হাওড়ার পরে কলকাতার দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ টার্মিনাল হিসেবে শিয়ালদহ থেকে বন্দে ভারত এক্সপ্রেস চালানোর প্রস্তুতি শুরু করেছে পূর্ব রেল। সে জন্য একাধিক পরিকাঠামোগত প্রস্তুতির পর্ব গত কয়েক মাস ধরে চলছে। পয়েন্ট, সেতু, সিগন্যালিং ব্যবস্থার সংস্কারের পাশাপাশি আধুনিক ট্রেন রক্ষণাবেক্ষণের উপযোগী কোচিং ডিপো তৈরি রাখার কথাও রেলকে ভাবতে হচ্ছে। দীর্ঘ মেয়াদে চেয়ারকার এবং স্লিপার, দু’ধরনের বন্দে ভারত এক্সপ্রেস ট্রেনের রক্ষণাবেক্ষণের পাকাপোক্ত ব্যবস্থা করতে তাই কলকাতা স্টেশন সংলগ্ন টার্মিনাল লাগোয়া কাশীপুরে একটি আধুনিক কোচিং ডিপো তৈরির পরিকল্পনা করেছে রেল।
সপ্তাহ তিনেক আগে ওই এলাকা পরিদর্শন করেন পূর্ব রেলের জেনারেল ম্যানেজার মিলিন্দ কুমার দেউস্কর-সহ রেলের অন্য কর্তারা। হাওড়ার ঝিল সাইডিংয়ের ধাঁচে প্রায় ২৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রস্তাবিত ওই ডিপোর জন্য প্রয়োজনীয় বরাদ্দ চলতি বাজেটে মিলে যাওয়ার ব্যাপারে রেলকর্তারা বিশেষ ভাবে আশাবাদী। এ প্রসঙ্গে শিয়ালদহ ডিভিশনের এক শীর্ষ আধিকারিক বলেন, ‘‘বরাদ্দ পাওয়ার বিষয়ে আমরা খুবই আশাবাদী। বরাদ্দ এলে আগামী ২ বছরের মধ্যে ওই কাজ সম্পূর্ণ হবে।’’
তবে বন্দে ভারতের জন্য নির্দিষ্ট কোচিং ডিপো তৈরি হওয়ার আগেই কলকাতা এবং শিয়ালদহে ২৪ কোচের যে কোনও ট্রেন রক্ষণাবেক্ষণের যাবতীয় ব্যবস্থা রেল মাসখানেক আগেই সেরে ফেলেছে বলে জানিয়েছেন ডিভিশনাল রেলওয়ে ম্যানেজার দীপক নিগম। সম্প্রতি শিয়ালদহ থেকে ডানকুনি শাখায় রেল লাইন এবং একাধিক গুরুত্বপূর্ণ সেতুর মেরামতিও সম্পূর্ণ হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
আপাতত, ওই সব মজুত পরিকাঠামোর উপর ভিত্তি করেই শিয়ালদহ থেকে বন্দে ভারত এক্সপ্রেস চালানোর দাবিতে ঝাঁপাবে রেল। কর্তাদের দাবি, যাত্রীদের চাহিদার দিকে নজর রেখে শিয়ালদহ থেকে নিউ জলপাইগুড়ি পর্যন্ত দিনের বেলা চেয়ারকার অথবা রাতে স্লিপার বন্দে ভারত এক্সপ্রেস চলতে পারে। ওই রুটে টিকিটের প্রভূত চাহিদা রয়েছে। দু’ক্ষেত্রেই অন্তত ১৬ কোচের ট্রেন চালাতে চায় শিয়ালদহ ডিভিশন। এ প্রসঙ্গে এক রেল কর্তা বলেন, ‘‘কবে কোন রুটে নতুন বন্দে ভারত ট্রেন দেওয়া হবে, এটা সম্পূর্ণ ভাবে রেল বোর্ডের সিদ্ধান্ত। তবে আমাদের দিক থেকে যাবতীয় প্রস্তুতি সারা হচ্ছে।’’
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)