি— হ্যাপি অ্যান্ড আপরাইট!’’
কিন্তু রবিবার চার রাজ্যের ভোটের ফলাফলে হিন্দিবলয়ে গেরুয়া ঝড়ের পর মৈত্রের মিত্রেরা কি আদৌ সোমবার ‘আপরাইট’ এবং ‘হ্যাপি’ হয়ে ঢুকবেন? নাকি বিজেপির বিপুল জয় খানিকটা বিমর্ষই রাখবে তাঁদের? আর ভিতরে ভিতরে খানিকটা স্নায়ুর চাপে রাখবে কৃষ্ণনগরের তৃণমূল সাংসদ মহুয়াকেও?
অধীর অবশ্য চাপের কথা মানতে চাননি। আনন্দবাজার অনলাইনকে রবিবার তিনি বলেন, ‘‘মহুয়ার বিষয়ে তো আমি খোলাখুলি যা বলার বলেছি। বিজেপি আলাদা করে উচ্ছ্বাস দেখাতে পারে। কিন্তু আমার কাছে ভোটের ফলের সঙ্গে এথিক্স কমিটির রিপোর্টের কোনও সম্পর্ক নেই।’’ কেন? অধীরের বক্তব্য, ‘‘আমি এথিক্স কমিটির কাজের প্রক্রিয়া, এক্তিয়ার ও আইন নিয়ে স্পিকারকে চিঠি লিখেছি। সেটা শনিবারও সত্য ছিল, রবিবারও সত্য, সোমেও সত্যই থাকবে।’’
তবে অনেকের মতে, সোমবার শীতকালীন অধিবেশনের প্রথম দিন বিজেপি সাংসদেরা লোকসভায় ঢুকবেন তিন রাজ্যে জয়ের ওম গায়ে মেখে। এর মধ্যে আবার দু’টি রাজ্য (রাজস্থান, ছত্তীসগড়) কংগ্রেসের হাত থেকে ছিনিয়ে নিয়েছে গেরুয়া শিবির। ফলে গেরুয়া সাংসদদের আত্মবিশ্বাস থাকবে তুঙ্গে। যা পরোক্ষে স্নায়ুর চাপ বাড়িয়ে দিতে পারে বিরোধীদের।
সন্দেহ নেই, এই চার রাজ্যের ফলাফলে যদি কংগ্রেস একটু ভাল করত বা নিদেনপক্ষে ২-২ হত, তা হলে সমগ্র বিরোধী শিবিরেরই মনোবল বেড়ে যেত। যেমনটা হয়েছিল গত এপ্রিলে কর্নাটকের বিধানসভা ভোটের ফলপ্রকাশের পর। বিজেপিকে সরিয়ে দক্ষিণের ওই রাজ্যে একার জোরে ক্ষমতা দখল করেছিল কংগ্রেস। এখন দেখার, তিন রাজ্যএ এই বিপুল জয়ের পরে বিজেপি মহুয়ার বিরুদ্ধে ‘আক্রমণ’ আরও জোরালো করে কি না। লোকসভা থেকে তাঁকে বহিষ্কারের সুপারিশ আগেই করেছে লোকসভার এথিক্স কমিটি। সোমবারেই সেটি প্রস্তাব আকারে লোকসভায় পেশ করার কথা স্পিকারের। সংখ্যাধিক্যের জোরে সে প্রস্তাব যে পাস হয়ে যাবে, তা সকলেই জানেন। তেমন হলে সোমবারই এই লোকসভায় হবে মহুয়ার শেষ দিন।
বিজেপি যে এই রাস্তায় হাঁটবে, তা এথিক্স কমিটির তদন্তের পরেই স্পষ্ট হয়েছে। কিন্তু রবিবার তিনটি রাজ্যে জয়ের পরে তারা সেই বিষয়টিকে ফৌজদারি আদালত পর্যন্ত নিয়ে যাবে কি না বা মহুয়ার বিরুদ্ধে সিবিআই তদন্ত শুরু করাবে কি না, সেটিও দেখার। বিজেপির একটি সূত্রের খবর, তিন রাজ্যে বিধানসভা ভোটে জয়ের পরে কেন্দ্রের শাসকদল মহুয়ার বিরুদ্ধে ‘অল আউট’ রাজনৈতিক আক্রমণে যাবে। যে সূত্রে মনে করা হচ্ছে, এর পরে তৃণমূলের সাংসদের বিরুদ্ধে বিজেপি লোকসভার বাইরেও ফৌজদারি পরিসরে ‘সক্রিয়’ হবে। তারা চেষ্টা করবে মহুয়াকে নির্বাচনী ময়দান থেকে দূরে রাখতে। তবে মহুয়ার ঘনিষ্ঠ এবং হিতৈষীদের বক্তব্য, মহুয়াকে ভোটে লড়া থেকে বিরত করা যাবে না। ফৌজদারি আদালতে মামলা করলেও লোকসভা ভোটের আগে সে মামলার ফয়সালা হওয়া কার্যত অসম্ভব।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy